নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান বলেন, আমি সবসময় সত্য বলার চেষ্টা করি, মিথ্যা বলি না। ফতুল্লা পাইলট স্কুলে ও এই এলাকায় যা যা করা দরকার আমরা করার চেষ্টা করবো। আমি মাদক, চাদাঁবাজ, ইভটিজিং, ভুমিদস্যুমুক্ত একটি ফতুল্লা চাই। ফতুল্লা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়কে কলেজ করার যে প্রস্তাবনা দেয়া হইসে সেটা আমি সরকারের কাছে আবেদন করবো।
রোববার (১৯ মার্চ) বিকেলে ফতুল্লা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের নতুন ভবন উদ্বোধন ও পুরষ্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় কলেজের নামের বিষয়ে শামীম ওসমান বলেন, আমি কোথাও কোন কথা দেই না। অনেকে আমার নামে এই কলেজের নামকরণ করার কথা আমাকে জানিয়েছেন। তবে না, আমার নামে এই কলেজটা হবে না।
আমি চাইবো এই কলেজের নামটা আমাদের বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী ভাইয়ের নামে হোক। কারণ ওনারা যেটা দিয়ে গেছেন আমাদের সেই তুলনায় কিছুই নাই দেয়ার মতো, কারণ তারা আমাদের স্বাধীন দেশ দিয়েছেন।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য তিনি বলেন, জীবনটা একটা যুদ্ধ। তোমরা যদি মনে কর কোনো রকম কিছু একটা করে ফেলবা তবে তোমরা ভুল করছো। আমি বলছি না তোমাদের প্রথম হতে হবে। আমি বলছি তোমাদের ভাল মানুষ হতে হবে, সোনার মানুষ হতে হবে। সোনার বাংলাদেশ গড়তে হলে সোনার মানুষ চাই।
শামীম ওসমান বলেন, আমি কাল নাও থাকতে পারি। যেকোনো সময় চলে যেতে পারি। আমরা অনেক টাকা দেখেছি অনেক অভাব দেখেছি। টাকার পাহাড়ের ওপর শুয়েছি। আবার এক বেলা ভাত খেয়েছি এক বেলা খাইনি। আমার বড় ভাই সেলিম ওসমান বায়তুল মোকাররমের সামনে মুরগি বেঁচতেন।
আমাদের জন্য এক টাকাও রেখে যাননি। আমাদের একমাত্র বাড়িটি নিলামে উঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। শ্রমিকরা চাঁদা দিয়ে আমাদের বাড়ি ছাড়িয়ে দিয়েছিলেন। সেদিন আমার বাবা এসে বলেছিলেন এখন থেকে তোমরা আমার বাড়িতে না শ্রমিকদের বাড়িতে বড় হচ্ছ। সবসময় তাদের পক্ষে কথা বলবে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা মানে উন্নত বাংলাদেশ। আমাদের শৈশব কেড়ে নেওয়া হয়েছিল বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে। তার কিছু হলে এ দেশ এমন পর্যায়ে চলে যাবে যেখান থেকে উঠে আসা কঠিন হয়ে যাবে। আপনারা তার জন্য দোয়া করবেন। বঙ্গবন্ধু কন্যা মানেই আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যত। আমাদের মাথা উচু করে দাড়ানোর প্রেরণা।
তিনি আরও বলেন, ১৪ আগস্ট রাতে আমার বড় ভাই প্রয়াত নাসিম ওসমানের বিয়ে হয়েছিল। এর পরদিন রাতেই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হল। আমার মা তার সমস্ত গহনা তুলে দিয়েছিল বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য। আমার বাবা পাগলের মত ছোটাছুটি করছিলেন কিছু করার জন্য।
নারায়ণগঞ্জ থেকে কিছু অস্ত্র যোগাড় করেছিলেন। আমি নিজেকে ভগ্যবান মনে করি, কারণ আমি এমন বাবা-মায়ের ঘরে জন্মগ্রহণ করেছি। যখন কথা বলি সত্য বলার চেষ্টা করি। মিথ্যা বলি না।
নারায়ণগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলীর সভাপতিত্বে এসময় জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চন্দন শীল, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রিফাত ফেরদৌস, নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি খালেদ হায়দার খান কাজল ও উপজেলা ভাইস চেয়ানম্যান ফাতেমা মনির প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।