র্যাব-১১ কর্তৃক ধৃত বন্দরে অটো চালক মাছুম হাওলাদার হত্যারমূল পরিকল্পনাকারি সালাউদ্দিন ওরফে সানি (৩৮)কে ১ দিনের রিমান্ডে এনে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতে প্রেরণ করেছে পুলিশ। গত শুক্রবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে গ্রেপ্তারকৃত ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে আদালতে প্রেরণ করলে বিজ্ঞ আদালত গ্রেপ্তারকৃত আসামীকে জ্ঞিাসাবাদের জন্য ১ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মামলার তদন্তকারি কর্মর্র্তা বন্দর থানার উপ-পরিদর্শক মেরাজুল র্যাব-১১ কর্তৃক ধৃত সারঅউদ্দিন ওরফে সানিকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করে শনিবা দুপুরে তাকে ফের আদালতে প্রেরণ করে। গ্রেপ্তারকৃত সালাউদ্দিন ওরফে সনি বন্দর থানার কুমারপাড়া এলাকার সিদ্দিক মিয়ার ছেলে।
বিভিন্ন তথ্য সূত্রে জানা গেছে, র্যাব-১১ গত বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শহরের ডিআইটি মসজিদ এলাকায় অভিযান চালিয়ে দীর্ঘ ১ মাস ৭ দিন অতিবাহিত হওয়ার পর অবশেষে বন্দরে অটো চালক মাছুম হাওলাদার হত্যাকান্ডের রহস্য উদগাটনসহ হত্যাকান্ডের মূল পরিকল্পনাকারি সালাউদ্দিন ওরফে সনি (৩৮)কে গ্রেপ্তার করে।
বৃহস্পতিবার র্যাব-১১ সিপিসি-১ নারায়ণগঞ্জ ক্যাম্প এর কোম্পানী কমান্ডার উপ-পরিচালক স্কোয়াড্রন লীডার একেএম মুনিরুল আলম এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান, র্যাব প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধের উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেপ্তার, অপরাধ দমন ও আইন শৃঙ্খলার সামগ্রিক উন্নয়নে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
তাছাড়া যে কোন চাঞ্চল্যকর মামলা রহস্য উদঘাটনের জন্য র্যাব ছায়া তদন্ত করে আসছে। গত ৫ নভেম্বর বন্দর থানার খানবাড়ী মোড় এলাকা হতে অটোচালক মাসুম হাওলাদার নিখোঁজ হয়। নিখোঁজের দুই দিন পর ৭ নভেম্বর বন্দর উপজেলার কুশিয়ারা এলাকা হতে অটো চালকের মৃতদেহ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় নিহত অটো চালকের স্ত্রী শিরিন বেগম বাদী হয়ে বন্দর থানায় অজ্ঞাত আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।
এ ঘটনায় স্থানীয় ও জাতীয় বিভিন্ন গনমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে যা এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। উল্লেখিত বিষয়য়েপ্রয়োজনীয় তথ্যাদি সংগ্রহসহ উক্ত হত্যা মামলার অজ্ঞাত নামা আসামীদের গ্রেপ্তারের জন্য গত ১৪ ডিসেম্বর বুধবার রাতে র্যাব-১১ সিপিএসসি ও সিপিসি-১ কোম্পানীর যৌথ অভিযানে মূল পরিকল্পনাকারী সালাউদ্দিন ওরফে সানীকে শহরের ডিআইট মসজিদের সামনে থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাব-১১ আরো জানায়, প্রাথমিক অনুসন্ধান ও গ্রেপ্তারকৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, নিহত মাছুম পেশায় একজন অটোচালক। তার স্ত্রী ধৃত আসামীর হোশিয়ারীতে কাপড় প্রসেসিং এর কাজ নেয় মাস কয়েক পূর্বে। কাজের সুবাদে সনির সাথে মাছুমের স্ত্রী পরিচয় হয়। এবং অল্প কিছু সময়ের মধ্যে প্রণয়ের সম্পর্ক গড়ে উঠে। তাদের সম্পর্ক মাস তিনেক যেতেই বিষয়টি জানাজানি হয।
পরবর্তিতে মাছুম তার স্ত্রীকে কাজে যেত নিষেধ করেন। এবং এ নিয়ে মাছুম ও তার স্ত্রী মধ্যে অশান্তির সৃষ্টি হয়। সনির হুসিয়ারিতে মাছুমের স্ত্রী শিরিনা বেগম কাজ বন্ধ করে দিলে সনি মাছুমের প্রতি ক্ষিপ্ত হয় এবং মাছুমকে নানা ভাবে প্রান নাশের হুমকি দিয়ে আসছিল। এক পর্যায়ে সনি মাছুমকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে এবং সে কাজে তার অপর সহযোগী রানাকে কাজে লাগায়। পেশায় রানাও একজন অটোচালক।
নিখোঁজের দিন রানা মাছুমকে ঘটনাস্থলে ডেকে নিয়ে যায়। মাছুম নিখোঁজ হওয়ার পর থেকেই রানা ও সনি মোবাইল ফোনে ঘন ঘন যোগাযোগ রক্ষা করছিল এবং যে দিন লাশ পাওয়া যায় সেদিন রানা ও সনি একসাথে আত্মগোপনে চলে যায়এবং তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সালাউদ্দিন ওরফে সনি উক্ত হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করেছে। উক্ত আসামীকে বন্দর থানা মঅটোচালক মাছুম হাওলাদার হত্যা মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তার নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। সে সাথে হত্যাকান্ডের জড়িতদের গ্রেপ্তারের জন্য র্যাব-১১ নারায়ণগঞ্জে তৎপর রয়েছে।
