মাদক ব্যবসায়ী, মাদকসেবী, জুয়ারীসহ নানা শ্রেনীর অপরাধ আর অপরাধীদের নিরাপদস্থল হয়ে উঠেছে ফতুল্লা থানার পাগলা এলাকায় অবস্থিত বন্ধ হয়ে যাওয়া পপুলার স্টুডিও বস্তি।
তথ্য মতে,নারায়ণগঞ্জ শহর ও শহরতলীর আশপাশের মধ্যে উচ্ছেদকৃত চানমারী বস্তিকে বলা হতো মাদকের সবচয়ে বড় স্পট। সেই চাঁনমারী বস্তিকে ছাড়িয়ে গেছে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার পাগলায় অবস্থিত বন্ধ হয়ে যাওয়া পপুলার স্টুডিও এলাকা।
একদা (৭০ থেকে ৯০ দশক পর্যন্ত) এখানে চলচিত্রের নায়ক- নায়িকা, অভিনেতা-অভিনেত্রীদের পদচারনায় মুখর থাকতো। সেখানে বর্তমানে দেখা মিলে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মাদক সেবীদের অতিমাত্রায় আনাগেনা। মাদকের এই বিশাল বাজারে এখানে, হাত বাড়ালেই মিলছে মরণ নেশা হেরোইন, ইয়াবা, ফেন্সিডিলসহ সকল ধরনের মাদক।
ফতুল্লা থানার পাগলা-কুতুবপুরের বিশাল মাদক বাজারের মাদকের চাহিদা পরিত্যাক্ত পপুলার স্টুডিও থেকে সরবরাহের মাধ্যমে মাদক চাহিদা পূরন করা হয়ে থাকে বলে জানা যায়।
তথ্য অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে এই মাদকের হাট বসিয়েছে শাহআলম নামে এক শীর্ষ মাদক ব্যাবসায়ী। শাহআলম সারাদিন ঢাকায় থাকলেও সন্ধ্যায় পপুলার স্টুডিওতে এসে হিসেব নেন সেলসম্যানদের কাছ থেকে।
সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত নিজের হাতেই বিভিন্ন এলাকার মাদক বিক্রেতাদের নিকট মাদক সরবরাহ করে থাকেন শাহআলম।
স্টুডিও এলাকায় শতাধিক বস্তি ঘর রয়েছে, এর বেশির ভাগই ব্যাবহার হয় মাদক বিক্রি ও সেবনে। মাদক বিক্রির রমরমা টাকায় চলে জুয়া খেলা।
শাহআলমের ৩০-৪০ জনেরও বেশি সেলসম্যান রয়েছে, যারা কমিশনে শাহআলমের মাদক বিক্রি করছে। পাগলা বাজারের প্রবেশ পথ থেকেই বিক্রি হয় ইয়াবা, হেরোইন, হান্ড্রেড, গাঁজা, চোলাইমদসহ নানা মাদক।
সিনেমা হলের সামনে থাকে আরেক সেলসম্যান, পপুলার স্টুডিওর প্রবেশ দ্বারেই থাকে আরও দুইজন।
প্রভাবশালী এই মাদক বিক্রেতা স্টুডিও এলাকায় গড়ে তুলেছে এক বিশাল সিন্ডিকেট। যারা নিয়মিতই শাহআলমের কাছ থেকে মাদক নিয়ে সেবন করে এবং সর্বক্ষন পাহাড়া দিয়ে থাকে।
প্রতিদিন লক্ষ-লক্ষ টাকার মাদক বিক্রি হচ্ছে এই মাদক স্পটটিতে, মাদকের এক স্বর্গরাজ্যে পরিনত হয়েছে পাগলা এলাকা। শুধুমাত্র মাদকেই সীমাবদ্ধ নয় শাহআলম সিন্ডিকেটের সদস্যরা এলাকায় চুরি-ছিনতাই এর মতো ভয়ানক ঘটনার জন্ম দিচ্ছে প্রতিনিয়ত।
ফতুল্লা মডেল থানা থেকে ১০ মিনিটের পথ হলেও প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে,প্রকাশ্যে চলছে মাদক বিক্রি। পপুলার স্টুডিও ছাড়া ও শাহআলমের নিয়ন্ত্রণে পাগলা ঘাট এলাকায় বর্তমানে ইয়াবা ও ফেন্সিডিল বিক্রি করছে ঘাট রুবেল ও তার সেলসম্যানরা।
এছাড়া শাহআলমের হয়ে পাগলা তালতলা এলাকার কাউসার ও তার ডান হাত খ্যাত শাহিন নিয়ন্ত্রণ করছে মাদক বাজার।