নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

রোববার,

০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বিশ্বের সর্ববৃহৎ প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্থান করে নিতে যাচ্ছে

সিদ্ধিরগঞ্জে ৪০০ বেডের নবজাতক হাসপাতাল 

প্রকাশিত:০২:৫৭, ১ আগস্ট ২০২২

সিদ্ধিরগঞ্জে ৪০০ বেডের নবজাতক হাসপাতাল 

অসহায় সুবিধা বঞ্চিত ছিন্নমূল শিশুদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের সাহেবপাড়া সাইনবোর্ড মোড়ে এই প্রথম ৪০০ (চার শত) বেডের সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এনআইসিও ও আইসিও সুবিধা সম্বলিত বাংলাদেশ নবজাতক হাসপাতাল লি: কার্যক্রম শুরু করেছে। যা বিশ্বের মধ্যে সর্ববৃহৎ প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্থান করে নিতে যাচ্ছে। 


শিশু, কিশোর ও নবজাতক বিশেষজ্ঞ ডা: মো: মুজিবুর রহমান (মুজিব) এর সফল প্রচেষ্টা ও বাংলাদেশ মাদরলেস নিওবোন ফাউন্ডেশন কর্তৃক পরিচালিত এই হাসপাতালটি ইতিমধ্যে ৫০টি এনআইসিও বেড, ১৫টি গাইনী বেড প্রস্তুতের মাধ্যমে ৮জন বিশেষজ্ঞ কনসালটেন্টের সার্বিক তত্ত্বাবধানে প্রাথমিক ভাবে সেবা দিয়ে যাচ্ছে। 


৪৫ জন স্টাফ সার্বক্ষনিক সেবাদানের লক্ষ্যে নিয়োজিত রয়েছেন। এছাড়া আগষ্টের প্রথমদিকে আইসিও সুবিধা যুক্ত করতে যাচ্ছে এই আধুনিক সুবিধা সংবলিত এই বিশেষায়িত হাসপাতালটি। 


হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, প্রতিষ্ঠানটি ৪০০ (চার শত) বেডে রূপান্তর করতে ইতিমধ্যে কাজ চলমান রয়েছে। হাসপাতালটির সম্পূর্ণ নির্মাণ কাজ বাস্তায়ন হওয়ার পর স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী ও উচ্চ পদস্ত কর্মকর্তাসহ দেশী-বিদেশী বিশেজ্ঞ চিকিৎসক ও কুটনীতিকদের অংশগ্রহনের মধ্য দিয়ে শুভ উদ্বোধন করা হবে। 


সরকারী অনুমোদনের জন্য ইতিমধ্যে যাবতীয় প্রদক্ষেপ গ্রহন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে আমেরিকাসহ বিশ্বের কয়েকটি দেশের প্রতিনিধি দল এই বিশেষায়িত হাসপাতলটি পর্যবেক্ষন করে প্রশংসা করেছেন। 


ব্যবসা নয় সেবার মানসিকতা নিয়েই এই মহৎ উদ্যোগটি হাতে নেয়া হয়েছে। যার মাধ্যমে দেশের সুবিধা বঞ্চিত বৃহৎ জনগোষ্ঠী এই হাসপাতালের সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারবেন।   


হাসপাতালটির উদ্যোক্তা ডা: মো. মুজিবুর রহমান (মুজিব) জানান, ব্যবসা নয়, সেবার মানসিকতা নিয়েই আমার ক্ষুদ্র প্রয়াস। দীর্ঘ চিকিৎসা পেশায় এটুকু বুঝতে পেরেছি যে, অর্থ-সম্পদই সব কিছু নয়। মানুষের জন্য ভাল কিছু করে যাওয়ার মধ্যেই মানুষের মাঝে বেঁচে থাকা যায়। 


আমি গত দুই বছরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের রাস্তা-ঘাট ও ডাস্টবিন থেকে কুড়িয়ে ৪১টি নবজাতক শিশুকে সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিয়ে চিকিৎসা সেবা থেকে শুরু করে সকল দায়িত্ব নিয়েছি। তখন থেকেই অসহায় শিশুদের জন্য কিছু করার স্বপ্ন আমার মাথায় আসে।


তিনি বলেন, এসব ফেলে দেয়া শিশুদের মায়ের কোলের জন্য যে আহাজারী দেখেছি সত্যিই আমি বিমুহিত হয়েছি। তাদেরকে হয়ত আশ্রয় দেয়া যায় কিন্তু মায়ের বুকের দুধের অভাবে অনেক শিশু মারা যায়।


এ বিষয়টিকে মাথায় রেখে আমি মাতৃ দুগ্ধ ব্যাংক প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেই। নানা চড়াই-উৎরাই পারি দিয়ে তা বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হই। সবশেষ আমি এই অসহায় শিশুদের চিকিসা সেবা প্রদানের লক্ষ্যে আমার প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ মাদারলেস নিওবোন ফাউন্ডেশনের পৃষ্ঠপোষকতায় একটি নবজাতক হাসপাতাল করার উদ্যোগ গ্রহণ করি। যা বর্তমানে বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে।


মানবিক এই চিকিৎসক জানান, সারাদেশে প্রতিদিন গড়ে দুই থেকে আড়াইহাজার এনআইসিও ও আইসিও প্রত্যাশী রোগী আসে। সেই তুলনায় আমাদের দেশের সরকারী-বেসরকারী কোন হাসপাতালই এত বিপুল সংখ্যক রোগীর চাহিদা পূরণ করতে পারে না। 


যেখানে বারডেম হাসপাতালে এনআইসিওর জন্য প্রতিদিন খরচ হয় সাড়ে ৬ হাজার থেকে ৮ হাজার টাকা। অন্যান্য হাসপাতালে আরো বেশী। যা সাধারণ গরীব পরিবারের জন্য খুবই দু:সাধ্য হয়ে দাড়ায়। এসব মানুষকে সহজে এই সেবা প্রদানের জন্যই আমার এই ক্ষুদ্র প্রয়াস। 


আমার হাসপাতালটি পূর্ণাঙ্গ চালু হলে ২৫টি ফ্রি বেড বরাদ্ধ থাকবে অসহায় মানুষের জন্য। বর্তমানে ৫টি বেড আমরা বরাদ্ধ রাখার ব্যবস্থ করছি।


তিনি আরো জানান,এতবড় প্রতিষ্ঠান আমাদের দেশ তো দূরের কথা পৃথিবীর কোন দেশে নেই। এই প্রতিষ্ঠানটি পূর্ণাঙ্গ চালু হওয়ার আগেই স্বার্থান্বেসী মহল আমার ও আমার প্রতিষ্ঠানের অপ-প্রচার চালাচ্ছে।

 

এদেশের সাধারণ মানুষের ভালবাসা ও আন্তরিক সহযোগিতায় এই প্রতিষ্ঠানটি মানবিক সেবায় এগিয়ে যাবে এটি আমার প্রত্যাশা।