সিদ্ধিরগঞ্জের ধনুহাজীরোড এলাকায় ৮ম শ্রেণীর এক ছাত্রী (১৩)কে বিয়ে না দেয়ায় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের বিরুদ্ধে ওই ছাত্রীর মায়ের উপর হামলা চালানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমনকি জোরপূর্বক ওই ছাত্রীকে বিয়ের জন্য চাপ সৃষ্টি করছে রাহাতের নেতৃত্ব্ কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা।
এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের করলেও ওই ছাত্রীর পরিবার কোন সুফল পায়নি। ওই কিশোর গ্যাংয়ের সদসরা এখন ওই ছাত্রীর পরিবারকে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছে। হুমকি দেয়ার ঘটনায় বুধবার (২২ জুন) সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করা হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ওই ছাত্রী সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি পাইনাদী রেকমত আলী উচ্চ বিদ্যালয়ে ৮ম শ্রেণীতে অধ্যায়ণরত। স্কুলে আসা-যাওয়ার সময় ওই এলাকার কিশেরাগ্যাংয়ের হোতা রাহাত (২২) ওই ছাত্রীকে আসা-যাওয়ার পথে প্রায়ই সময় উত্ত্যক্ত করে আসছিল।
এক পর্যায়ে গত ১৫ জুন তার স্বজনদের নিয়ে মেয়েদের বাড়িতে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যায় রাহাত। কিন্তু ঐ স্কুলছাত্রীর মা তার মেয়ে উপযুক্ত (বিয়ের বয়স) না হওয়ায় বিয়ে দিতে অপারাগতা প্রকাশ করেন। এ সময় জোরপূর্বক স্কুলছাত্রীকে বাড়ি থেকে টেনে হেঁচড়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে কিশোরগ্যাংয়ের হোতা রাহাত ও তার স্বজনরা।
এসময় স্কুল ছাত্রীর মা তাদের থেকে মেয়েকে রক্ষা করার চেষ্টা করলে তাকে উপর্যুপরী মারধর করে রাহাত ও তার সাথে আসা কিশোরগ্যাংয়ের অন্যান্য সদস্য ও তার স্বজনরা। এসময় মা-মেয়ের চিৎকার চেঁচামেচিতে আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে আসলে কিশোরগ্যাং সদস্যরা দৌড়ে পালিয়ে যায়।
এ ঘটনায় ওই স্কুলছাত্রীর মা বাদী হয়ে গত ১৫ জুন সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ অভিযোগের তদন্ত আসলে এতে আরো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে রাহাত ও তার সহযোগীরা। এক পর্যায়ে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা মোটর সাইকেল নিয়ে ওই ছাত্রীর বাড়িতে গিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। এমনকি হত্যার হুমকিও দেয়া তারা।
ওই ছাত্রীর মা এ হুমকির বিষয়ে বুধবার জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় জিডি (নং-১০৪৬) করেন। তিনি জানান, ঐ ছেলের কারণে তার মেয়ে গত ১৫ জুন থেকে অদ্যাবধি স্কুলে যেতে পারছে না। বাড়ির সামনে মোটরসাইকেলসহ দলবদ্ধ নিয়ে তারা মহড়া দিচ্ছে।
দাখিলকৃত অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) বিল্লাল হোসেন জানান, স্কুলছাত্রীর সঙ্গে ঐ ছেলের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ছাত্রীর বয়স কম হওয়ায় মেয়ের মা বিয়ে দিয়ে অস্বীকৃতি জানায়। এ বিষয়ে তদন্ত করতে গিয়েছিলাম। এ বিষয়ে ডিস্টার্ব না করতে বলে এসেছি। এখন যদি আবার ডিস্টার্ব করে তবে উভয় পক্ষকে ডেকে এনে বিষয়টি সমাধান করে দেয়া হবে।
অভিযুক্ত রাহাত জানায়, স্কুলছাত্রীর বয়স ১৩ নয়। তার বয়স ১৫ উল্লেখ করে তিনি জানান, আমি তাকে (স্কুল ছাত্রী) পছন্দ করি। বিয়ে করতে আমার মা (শাহনাজ) ও মামাকে (হাশেম) নিয়ে তাদের বাসায় গেলে তার মা (স্কুল ছাত্রীর) আমাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে।
এ ব্যাপারে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মশিউর রহমান জানান, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।