সিদ্ধিরগঞ্জের রসুলবাগ এলাকায় অননুমোদিত অবৈধ মেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কোহিনুর আক্তার বন্ধ করে দেয়ার পর আবারও চালু করেছে মেলা কর্তৃপক্ষ। এমন সংবাদে সদর ইউএনও এর নির্দেশে মঙ্গলবার (২৪ মে) ফের মেলা বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ।
এ সময় মেলা এলাকা থেকে ৪ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। আটককৃতরা হলো- ইউছুফ আলী (৫০), কালাম (২৭), রিয়াদ (২৬)। তবে এ মেলার আয়োজক পলাশ ও মানিক রয়েছে অধরা।
এদিকে পুলিশ এ মেলা বন্ধ করতে গেলে স্থানীয়দের বলতে দেখা যায়, এরআগে একবার ম্যাজিস্টেট নিজে উপস্থিত থেকে মেলা বন্ধ করলেও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের অদৃশ্য ইশারায় মেলাটি আবার চালু হয়।
প্রতিদিন টহল পুলিশ মেলায় আসতো। আয়োজকদের সাথে খোশগল্প করে চলে যেত। মেলায় সন্ধ্যা হলেই মাদক সেবীদের আড্ডা জমে উঠেছে। মেলার পাশ দিয়ে বাড়ী ফেরা গার্মেন্ট এর নারী শ্রমিকরা ইভটিজিং এর শিকার হতো।
এলাকাবাসীর দাবি আবাসিক এলাকায় যেন আর এ মেলা না বসতে পারে যথাযথ কর্তৃপক্ষের এ বিষয়ে নজরদারী রাখার।
মেলার ঘটনাস্থলে যাওয়া সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হুমায়ুন জানান, মেলা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। চারজনকে আটক করে নিয়ে এসেছি। এবিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা পক্রিয়াধীন।
জানা গেছে, নাসিক ৩ নং ওয়ার্ডের রসুলবাগ আদর্শনগর এলাকায় মানিক নামে এক ব্যক্তি স্থানীয় প্রভাবশালী মহলকে হাত করে জেলা প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই মেলা বসায়। গত শনিবার থেকে শুরু হয় মেলা।
সোমবার রাত ৮ টার দিকে তুচ্ছ বিষয় নিয়ে মেলার শেল্টার দাতা স্থানীয় সন্ত্রাসীরা ওই এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে সুজনকে (২২) মারধর ও কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। এঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ হলেও পুলিশ সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যাবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ জানায় আহত সুজনের মা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বিনোদনের নামে মেলা বসানো হলেও মূলত মাদক ও সন্ধ্যার পড়ে চালানো হত জুয়ার আসর। মাইকে উচ্চস্বরে বাজানো হত অশ্লীল গানবাজনা। কিশোরগ্যাং সদস্য ও বখাটেদের উপদ্রুপে বিব্রত অবস্থায় পড়তে হত মেলায় আগত নারীদের।
মেলার বিষয়ে স্থানীয় একাধিক পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হলেও নিরব ছিল সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ। সংবাদ প্রকাশের পর মেলার সর্দার মানিক দাম্ভিকতার সাথে বলে বেড়ায় পুলিশ ঠিক থাকলে পত্রিকায় লিখলে কিছু হয়না।
এরপর সহকারী কমিশনার (ভূমি) নির্বাহী ম্যাজিস্টেট কোহিনুর আক্তারের আদলাত বুধবার (১৮ মে) বিকেল ৫ টায় জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা ও থানা পুলিশের সহায়তায় অভিযান চালিয়ে মেলাটি ভেঙ্গে দেয়।
এসময় ম্যাজিস্টেট দেখে পালিয়ে যায় মেলার আয়োজক ও সর্দার মানিক। মেলা ভেঙ্গে দেওয়ায় জেলা প্রশাসন ও ম্যাজিস্ট্রেটকে সাধুবাদ জানায় স্থানীয়রা।