নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

বুধবার,

২৬ মার্চ ২০২৫

মোহাম্মদ আলীর দু:খ প্রকাশ

নারায়ণগঞ্জ টাইমস

প্রকাশিত:২৩:০৪, ২৫ মার্চ ২০২৫

মোহাম্মদ আলীর দু:খ প্রকাশ

গত সোমবার জেলা পরিষদ আয়োজিত জেলার মুক্তিযোদ্ধাদের ঈদ উপলক্ষে সম্মানী ও ঈদ সামগ্রী দেয়ার আয়োজন করা হয়। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে উৎসব মুখর পরিবেশে সম্মানী দেয়ার সময় নারায়ণগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা জেলা কমান্ডার মো. আলী বক্তব্য শেষে জয়বাংলা বলে ফেলেন।

মো. আলীর মুখে জয়বাংলা শোনার পর মিডিয়া ও মহানগর বিএনপির সদস্য সচীব আবু আল ইউসুফ খান টিপুর নেতৃত্বে গতকাল জেলা প্রশাসক কার্যালয় প্রাঙ্গনে সভা সমাবেশ হয়। ওই সমাবেশে বিএনপির অনেকেই বক্তব্য রাখে।

বক্তব্য রাখতে গিয়ে টিপু বলেন, আজ যে শিল্পকলা একাডেমীতে মুক্তিযোদ্ধাদের অনুষ্ঠান হবে ঐ অনুষ্ঠানে মো. আলী আসলে তাকে প্রতিরোধ করা হবে।

মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী অনুষ্ঠানে জয় বাংলা বলা ও সংবাদ প্রকাশ এবং টিপুর বক্তব্যের প্রেক্ষিতে মো. আলী বলেন, আমি রনাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধা। কিশোর বয়সে জীবনের মায়া ত্যাগ করে ২৫ মার্চ নারায়ণগঞ্জকে পাক হানাদারদের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য প্রথমে পঞ্চবটীতে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলাম।

সেদিনই আমার মৃত্যু হতে পারতো। রনাঙ্গনে যতগুলি অপারেশনে জয়ী হয়েছি, জয়ী হওয়ার পর পরই জয়বাংলা স্লোগানে ঐ এলাকা মুখরিত করে তুলেছিলাম। সাবেক সরকারের আমলে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স করতে হবে, যেহেতু আমি জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার, মুক্তিযোদ্ধাদের ও কমপ্লেক্স করার স্বার্থে সাবেক সরকারের দায়ীত্ববান লোকদের সাথে আমাকে চলতে হয়েছে।

তবে কেউ বলতে পারবে না, সাবেক সরকারের শাসনামলে কারো সাথে রাস্তায় নেমেছে কিংবা আমার জন্য জাতীয়তাবাদী দলের কোন ক্ষতি হয়েছে। সাবেক সরকারের দোসররা তাদের দলে নেওয়ার জন্য আমাকে অফার দিয়েছিল। যদি তাদের কথায় রাজী হতাম তাহলে আমার মিল ফ্যাক্টরী সবই থাকতো। একটা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও আমার হাতছাড়া হতো না।

বিএনপির রাজনীতির সাথে যারা জড়িত তারা বুকে হাত দিয়ে বলুক ৯০ সালের পর থেকে আমি কি তাদের সাথে ছিলাম না? দলের যেকোন কল্যানে বা দুঃসময়ে আমি কি তাদের পাশে ছিলাম না? আমার বয়স হয়েছে, দুইবার স্ট্রোক করেছি, সবকিছু মনে রেখে কথা বলতে পারি না।

এখন আমার পড়ন্ত বেলা। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে মনের অজান্তে যেই কথাটা বলেছি, তা আমার অন্তরের কথা ছিলনা।  তারপরেও মনে করি কথাটা বলা আমার ঠিক হয়নি। আমার ঐ দিনের কথায় যদি কেউ কষ্ট পেয়ে থাকেন, তারজন্য আমি দুঃখ প্রকাশ করছি এবং ঐ দিনের কথার জন্য আমি নিজেই মর্মাহত।

ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার জন্য সকল জাতীয়তাবাদী শক্তি ও দেশবাসীর কাছে অনুরোধ করছি।মো. আলী আরো বলেন, ৯৬ সালে আওয়ামী লীগ একের পর এক হরতাল ও আন্দোলন করে যখন দেশকে অস্থিতিশীল করে তুলেছিল তখন জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ রাখার জন্য আওয়ামী লীগের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষ করে জাতীয়তাবাদী দলের ডাকে ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জ আসন থেকে মনোনয়ন নিয়ে বিএনপির সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলাম।

সেদিন জাতীয়তাবাদী দল আপনারাই ছিলেন আমার শক্তি ও সাহস। আগামী দিনেও আমি আপনাদের সাথে থাকার অঙ্গীকার করছি এবং আপনারাও আমার পাশে থাকবেন, এটাই প্রত্যাশা করছি।