মিথ্যা মামলা দিয়ে জমি দখলের চেষ্টার প্রতিবাদে আবু আল মোরছালীন বাবলার বিরুদ্ধে ঝাড়ু মিছিল ও মানববন্ধন করেছে শিবু মার্কেটস্থ পূর্ব লামাপাড়া এলাকার বাসিন্দারা।
শনিবার (২২ মার্চ) সকালে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন করেন তারা। মানববন্ধনের ব্যানারে মুরছালিন বাবলাকে “ভুমিদস্যু, চাঁদাবাজ, পল্টিবাজ ও টোকাই” বলে উল্লেখ করা হয়।
এছাড়া, একই অভিযোগে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও র্যাব-১১ এর কার্যালয়ে মোরছালিন বাবলার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ ও স্মারকলিপি প্রদান করেছে ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।
মানববন্ধনে ভুক্তভোগী নুরুন্নাহার বেগম বলেন, ২০০৩ সালে আমার স্বামী উজ্জল এই জায়গায় মৃত্যুবরণ করেছে, ২০০৪ সালে আমার মা’ও এই জায়গাতেই মারা গেছে।
২০০৯ সালে এই জমি দখলের উদ্দেশ্যে আমার আব্বু নুর মোহাম্মদের নামে বিভিন্ন ধরনের মিথ্যা মামলা দিয়েছে এবং তার পত্রিকায় বিভিন্ন মিথ্যা নিউজ করেছে আবু আল মোরছালীন বাবলা।
একইসাথে আমাদের জমিতে ভাংচুর চালিয়েছে সে। তার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে ২০১৭ সালে আমার আব্বুও মারা গেছেন।
মোরছালীন বাবলার নামে আমার বোন ও আমরা মামলা করেছি, বাবলা তার প্রভাব খাটিয়ে মামলাগুলোকে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছে।
আমরা আইনের কাছ থেকে কোনো বিচার পাই নাই। আমার ছেলে, ভাই মোজাফ্ফর কে মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেফতার করিয়েছে, মিথ্যা মামলা দিয়ে বারবার হয়রানী করছে বাবলা।
বাবলার নাম শুনলে কোনো জায়গা থেকে আমরা বিচার পাই না। প্রশাসনে কাছে আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই আমরা।
তার ভয়ে এলাকাবাসী কেউ স্বাক্ষী দেয় না, তার ভয়ে কেউ আমাদের পাশে দাড়ায় না। সে সকলকে ভয় দেখায়, যারা আমাদের পাশে দাড়াবে তাদেরকেই মিথ্যা মামলা দিবে। আমরা বাবলার বিচার চাই।
তিনি আরও বলেন, সন্ত্রাসী ফয়েজরে দিয়া বাবলা অনেক অকারেন্স করায়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে থানায় গেলে যাতে মামলা না নেয় সেজন্য বাবলা সাংবাদিকতার প্রভাব খাটায়।
প্রয়াত শীর্ষ সন্ত্রাসী রেকমত বাহিনীর অন্যতম সদস্য বাদশা, ফয়েজ, অস্ত্র হাতে গ্রেফতার হওয়া মামুন ও কিছুদিন আগে র্যাবের হাতে গ্রেফতার হওয়া শরীফ সহ সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে আমাদের প্রতিনিয়ত হুমকি দিচ্ছে।
তার হাত নাকি অনেক লম্বা, এই বলে সে আমাদের হুমকি দেয়, আমরা যুগের চিন্তার বাবলার বিচার চাই।
মানববন্ধনে ভুক্তভোগী নুরুন্নাহার, নুরবানু, উম্মে হানি, লাইলী, ফরিদা পারভীন, আসমা বেগমসহ ভুক্তভোগী নারী-পুরুষরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, একই অভিযোগে গত ১৮ মার্চ নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও ১৯ মার্চ পুলিশ সুপার এর কার্যালয়ে মোরছালিন বাবলার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ ও স্মারকলিপি প্রদান করেছে ভুক্তভোগী নারী নুর নাহার।
লিখিত অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, আবু-আল-মুরসালিন বাবলার সাথে আমাদের জমি সংক্রান্ত বিরোধ রয়েছে। বাবলার নির্দেশে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি লতিফের ছেলে ফয়েজ, ফয়েজের স্ত্রী নাজমা, ফয়েজের ছেলে ওয়ালী ও বারেকের ছেলে হইক্যা সহ অজ্ঞাত নামা ২০/২৫ জন পূর্ব লামাপাড়ায় গ্যারেজের ভিতরে আমার ছেলে হাসমত আলীকে এলোপাথারী ভাবে রিক্সার চেইন দিয়া পিটাইয়া রক্তাক্ত জখম করে।
পরে আমার ছেলে হাসমত ও সালেহ মাহমুদ এর বিরুদ্ধে মিথ্যা মারামারি মোকদ্দমা দায়ের করে। বিগত ১৫ মার্চ রাতে ১নং আসামী বাবলার নির্দেশে ২-৫নং বিবাদীগন আমার বাড়ীতে এসে আমাকে ও আমার পরিবারবর্গকে এই বলিয়া হুমকি প্রদান করেন যে, জমি ছাড়িয়া দে, নতুবা একজন কেও প্রাণে বাঁচতে দিবনা।
বিবাদীরা অত্যন্ত খারাপ প্রকৃতির লোক। তাদের পক্ষে সবই করা সম্ভব। এমতাবস্থায় আমি অত্যন্ত নিরূপায় হয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানাচ্ছি।
এদিকে, বাবলা সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০০৮ সালে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে আওয়ামীলীগের সন্ত্রাসীদের সাথে যুক্ত হয়ে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে যায় আবু আল মোরছালীন বাবলা।
এক সময় নুন আনতে পান্তা ফুরানো অবস্থায় জীবন যাপন করলেও আওয়ামীলীগের সন্ত্রাসীদের সাথে বিভিন্ন অপকর্মে জড়িয়ে, আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয় নি বাবলাকে।
বিগত ১৬ বছরে কোটি কোটি টাকার মালিক বনেছে সে।