
মামলার প্রত্যাহার, শ্রমিক ছাটাই বন্ধ ও লে-অফ ঘোষণা করা কারখানা খুলে দেয়াপর দাবিতে নারায়ণগঞ্জ-ঢাকা লিংক রোড সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন ইউরোটেক্স নিটওয়্যারের শ্রমিকরা। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টা থেকে ফতুল্লার লামাপাড়া এলাকায় তারা সড়ক অবরোধ করে। এতে করে ওই সড়কে অসংখ্যক যানবাহন আটকা পড়ে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। চরম র্দুভোগের শিকার হয় যাত্রী সাধারণ। পরে অতিরিক্ত পুলিশ ও বিজিবি গিয়ে শ্রমিকদের শান্ত করেন। এবং শ্রমিকরা অবরোধ তুলে নেয়।
শ্রমিক ও পুলিশ জানায়, সদর উপজেলার ফতুল্লার নয়ামাটি এলাকার রপ্তানিমুখী পোশাক কারখানা ইউরো টেক্স নিটওয়্যার লিমিটেডে প্রায় ৪ হাজার শ্রমিক কাজ করে। শ্রমিকেরা গত ১১ই ফেব্রুয়ারি এক মাসের বকেয়া বেতন, ভাতাসহ বিভিন্ন দাবিতে কারখানার ভেতরে বিক্ষোভ করে আসছিল। শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনায় কারখানায় ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় কারখানার কর্মকর্তা সাজেদুল ইসলাম বাদী হয়ে চাকরিচ্যুত ২৮ শ্রমিককে আসামী করে ফতুল্লা মডেল থানায় ভাংচুরের অভিযোগে মামলা দায়ের করে। এরপর থেকে কারখানার শ্রমিকেরা মামলা প্রত্যাহার ও ছাটাইকৃত শ্রমিকদের কাজে পুনর্বহালের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে মালিকপক্ষ কারখানা শ্রম আইনের ১৩/১ ধারা অনুযায়ী প্রতিষ্ঠিত লে-অফ ঘোষণা করে। এই ঘটনায় বিক্ষুদ্ধ শ্রমিকেরা মামলা প্রত্যাহার, শ্রমিক ছাটাই বন্ধ এবং লে-অফ ঘোষণা করা কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত নগরের চাষাঢ়ায় সড়ক অবরোধ করে। আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টায় পুনরায় নারায়ণগঞ্জ-ঢাকা লিংকরোড অবরোধ করে বিক্ষোভ করে।
ৎঅজুফা বেগম নামে এক শ্রমিক বলেন, কোনো কারণ ছাড়া শ্রমিকদের ছাঁটাই করে দিচ্ছে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু গত মাসের বেতনও দেয়নি। এতে আমরা কাজ বন্ধ করে দিলে হামলা চালায়। এতে আমি হাতে গুরুতর আঘাত পেয়েছি। আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
নারায়ণগঞ্জে পোশাক শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভজেলা গার্মেন্টস ও সুয়েটার শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সভাপতি এম এ শাহীন বলেন, মালিকপক্ষ ২৭ জন শ্রমিকের নামে মামলা দিয়ে পুলিশ দিয়ে হয়রানি করছে। এলাকার মাস্তানদের লেলিয়ে দিয়েছে। শ্রমিকদের দাবি, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে পুলিশ হয়রানি বন্ধ করতে হবে। সন্ত্রাসী দ্বারা ভয় ভীতি দেখানো বন্ধ করতে হবে।
এ বিষয়ে শিল্প পুলিশ-৪ পরিদর্শক (গোয়েন্দা) সেলিম বাদশা বলেন, পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা ছাঁটাই বন্ধসহ বিভিন্ন দাবিতে সড়ক অবরোধ করেছেন। তাদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে সমাধানের চেষ্টা চলছে।
জেলা কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর কর্মকর্তা রাজীব চন্দ্র ঘোষ বলেন, ৫ আগস্টের পর থেকে বিভিন্ন সময় ইউরোটেক্স নিটওয়্যারের শ্রমিকরা বিশৃঙ্খলা করে আসছিল। তাদের বিশৃঙ্খলার কারণে মালিকপক্ষ মামলা করে। মঙ্গলবার মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসা হয়েছিল। তখন মালিকপক্ষ জানায় আইনি প্রক্রিয়া অনুযায়ী মামলার কাজ চলবে। সেই সঙ্গে শ্রম আইনে ৯৫ জন শ্রমিককে ছাটাই করবেন।