নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

সোমবার,

০৬ জানুয়ারি ২০২৫

অপপ্রচার নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, নারায়ণগঞ্জ জেলার সংগঠকদের বিবৃতি  

নারায়ণগঞ্জ টাইমস:

প্রকাশিত:২১:২৮, ৩ জানুয়ারি ২০২৫

অপপ্রচার নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, নারায়ণগঞ্জ জেলার সংগঠকদের বিবৃতি  

ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সদ্য অনুষ্ঠিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন 'মার্চ ফর ইউনিটি'র প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ নিয়ে মিথ্যা অপপ্রচারের বিরুদ্ধে বিবৃতি দিয়েছেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন, নারায়ণগঞ্জ জেলার সংগঠনকরা।

শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) বিকালে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তারা বলেন, গত ৩১ ডিসেম্বর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন 'মার্চ ফর ইউনিটি'র ডাক দেয়। সেখানে ঢাকা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে দেশের প্রায় সব জেলা থেকে ছুটে আসে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিট ধারণকারী শিক্ষার্থী-জনতারা।

নারায়ণগঞ্জ থেকেও ছুটে যায় সহস্রাধিক ছাত্র-জনতা। অনুষ্ঠান শেষে আমরা দেখেছি নারায়ণগঞ্জ তথা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারকে কলুষিত করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে নারায়ণগঞ্জের এক শ্রেণির মানুষ।

কিন্তু আমরা দেখেছি গত ৩১ তারিখের আয়োজনে আমাদের ঐক্যবদ্ধ অবস্থান। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিপ্লবী গর্জন। অন্যায়, অনিয়মের বিরুদ্ধে কিরকম সোচ্চার ভূমিকায় আছেন বর্তমান বাংলাদেশের অন্যতম এই সংগঠনটি। এবং এতো বড় অনুষ্ঠানে কোনো অনিয়মের সঠিক প্রমাণ কোথাও কেউ তুলে ধরতে পারে নি।

স্বচ্ছতার জায়গায় এই সংগঠনটি আপোষহীন। বরং আমরা দেখছি, দেশের অন্যান্য কিছু সংগঠনগুলোর নামে প্রতিনিয়ত আসছে অনিয়ম ও চাঁদাবাজির ঘটনা। সেখানে চুপ ভূমিকায়ও থাকতে দেখেছি অনেককে। যারা বৈষম্যবিরোধীর ব্যানার নিয়ে কথা বলছেন, আপনাদের কুচক্র জাতির কাছে, নারায়ণগঞ্জবাসীর কাছে স্পষ্ট।

আমরা লক্ষ্য করছি যে, দেশের অন্যান্য সংগঠনগুলো প্রায়ই তাদের কার্যক্রম -কর্মসূচি, অনুষ্ঠান করেন। তাদের অর্থের উৎস সম্পর্কে আপনারা জানতে চেয়েছেন কিনা বা এই ব্যাপারে যদি আপনাদের অভিমত এমন হয়, তাদের স্পন্সর করার মতো জায়গা আছে। তাহলে, সেই প্রেক্ষিতে আপনার তো জানার কথা যে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে স্পন্সর করার মতো জায়গা আরও বেশি রয়েছে।

কারণ এই সংগঠন দেশ ও দশের স্বার্থে একটি ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন এবং অবিরাম কাজ করে যাচ্ছেন। বরং যারা দেশের ক্ষতি ও নিজেদের স্বার্থ হাসিলে লিপ্ত তাদের প্রতি আপনাদের নীরব ভূমিকা ও আমাদের প্রতি আপনাদের এমন দৃষ্টিভঙ্গি আমাদের ভাবিয়ে তোলে।

যেমনিভাবে জেলা শহরে আমরা একটি ছোট প্রতিবাদী কর্মসূচি করি, আমরা সেখানে অর্থের যোগান নিজেরাই দিয়ে থাকি। বড় হলে সহযোগিতা চাই অন্যদের।

তেমনিভাবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গত ৩১ তারিখের প্রোগ্রাম নিয়ে বিভিন্ন মহলের ব্যাপক আগ্রহ ছিলো। তারা চেয়েছেন এমন একটি প্রোগ্রাম হোক। যার ফলশ্রুতিতে বিভিন্ন মহল স্পন্সর করেছেন এই সংগঠনকে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, বর্তমান বাংলাদেশের এমন একটি সংগঠন; যে সংগঠন এই দেশের একটি ফ্যাসিস্ট কাঠামোর পরিবর্তন এনেছেন। যেখানে অংশীদার ছিলেন অন্যান্য সংগঠনগুলো।

এমন একটি সংগঠনের ভালো কাজের সাধুবাদ ও অংশীদার বিভিন্ন মহল হবেন এটাই স্বাভাবিক। কেন্দ্রীয় কমিটি সবাই মিলে এই প্রোগ্রামের অর্থের সংগ্রহ করেছেন। কেন্দ্র থেকে নারায়ণগঞ্জের পেছনে যেই অর্থ খরচ করেছেন এটি চাইলে আমরা নিজেরাও সংগ্রহ করতে পারতাম।

আমাদের যেহেতু চেইন অব কমান্ড নেই তাই এই কাজটি কেন্দ্রই করেছেন। আমরা জেনেছি, অন্যান্য অনেক জেলার ভাইয়েরা নিজেরাই নিজেদের যাতায়াত ও খাবার খরচ ম্যানেজ করে ঢাকায় এসেছেন। কেন্দ্র থেকে সাপোর্ট দেয়ার প্রয়োজন পড়েনি।

কেন্দ্র চেয়েছেন যারা এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছে তারা দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসায় তাদের জন্য দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা রাখতে। এত মানুষের খাবারটা তারা একসাথে না করতে পেরে কিছু জেলায়, জেলাভিত্তিক টাকা প্রোডাইড করেছেন দুপুরের খাবার খেয়ে নেবার জন্য।

এটিকে মাথাপিছু ২০০ টাকা করে মানুষ ভাড়ার দিকে ভিন্নখাতে প্রভাবিত যারা করেছেন তারা প্রকৃত দুশমনি করেছেন বৈষম্যবিরোধীর নামের প্রতি। তাদের প্রতি আমাদের নিন্দা ও ধিক্কার! 

নারায়ণগঞ্জে আন্দোলনের ফ্রন্ট লাইনার দাবীদার জনৈক ব্যক্তি কেন্দ্রীয় সমন্বয়কদের স্ব-ঘোষিত সমন্বয়ক আখ্যা দেয়ার মাঝেই চিহ্নিত হয়ে গেছে তার জ্ঞানের পরিধি এবং সাংগঠনিক অদক্ষতা।

তারপরও নারায়ণগঞ্জের সংগঠকরা তার সাথে বসে কথা বলতে চেয়েছেন। চেষ্টা করেছেন ফোনে যোগাযোগ করতে। কিন্তু সৎসাহসের অভাব থাকা ও নিজের কাছে বিতর্কিত উত্তর ছাড়া যৌক্তিক কোনো উত্তর না থাকায় দেখা ও কথা বলতে চান নি বলেই স্পষ্ট হয়েছে আমাদের কাছে। এবং এক বৈঠক থেকে অগোচরেই অনেকের চোখের আড়াল হয়ে যান তিনি।

সে একজন আন্দোলনকারী হিসেবে নারায়ণগঞ্জ থেকে কেন্দ্র, সবার সাথেই তার পরিচয় ও জানাশোনা রয়েছে। কিন্তু কারো কাছেই কিছু জানতে না চেয়ে মনগড়া কিছু ভুল তথ্য ফেইসবুক পোস্টের মাধ্যমে রটিয়ে দেয়া হয়। যা বিগত আমলের রটানো লীগের শামিল।

তাহলে বুঝাই যাচ্ছে সে আসলে জবাবদিহিতা চায় নি। চেয়েছে এই ব্যানারকে কলঙ্কিত করতে। সে এই ব্যানারকে মুখে ধারণ করলেও অন্তরে ধারণ ও লালন করেন কিনা এটি নিয়ে তৈরি হয়েছে সন্দেহ! 

নারায়ণগঞ্জের সংগঠকদের কটাক্ষ করা, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নামে মিথ্যা অপবাদের জন্য আমরা নারায়ণগঞ্জের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।

বিবৃতিদাতা হলেন- নাজমুল ইসলাম (ফতুল্লা থানা),  জুনায়ের আহমেদ আকাশ (রূপগঞ্জ থানা), রিফাত হোসাইন অন্তু (বন্দর থানা), ফারদিন শেখ (সদর থানা), মো. পিয়াল ভূঁইয়া (আড়াইহাজার থানা), অনিক খান সিয়াম (সোনারগাঁ থানা), মেহরাব হোসেন প্রভাত (সিদ্ধিরগঞ্জ থানা)।