নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

বৃহস্পতিবার,

১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও মসজিদ দখল এবং  মাজার ধ্বংসের বিরুদ্ধে 

গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের

নারায়ণগঞ্জ টাইমস:

প্রকাশিত:২০:১৭, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের

সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও মসজিদ দখল করার এবং মাজার ধ্বংসের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলার দাবিতে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট এক প্রতিবাদী সমাবেশ ও মিছিল করেছে। 


আজ মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকালে নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে সমাবেশের সূচনা হয়। 


সংগঠনের সভাপতি জিয়াউল ইসলাম কাজলের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক ধীমান সাহা জুয়েলের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বি। উপস্থিত ছিলেন শিশু সংগঠক রথীন চক্রবর্তী, সিপিবির জেলা সভাপতি হাফিজুল ইসলাম, বাসদের জেলা সদস্য সচিব আবু নাইম খান বিপ্লব, ন্যাপের জেলা সাধারণ সম্পাদক এড. আওলাদ হোসেন, গণসংহতি আন্দোলনের জেলা সমন্বয়ক তরিকুল সুজন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টিও জেলা সভাপতি মাহামুদ হোসেন প্রমুখ।

 

সমাবেশে বলা হয়, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার স্বৈরশাসনের পতনের মধ্যদিয়ে মানুষের মধ্যে দেশ নিয়ে নতুন করে আশার সঞ্চর হলেও সারাদেশে রাতারাতি এক শ্রেণির সুবিধাবাদী, সুযোগসন্ধানী এবং উগ্র-মৌলবাদী অসাধু-চক্রের আবির্ভাবের কারণে উদবেগ-উৎকন্ঠাও তৈরি হচ্ছে প্রবল ভাবে। প্রচলিত আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে শেখ হাসিনার শাসনামলের মতো বিভিন্ন জায়গায় তারা নিজেরা অনৈতিক, ধ্বংসাত্মক কাজে লিপ্ত হচ্ছে, প্রশাসনের নিরবতার সুযোগে ক্ষেত্র বিশেষে হিংস্র হয়ে উঠছে। অনিয়মতান্ত্রিকভাবে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকসহ বিভিন্ন শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের বলপূর্বক পদত্যাগে বাধ্য করছে। চর-দখলের মতো দখলে নিচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও মসজিদ। বিভিন্ন মাজারে হামলা করছে, ধ্বংস করছে, আগুন দিচ্ছে।  

 

রফিউর রাব্বি বলেন, দেশে যে ভাবে মাজারকে লক্ষ করে হামলা হচ্ছে তা ভয়াবহ। সরকারের নিরবতা হামলাকারী দুর্বৃত্তচক্রকে উৎসাহ যোগাচ্ছে। অন্তবর্তী কালীন সরকারের উপদেষ্টা কেউ কেউ এর বিরোধিতা করলেও এই সাম্প্রদায়িক উগ্রবাদীদের নিয়ন্ত্রণে তারা দৃশ্যমান কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেনা। অপরাধিরা আইনের আওতায় আসছে না। সিলেটে শাহ পরানের ওরশে হামলা সরকারের ব্যর্থতারই প্রতিফলন। দেশে মব ট্রায়ালের মাধ্যমে সাধারণ জনতাকে উত্তেজিত করে একের পর এক ভয়াবহ ঘটনা ঘটে চলেছে। ভিন্ন মতকে এভাবে হামলা, অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে প্রতিহত করা কোন সভ্য দেশে চলতে পারে না। তিনি বলেন, মনে রাখতে হবে স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে জুলাই ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের কৃতিত্ব যেমনি ছাত্রদের একার নয়, এইটি কোন রাজনৈতিক দলেরও একার নয়। দেশের আপামর জনতা স্বৈরাচার শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে এসেছে। হাসিনাকে হটিয়ে দেশটাকে ‘আফগানিস্তান’ বানানোর জন্য তারা রাস্তায় নামে নাই। 

 

তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জে বিভিন্ন স্কুলে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে। স্কুলের কমিটি মসজিদের কমিটি দখল করা হচ্ছে। জোর করে শিক্ষকদের পদত্যাগ করানো হচ্ছে। মসজিদের ইমামদের অপসারণ করা হচ্ছে। ট্রাস্টিবোর্ডের মাধ্যমে পরিচালিত স্কুলকেও দখলে নেয়া হচ্ছে। শহরের বিদ্যা নিকেতন স্কুলের প্রধান শিক্ষককে অপসারণ করে পুরো স্কুলে ভিতীকর এক পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে। মাসদাইর কবরস্থান মসজিদের ইমামকে অপসারণ করে মসজিদটি দখলে নেয়া হয়েছে। বহু স্কুলে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আমরা অতি দ্রুত এ সবের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছি। সমাবেশ শেষে একটি মিছিল শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

সম্পর্কিত বিষয়: