নারায়নগঞ্জের সোনারগাঁও থানায় দায়ের করা হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের বিরুদ্ধে কথিত সেই দ্বিতীয় স্ত্রী জান্নাত আরা ঝর্ণার ধর্ষণ মামলায় আদালতে অভিযোগ গঠন (চার্জ) অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (৩ নভেম্বর) সকালে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আনিসুর রহমানের আদালত অভিযোগ শুনে আগামী ১৪ নভেম্বর সাক্ষী গ্রহনের দিন ধার্য করেছেন।
নারায়ণগঞ্জ জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের পাবলিক প্রশিকিউটর (পিপি) রাকিবুজ্জামান রকিব জানান, কথিত দ্বিতীয় স্ত্রী জান্নাত আরা ঝর্ণা সোনারগাঁও থানায় মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন।
সেই মামলায় কাশিমপুর কারগার থেকে মামুনুল হককে পুলিশ প্রহরায় নারায়ণগঞ্জ আদালতে নিয়ে আসা হয়েছে। আদালতের কার্যক্রম শেষে তাকে আবার সেই কারাগারেই প্রেরন করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, শহীদুল ইসলামের সঙ্গে ঝর্ণার দাম্পত্য জীবন সুখে শান্তিতে অতিবাহিত হচ্ছিল। তাদের ১৭ ও ১৩ বছর বয়সী দুই সন্তান আছে। স্বামীর ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে ২০০৫ সালে মামুনুল হকের সঙ্গে ঝর্ণার পরিচয় হয়।
তাদের বাসায় অবাধ যাতায়াত থাকার সুবাধে ছোটখাটো সাংসারিক মতানৈক্যের মধ্যে মামুনুল সুকৌশলে প্রবেশ করে স্বামী-স্ত্রী মধ্যে দূরত্ব তৈরি করতে থাকেন। সাংসারিক টানাপড়েনের এক পর্যায়ে মামুনুলের ‘কুপরামর্শে’ ২০১৮ সালের ১০ আগস্ট শহীদুলের সঙ্গে তার বিচ্ছেদ হয়।
জান্নাত এজাহারে অভিযোগ করেন, বিচ্ছেদের পর তার অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে মামুনুল তাকে ঢাকায় আসার জন্য ‘প্ররোচিত’ করেন। ঢাকায় আসার পর তার পরিচিত বিভিন্ন অনুসারীর বাসায় রেখে মামুনুল নানাভাবে তাকে ‘কুপ্রস্তাব’ দেন।
এর ধারাবাহিকতায় মামুনুলের পরামর্শে কলাবাগানে এক বাসায় সাবলেট থাকতে শুরু করেন এবং বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে এবং অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে মামুনুল হক তার সঙ্গে শারীরিক সর্ম্পকও করেছেন। কিন্তু বিয়ের কথা বললে মামুনুল করছি, করব বলে সময়ক্ষেপণ করতে থাকেন।
বাদী আরও অভিযোগ করেন, ঘোরাঘুরির কথা বলে ২০১৮ সাল থেকে মামুনুল বিভিন্ন হোটেল, রিসোর্টে তাকে নিয়ে যেতেন। সর্বশেষ গত ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে রয়্যাল রিসোর্টে ঘুরতে নিয়ে গিয়েও মামুনুল হক তাকে ‘ধর্ষণ’ করেন।
উল্লেখ্য, মামুনুল হক গত ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে রয়্যাল রিসোর্টে এক নারীর সঙ্গে অবস্থান করছিলেন। ওই সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এসে মামুনুল হককে ঘেরাও করেন। পরে ওই রিসোর্টে স্থানীয় হেফাজতের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা এসে ব্যাপক ভাংচুর করে মামুনুল হককে ছিনিয়ে নিয়ে যান।
তবে ঘেরাও থাকা অবস্থায় এই হেফাজত নেতা জানান, সঙ্গে থাকা নারী তার দ্বিতীয় স্ত্রী। দুই বছর আগে তিনি শরিয়াহ মোতাবেক বিয়ে করার বিষয়টি মামুনুল হকের প্রথম স্ত্রী জানতেন না। এছাড়া তিনি রিসোর্টে স্ত্রীর নাম সঠিক বলেননি।