নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

সোমবার,

২৮ এপ্রিল ২০২৫

সাত খুনের মামলার রায় কার্যকরের দাবিতে আইনজীবীদের মানববন্ধন

নারায়ণগঞ্জ টাইমস

প্রকাশিত:১৮:০৯, ২৭ এপ্রিল ২০২৫

সাত খুনের মামলার রায় কার্যকরের দাবিতে আইনজীবীদের মানববন্ধন

নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুনের মামলা রায় অবিলম্বে কার্যকরের দাবিতে মানববন্ধন করেছে আইনজীবী সমাজ। মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান।  

রবিবার (২৭ এপ্রিল) সকালে নারায়ণগঞ্জ আদালত পাড়ায় আইনজীবী সমাজ, নিহতের পরিবার ও নারায়ণগঞ্জবাসীর উদ্যোগে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।  

মানবন্ধনে আইনজীবী সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, আপনারা জানেন এ মামলার আসামিরা অন্তত প্রভাবশালী। ওই তারেক সাইদ হলো মোফাজ্জল হোসেন মায়ার মেয়ের জামাতা। এবং অন্য অন্যরা আওয়ামী লীগের মদদপুষ্ট ছিল। তারা উচ্চ আদালতে মামলাকে ভিন্ন খেতে প্রবাহিত করে।

আজকে ৫-৬ বছর হয়ে গেল এই মামলার এখন পর্যন্ত নিষ্পত্তি হচ্ছে না। আপিল অ্যাপিলেশনে সে মামলাটি দীর্ঘস্থায়ী করা হচ্ছে। আমরা বলতে চাই ৫ই আগস্ট এর মাধ্যমে ওই ফ্যাসিদের পতন হয়েছে। ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে যে অন্তবর্তী সরকার গঠন হয়েছে সেই সরকারের প্রতি আমাদের অনুরোধ অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে আপিল অ্যাপিলেশন ডিভিশনের মাধ্যমে আপনারা মামলাটিকে দ্রুত নিষ্পত্তি করুন। 

আগামী ১৫ দিনের মধ্যে সোনানীর মাধ্যমে এ রায় কার্যকরের ব্যবস্থা করবেন। এই কার্যকরের মাধ্যমে নিহতদের পরিবারদের যে দাবি তা পূর্ণ করবেন। এই ঘটনার যদি বিচার হয় তাহলে এই ধরনের ঘটনা বাংলাদেশে আর পুনরাবৃত্তি হবে না। নারায়ণগঞ্জের ত্বকীসহ সকল হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবি জানাচ্ছি। 

মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এড. সরকার হুমায়ুন কবির, সাধারণ সম্পাদক এড. এইচ এম আনোয়ার প্রধান, জেলা আইনজীবী সমিতিরসাবেক সাধারণ সম্পাদক এড. জাকির হোসেন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু, জেলা আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এড. আবুল কালাম আজাদ জাকির, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পিপি এড. খোরশেদ আলম মোল্লা, সিনিয়র আইনজীবী এড. মাহবুবুর রহমান মাসুম, এড. আলাদা হোসেন, নিহত প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটিসহ নিহতদের পরিবার ও আইনজীবীসহ সাধারণ জনগণ। 

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র-২ নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন সরকারসহ ৭ জনকে অপহরণ করা হয়। ঘটনার তিনদিন পর শীতলক্ষ্যা নদীতে তাদের লাশ ভেসে ওঠে। সাতজনকে অপহরণ ও হত্যার ঘটনায় নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি ও আইনজীবী চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল দুটি মামলা দায়ের করেন।

হত্যাকাণ্ডের ১১ মাস পর ২০১৫ সালের ৮ এপ্রিল মামলার তদন্তকারী সংস্থা নারায়ণগঞ্জ জেলা ডিবি পুলিশ দুটি মামলার অভিন্ন চার্জশিট আদালতে দাখিল করেন। ২০১৭ সালের ১৬ জানুয়ারি চার্জশিটভুক্ত আসামি নাসিক ৪ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি নুর হোসেন, র‌্যাব-১১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মাদ, সাবেক কোম্পানি কমান্ডার মেজর আরিফ হোসেন ও লে. কমান্ডার মাসুদ রানাসহ ৩৫ জনকে দণ্ড প্রদান করেন নারায়ণগঞ্জের একটি আদালত। এর মধ্যে ২৬ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ৯ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।

উচ্চ আদালতে ২৬ জনের মধ্যে ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে ১১ জনের মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন। বাকী ৯ জনকে দেওয়া কারাদণ্ডের রায় উচ্চ আদালত বহাল রাখেন। মামলাটি বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন ।