আনোয়ার হোসেন আনু হত্যা মামলায় গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তির দাবিতে নারায়ণগঞ্জ আদালত পাড়ার মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে এলকাবাসী। সেই সাথে আনোয়ার হোসেন আনু হত্যার প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেপ্তারেরও দাবিও জানান তারা।
রবিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকাল দশটা থেকে দুপুর বারোটা পর্যন্ত আদালতের প্রথম ফটকের সামনে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে এলাকাবাসী।
এসময়ে মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, এনায়েতনগরের আনোয়ার হোসেন আনু ৩৩ শতাংশ জায়গা সম্পতি নিয়ে ভাইদের সাথে দীর্ঘদিন ধরেই বিরোধ ছিল। সেই বিরোধের জেরে তার ভাইয়েরা তাকে দেওভোগের বাড়ি থেকেও বের করে দেয়।
আনু তার ছেলে মেয়েদের নিয়ে জামতল ভাড়া বাড়িতে বসবাস শুরু করে। ২৬ অক্টোবর দুপুরে নিখোঁজের পর সন্ধ্যায় ভাড়াবাড়ির পরিত্যক্ত লিফটের নিচে তার মৃতদেহ পাওয়া যায়। সম্পত্তির জন্যই আনোয়ার হোসেন আনুকে পরিকল্পিতভাবে তাঁরাই ভাইয়েরা হত্যা করেছে।
তাঁরা আরও বলেন, আনুর ভাইয়েরা প্রকৃত অপরাধীরা। তারা নিজেদেরকে আড়াল করে সম্পত্তির লোভে আনুর ছেলেমেয়েকে বাড়িতে আটক করে পুলিশ দিয়ে মিথ্যা মামলা গ্রেপ্তার দেখিয়ে জেলহাজতে বন্দি করে রেখেছে।
আর এই সুযোগে আনুর ভাই আবুল কাশেম বাদশা, নুর হোসেন ও সাবেক কাউন্সিলর মনির হোসেন তার সম্পতি ভোগদখল করে বাড়িভাড়ার লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে যাচ্ছেন। অবিলম্বে আনোয়ার হোসেন আনু হত্যার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তার ভাইদেও গ্রেপ্তারের জোর দাবি জানাচ্ছি। পাশাপাশি নিরাপরাধ আনুর ছেলেমেয়েসহ গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের মুক্তির দাবি করছি।
উল্লেখ্য, গত ২৬ আগস্ট দুপুরে ছেলে-মেয়েকে দুপুরের খাবার রেডি করতে বলে হঠাৎ তিনি নিখোঁজ হয়ে যান। সন্ধ্যায় শহরের জামতলা কেন্দ্রীয় ঈদগাহের পাশে অবস্থিত একটি বিল্ডিংয়ের লিফটের ফাঁকা অংশ থেকে আনোয়ারের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এসময় মৃত্যুর খবরে বাড়িতে ছুটে আসা আনুর শ্বশুরবাড়ির লোকজন ও তার ছেলে-মেয়েকে একটি কক্ষে আটক রেখে আনুর ভাইয়েরা মিলে পিটাতে থাকে। পিটিয়ে তাদের স্বীকার করানোর চেষ্টা করে যে, তারাই আনুকে হত্যা করেছে।
পরে গত ২৭ আগস্ট নিহতের বড় ভাই আবুল কাশেম বাদশা মিয়া ফতুল্লা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। অভিযুক্তরা হলেন- ফতুল্লা বিসিক মার্টিন গার্মেন্ট গলি গোল মোহাম্মদের ছেলে রাসেল মাহমুদ (৪২), রাসেল মাহমুদের স্ত্রী পাপিয়া আক্তার পান্না (৪২), মাসদাইর আদর্শ স্কুল রোড (হেলেনা কটেজ এর ৯ম তলার ভাড়াটিয়া) নিহতের মেয়ে জান্নাত আরা জাহান প্রেরনা (২১) ও ছেলে সারিদ হোসেন, বাবুরাইল এলাকার করিম মিয়া ছেলে নুর আলম (৪৫), কাজল (৩২) ও মেয়ে রোকসানা আক্তার পুতুল (৪৬)।
আনোয়ার হোসেন আনুর হত্যার সাথে সাথেই ৬ জনকে আটক করে ফতুল্লা থানা পুলিশ। তারা হলেন- নিহত আনোয়ার হোসেনের মেয়ে জান্নাত আরা জাহান প্রেরনা (২১) ও ছেলে সারিদ হোসেন (১৯), বাবুরাইল এলাকার করিম মিয়ার ছেলে ও সাবেক স্ত্রী ভাই -বোন নুর আলম (৪৫), কাজল (৩২) ও রোকসানা আক্তার পুতুল (৪৬) ও কাজের মেয়ে।