নারায়ণগঞ্জ সাবেক এমপি শামীম ওসমান ও সাবেক হুইপ নজরুল ইসলাম বাবু ও আওয়ামী লীগের শাসনামলে সাবেক এমপি নজরুল ইসলাম বাবুর অর্থ যোগানদাতা ফকির আক্তারুজ্জামানের বিরুদ্ধে গুলশানের দুটি ফ্ল্যাট জোরপূর্বক দখল ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করেছেন সংগীত শিল্পী ইভা রহমান।
বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) গুলশান থানায় মামলাটি দায়ের হয়। মামলা নং- ৭/২০৯। গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তৌহিদ আহম্মেদ এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। এর আগে গত বুধবার (২৮ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর গুলশানের একটি রেস্তোরাঁয় সংবাদ সম্মেলন করে ইভা রহমান এ অভিযোগ করেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- ড. কাজী এরতেজা হাসান (৬৪), মফিজুল ইসলাম (৬৫), মোঃ রিপন (২৭)।
সংবাদ সম্মেলনে ইভা রহমান বলে, ফকির আকতারুজ্জামানের নেতৃত্বে আমার ফ্ল্যাট দুটি দখল করার জন্য কাউন্সিলর মফিজুল ইসলাম ও তিতুমীর কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি রিপনসহ আরো পঞ্চাশ থেকে ষাট জন আমার বাড়িতে হামলা করে। এরপর বিভিন্ন কৌশলে
যদি আমরা বাড়ি ছেড়ে না যাই তাহলে আমাকে ও আমার স্বামী সোহেল আরমানকে মেরে ফেলবে। আমি বাড়ি ছাড়তে অনীহা প্রকাশ করায় ফকির আকতারুজ্জামানের পক্ষ থেকে হুইপ নজরুল ইসলাম বাবু ও এমপি শামীম ওসমান আমাকে ফোন দিয়ে বাড়ি ছেড়ে দেওয়ার জন্য বলে এবং বাড়িটি ফকির আকতারুজ্জামানের নামে লিখে দেওয়ার জন্য হুমকি দেয়।
ইভা রহমানের দায়েরকৃত মামলার কপি হুবুহু তুলে ধরা হলো-
আমি শেখ উরী আরমান ইভা (৪১), স্বামী-সোহেল আরমান, ঠিকানাঃ বাসা নং- ৬/বি, রোড নং-৪৪, গুলশান-০২, থানা-গুলশান, জেলা-টাকা অই থানায় হাজির হয়ে বিবাদী ১। ফকির আকতারুজ্জামান (৫৫), পিতা-মৃত ইউসুফ আলী ফকির, মাতা-অজ্ঞাত, ঠিকানাঃ গ্রাম-পাঁচরুকি, থানা-আড়াইহাজার, জেলা-নারায়নগঞ্জ, ২। হুইপ নজরুল ইসলাম বাবু (৫২), পিতা-মৃত শহিদ মেম্বার, ঠিকানাঃ গ্রাম-লুকর্তাঁরা, থানা- আড়াইহাজার, জেলা-নারায়নগঞ্জ, ৩। সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমান (৬৩), পিতা-মৃত একেএম শামসুজ্জোহা, ঠিকানাঃ গ্রাম-উত্তর চাষাড়া, থানা ও জেলা-সারায়নগঞ্জ, ৪। ড. কাজী এরতেজা হাসান (৬৪), পিতা-মৃত কাজী আব্দুল মায়াদ, ঠিকানাঃ বাসা নং-৩৮/২/৩, অফিট ভিলা, খন্দকার গলি, সিদ্ধেশ্বরী, থানা-রমনা, জেলা-ঢাকা ৫। মফিজুল ইসলাম (৬৫), সাবেক কমিশনার, গুলশান, পিতা-অজ্ঞাত, ঠিকানাঃ অজ্ঞাত, ৬। মোঃ রিপন (২৭), সাবেক সভাপতি, তিতুমীর কলেজ, ছাত্রলীগ, পিতা-অজ্ঞাত, ঠিকানাঃ অজ্ঞাত সহ অজ্ঞাতনামা ৫০/৬০ জনের বিরুদ্ধে এই মর্মে অভিযোগ করিতেছি যে, গুলশান থানাধীন গুলশান-০২, রোড নং-৪৪, বাসা নং-৬/বি ১০তলা বিশিষ্ট একটি ভবন আছে। যাহার প্রতিটি ফ্ল্যাট ৪৫০০ বর্গফুট করে ও প্রতিটি ফ্ল্যাটের মূল্য-৯,০০,০০,০০০/-(নয় কোটি) টাকা। গত ইই ১৩/১১/২০১৭ তারিখ রাত্রী অনুমান ০৮:০০ ঘটিকায় বর্ণিত ঠিকানায় উপরোক্ত ১,২,৩,৫ ও ৬নং বিবাদীগণ সহ অজ্ঞাতনামা ৫০/৬০ জন বিবাদীগণ ৫ম ও ৬ষ্ঠ তলার দুইটি ফ্ল্যাট ক্রয়ের কথা বলে জোর পূর্বক অনুমানিক ১৮,০০,০০,০০০ (আঠারো কোটি) টাকার ফ্ল্যাট দুইটি ৯২,০০,০০০/-(বিরানব্বই লক্ষ) টাকা দিয়ে আমাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে দখল করে নেয়। পরবর্তীতে উপরোক্ত ১,২,৩,৫ ও ৬নং বিবাদীগণ সম্পূর্ণ ভাবনটি দখল করে নেওয়ার জন্য বিভিন্ন সময় প্রাণ নাশের হুমকীসহ বিভিন্ন ধরণের ভয়ভীতি প্রদান করেন। গত ২০২১ সালে সোহেল আরমান এর সহিত আমার বিবাহ হলে বিবাদীগ আরো বেশি ক্ষিপ্ত হয়ে পরে। ইং ২৫/০৪/২০২২ তারিখ বিকাল অনুমান ০৪:৪৫ ঘটিকায় উপরোক্ত ১,২,৩,৫ ও ৬নং বিবাদীগণ অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আমার বর্ণিত বাড়ীতে অনধিকার প্রবেশ করিয়া আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। এক পর্যায়ে বিবাদীগণ আমাকে ও আমার স্বামী সোহেল আরমান এর শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাথারী ভাবে মারপিট করিয়া নিলাফুলা জখম করে এবং বাড়ী ছেড়ে বিদেশে যাওয়ার জন্য হুমকী প্রদান করেন। উপরোক্ত ঘটনার বিষয়ে আমি ৪নং বিবাদীর নিকট সহযোগীতার জন্য গেলে সে আমাকে উপরোক্ত ঘটনার বিষয়ে সহযোগীতা করবে বলে আমার নিকট পর্যায়ক্রমে নগদ ৫,৬৭,৬৫,০০০/-(পাঁচ কোটি সাতষট্টি লক্ষ পয়ষট্টি হাজার) টাকা গ্রহণ করে কিন্তু কোন প্রকার সহযোগিতা না করে বিশ্বাসভঙ্গ করিয়া প্রতারণা মূলক ভাবে উল্লেখিত টাকা আত্মসাৎ প্রান নাশের হুমকী প্রদান করে এবং ১নং বিবাদীর কথামত ১নং বিবাদীকে বর্ণিত বাড়ীটি লিখে দিয়ে দেশ ছেড়ে পালানোর জন্য হুমকী প্রদান করেন।