নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

বৃহস্পতিবার,

২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

ব্যবসায়ী সাব্বির হত্যা মামলায় আদালতে জাকির খান, দু’জনের সাক্ষ্যগ্রহণ

নারায়ণগঞ্জ টাইমস

প্রকাশিত:২০:২৫, ৩ জুলাই ২০২৪

ব্যবসায়ী সাব্বির হত্যা মামলায় আদালতে জাকির খান, দু’জনের সাক্ষ্যগ্রহণ

নারায়ণগঞ্জে আলোচিত ব্যবসায়ী সাব্বির আলম খন্দকার হত্যা মামলায় আদালতে জাকির খানকে হাজির করা হয়েছে। বুধবার (৩ জুলাই) দুপুর সোয়া ১টার দিকে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ (প্রথম আদালত) উম্মে সারবান তাহুরার আদালতে তাকে হাজির করা হয়। 

এসময় জাকির খানের উপস্থিতিতেই আদালতে দুই জন সাক্ষী তাদের সাক্ষ্য প্রদান করেন। সাক্ষীরা হলেন, মামলার ৯ নম্বর সাক্ষী মো: শফিক ও ১০ নম্বর সাক্ষী মো: আমিন। আসামী পক্ষের আইনজীবীরা সাক্ষীদের প্রায় পৌনে ১ঘন্টা সময় ধরে জেরা করেন।

এ বিষয়ে আসামি পক্ষের আইনজীবী হুমায়ূন কবির বলেন, আজ সাব্বির হত্যা মামলায় দুই জন সাক্ষী তাদের সাক্ষ্য প্রদান করেছেন। তারা বলেছেন, এ ঘটনার সম্পর্কে তারা কিছুই জানেন না। হত্যাকান্ডের সময় তারা কেউ উপস্থিত ছিলেন না, তারা কেউ এ হত্যাকান্ড ঘটতে দেখেনি এবং কিভাবে তারা এ মামলার সাক্ষী হলেন, সেটাই তারা জানেন না।

একই বিষয়ে আরও জানতে চাইলে আসামি পক্ষের সহকারি আইনজীবী রাজীব মন্ডল বলেন, মামলার ৯ নম্বর সাক্ষী মো: শফীক আদালতকে জানিয়েছে মামলার সর্ম্পকে তিনি কিছুই জানেন না। ঘটনার সর্ম্পকেও তিনি কিছু জানেন না। ঘটনার সময় উপস্থিত ছিলেন না। 

সবচেয়ে বড় কথা এ মামলায় যে ওনাকে সাক্ষী করা হয়েছে, এটা তিনি নিজেও জানতেন না। যখন কোর্ট থেকে তাকে ডাকা হয়েছে, তখন তিনি জানতে পারেন এ মামলায় তাকে সাক্ষী করা হয়েছে। এর আগে তিনি পুলিশের কাছে কোন জবানবন্দি দেন নাই বলেও আদালতকে তিনি জানিয়েছেন।

আর মামলার ১০ নম্বর সাক্ষী আমিন আদালতকে প্রায় একই কথা জানিয়েছে। তিনিও বলেছেন, এ বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। ঘটনার সময়ও তিনি উপস্থিত ছিলেন না।

জাকির খানের চিকিৎসার বিষয়ে কোন আবেদন করা হয়েছে কি না? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে অ্যাডভোকেট রাজীব আরও বলেন, এর আগেও আমরা জাকির খানের চিকিৎসার জন্য আদালতে আবেদন করেছিলাম। আদালত তখন জাকির খানকে চিকিৎসা দেওয়ার আদেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু কারাকর্তৃপক্ষ সেটা বাস্তবায়ন করেনাই। তাই আজও তার চিকিৎসার জন্য আবেদন করেছি।

আমাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আগে জাকির খানকে কি কি চিকিৎসা দেয়া হয়েছে, কারাকর্তৃপক্ষের কাছে তার প্রতিবেদন চেয়েছেন আদালত। মামলার পরবর্তি তারিখ ১৬ই জুলাই।

এর আগে কড়া নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে জাকির খানকে আদালতে হাজির করা হয়। বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে জাকির খানতে আদালতে হাজির ও সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে প্রিজনভ্যানে তোলা হয়। এসময় পুলিশের পাশাপাশি জাকির খানেরও বিপুল সংখ্যক কর্মীসমর্থকরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, ২০০৩ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারী আততায়ীদের গুলিতে নিহত হন ব্যবসায়ী নেতা সাব্বির আলম খন্দকার। এ হত্যাকান্ডের পর তার বড় ভাই তৈমূর আলম বাদি হয়ে ১৭ জনকে আসামী করে ফতল্লা থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর মোট ৯ জন তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিবর্তন করা হয়। পরবর্তিতে মামলাটি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) স্থানান্তর করা হয়।

সিআইডির এএসপি মসিহউদ্দিন দশম তদন্তকারী কর্মকর্তা দীর্ঘ প্রায় ৩৪ মাস তদন্ত শেষে তিনি ২০০৬ সালের ৮ জানুয়ারী আদালতে ৮ জনকে আসামী করে চার্জশীট দাখিল করেন। এতে মামলা থেকে গিয়াসউদ্দিন, তার শ্যালক জুয়েল, শাহীনকে অব্যাহতি দিয়ে সাবেক ছাত্রদল সভাপতি জাকির খান, তার দুই ভাই জিকু খান, মামুন খানসহ মোট ৮ জনকে আসামী উল্লেখ করা হয়।

মামলার প্রধান আসামী গিয়াস উদ্দিনকে মামলা থেকে বাদ দেয়ায় মামলার বাদি তৈমূর আলম খন্দকার সিআইডির দেয়া চার্জশীটের বিরুদ্ধে ২০০৬ সালের ২৪ জানুয়ারী আদালতে নারাজি পিটিশন দাখিল করেন।

নারাজি পিটিশনে তৈমুর আলম বলেন, গিয়াসউদ্দিনই সাব্বির আলম হত্যাকান্ডের মূল নায়ক। গিয়াসউদ্দিন ও তার সহযোগীদের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা একটি গোজাঁমিলের চার্জশীট দাখিল করেছেন। পরবর্তীতে আদালত মামলাটি পুনরায় তদন্তের নির্দেশ দেন।
 

সম্পর্কিত বিষয়: