নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

রোববার,

০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

গিয়াসউদ্দিনের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেছে আইনজীবী ফোরাম 

নারায়ণগঞ্জ টাইমস

প্রকাশিত:২১:৩৫, ২২ মে ২০২৪

গিয়াসউদ্দিনের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেছে আইনজীবী ফোরাম 

দুর্নীতি দমন কমিশন দুদকের মামলায় নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক এমপি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনকে কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে নিংর্শত মুক্তির দাবি জানিয়েছে বিএনপি পন্থী আইনজীবীদের সংগঠন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখা। 

গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি অ্যাডভোকেট সরকার হুমায়ূন কবির ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ জাকির এই দাবি জানান।

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, সাবেক এমপি ও জেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিনের সাংগঠনিক দক্ষতা ও জনপ্রিয়তায় ঈর্ষাম্বিত হয়ে এই সরকার তার বিরুদ্বে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন দূর্নীতির মামলা সাজিয়ে রাজর্নৈতিকভাবে বিএনপি ও তাকে দূর্বল করতে চাচ্ছে।

এছাড়াও আরো ১২টি মিথ্যা গায়েবি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আমরা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের পক্ষ থেকে বলতে চাই, সরকারের এই হীন চক্রান্ত কোনদিনও সফল হবে না।

জনগণকে সাথে নিয়ে আমরা বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে এই অবৈধ সরকারের পতন ঘটিয়ে দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবো। সে পর্যন্ত আমাদের লচাই অব্যাহত থাকবে।

প্রসঙ্গত, অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় গত ১২ মে তারিখে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।  

ঢাকা মেট্টোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ আস সামছ জগলুল হোসেনের আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন গিয়াস উদ্দিন। পরে তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।

এ বিষয়ে আদালতে দুদকের প্রসিকিউশন শাখার সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম বলেন, অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় তিনি উচ্চ আদালত থেকে জামিনে ছিলেন। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী আজ তিনি আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করলে আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের ২ নভেম্বর গিয়াস উদ্দিনকে সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ দেওয়া হয়। পরে ওই বছরের ২৩ ডিসেম্বর দুদকে সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন তিনি।

অনুসন্ধানকালে প্রাপ্ত রেকর্ডপত্র ও দাখিল করা সম্পদ বিবরণী যাচাই করে গিয়াস উদ্দিনের নামে ১৫ কোটি সাত লাখ ১৫ হাজার ৭৭৯ টাকার স্থাবর এবং পাঁচ কোটি ৮৮ লাখ ৭০ হাজার ৩১৮ টাকার অস্থাবর সম্পদসহ মোট ২০ কোটি ৯৫ লাখ ৮৬ হাজার ৯৭ টাকার সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়।

২০০৮-২০০৯ করবর্ষ থেকে ২০২১-২০২২ করবর্ষে পারিবারিক ও অন্যান্য খাতে গিয়াস উদ্দিনের ১৭ কোটি ৪৫ লাখ ৯০ হাজার ৪৩ টাকা ব্যয়ের তথ্য পায় দুদক। এসব ব্যয়ের বিপরীতে বিভিন্ন সময়ে সঞ্চয় হিসাবে ছয় কোটি ৮১ লাখ ২২ হাজার ৮৫৬ টাকা, গৃহ সম্পত্তি থেকে আয়ের দুই কোটি ১৮ লাখ ৬৯ হাজার ৪৫০ টাকা, পিতার কাছ থেকে হেবা মূল্যে প্রাপ্ত ১১ শতাংশ জমিসহ সাত কোটি টাকার দালান, চার লাখ ৩২ হাজার টাকার মুক্তিযোদ্ধা ভাতাসহ মোট ১৭ কোটি ৬৮ লাখ ৮৪ হাজার ৭৩৭ টাকার বৈধ ও গ্রহণযোগ্য উৎস পাওয়া যায়।

তবে, গিয়াস উদ্দিনের আয়কর নথি অনুযায়ী, কাসসাফ শপিং সেন্টার-১ নির্মাণ ব্যয় প্রদর্শনকালে ২০২১-২০২২ করবর্ষে মার্কেটের ৮০২ বর্গমিটার নির্মাণে এক কোটি ৪১ লাখ ৮৬ হাজার ৯৩১ টাকা বিনিয়োগের বিষয়ে বৈধ উৎস পায়নি দুদক। যা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ বলে দুদকের অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়।

এ ঘটনায় ২০২১ সালের ১৯ ডিসেম্বর ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ দুদক উপপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে গিয়াস উদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন।
 

সম্পর্কিত বিষয়: