নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

রোববার,

২৪ নভেম্বর ২০২৪

মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলায় ছাত্রলীগ নেতাসহ দুজনের সাক্ষ্য

নারায়ণগঞ্জ টাইমস

প্রকাশিত:০০:৫১, ১৮ জুলাই ২০২২

মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলায় ছাত্রলীগ নেতাসহ দুজনের সাক্ষ্য

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানায় হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের বিরুদ্ধে তাঁর কথিত স্ত্রীর করা ধর্ষণ মামলায় ছাত্রলীগ নেতাসহ দুজন সাক্ষ্য দিয়েছেন। তাঁরা হলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি শাহ মো. সোহাগ ও সোনারগাঁয়ের বাসিন্দা মো. রতন মিয়া।  


রোববার (১৭ জুলাই) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নাজমুল হক শ্যামলের আদালতে এই সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। দুপুর ১টা থেকে পৌনে ২টা পর্যন্ত এই সাক্ষগ্রহণ চলে।


এ নিয়ে ওই ঘটনায় পঞ্চম দফায় আরও দুজন প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হলো। সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে মামুনুল হককে কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়। এর আগে সকাল নয়টার দিকে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে মামুনুল হককে কাশিমপুর থেকে নারায়ণগঞ্জ আদালতে আনা হয়েছিল।


নারায়ণগঞ্জ আদালত পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান বলেন, আগের তারিখে অনুপস্থিত থাকা চার্জশিটের ১১ নং সাক্ষী জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সোহাগ রনি ও ১২ নং সাক্ষী রতন মিয়া রোববার স্বাক্ষর দিয়েছেন। এনিয়ে এখন পর্যন্ত মোট ১১ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।


আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাড. ওমর ফারুক নয়ন বলেন, আজ মামুনুল হকের বিপরীতে দুই জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। সাক্ষীদের জেরার সঙ্গে ঘটনার কোনো মিল পাইনি। তাদের বক্তব্য ছিল এলোমেলো। আশা করি আমরা ন্যায়বিচার পাব।


তিনি আরও বলেন, এদিন আরও দুই জনের সাক্ষ্য দেওয়ার কথা ছিল। তাদের মধ্যে একজন উপস্থিত থাকলেও তার সাক্ষ্য নেওয়া হয়নি। অপরজন অনুপস্থিত ছিলেন।


আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) রকিব উদ্দিন আহমেদ বলেন, রোববার (১৭ জুলাই) চার্জশিটের ১১ ও ১২ নং সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন। সাক্ষীরা সবাই বলেছেন, মামুনুল হক ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তারা মামুনুল হককে অবৈধ নারীসহ আটক করেছেন।


রকিব উদ্দিন আরও বলেন, মামলার বাদী, তদন্ত কর্মকর্তাসহ ৪৩ জন সাক্ষীর মধ্যে বাদীসহ ১১ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।


এর আগে গত ৯ মে মামুনুল হকের বিরুদ্ধে চতুর্থ দফায় সাক্ষ্য দিয়েছিলেন চার্জশিটের ৯ ও ১০ নম্বর সাক্ষী যথাক্রমে-নাজমুল হাসান শান্ত ও মো. শফিকুল ইসলাম। গত ২৫ জানুয়ারি তৃতীয় দফায় সাক্ষ্য দিয়েছিলেন সোনারগাঁ উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নু, রিসোর্টের আনসার গার্ড ইসমাঈল ও রিসিপশন কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান।


তার আগে ১৩ ডিসেম্বর দ্বিতীয় দফায় মামুনুলের বিরুদ্ধে রয়েল রিসোর্টের সুপারভাইজার আব্দুল আজিজ, রিসিপশন কর্মকর্তা নাজমুল ইসলাম অনিক ও আনসার গার্ড রতন বড়াল সাক্ষ্য দিয়েছিলেন।


২০২১ সালের ২৪ নভেম্বর প্রথম দফায় মামুনুল হকের উপস্থিতিতে কথিত দ্বিতীয় স্ত্রী জান্নাত আরা ঝর্ণার সাক্ষ্য নেন আদালত। একই সঙ্গে ৩ নভেম্বর মামুনুল হকের বিরুদ্ধে করা ধর্ষণ মামলায় বিচারকাজ শুরুর আদেশ দেওয়া হয়।


প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে রয়েল রিসোর্টে এক নারীর সঙ্গে অবস্থান করছিলেন মামুনুল হক। ওই সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এসে তাকে ঘেরাও করেন। পরে স্থানীয় হেফাজতের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা এসে রিসোর্টে ব্যাপক ভাঙচুর করেন এবং তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যান।

 

এ ঘটনায় ৩০ এপ্রিল সোনারগাঁ থানায় মামুনুল হকের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ মামলা করেন ওই নারী। তবে ওই নারীকে তার দ্বিতীয় স্ত্রী দাবি করে আসছেন মামুনুল হক।