নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

বৃহস্পতিবার,

২১ নভেম্বর ২০২৪

বন্দর উপজেলা নির্বাচন : ত্রিমুখী সংকটে চেয়ারম্যান এহসান উদ্দিন

নারায়ণগঞ্জ টাইমস

প্রকাশিত:১৮:০৪, ২৮ এপ্রিল ২০২৪

বন্দর উপজেলা নির্বাচন : ত্রিমুখী সংকটে চেয়ারম্যান এহসান উদ্দিন

আসন্ন বন্দর উপজেলা পরিষদের নির্বাচন নিয়ে ত্রিমুখী সংকটের কবলে চেয়ারম্যান এহসান উদ্দিন আহমেদ। নিজের মেধাকে পুঁজি করে হেট্রিক বিজয়ী চেয়ারম্যান সার্বিক ভাবে সফল চেয়ারম্যান এহসান উদ্দিন আহমেদ এবার পড়েছে গভীর সংকটে। 

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন নিয়ে অনেক ভেবে চিন্তে কচ্ছপ গতিতে হাঁটছেন বন্দর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব এহসান উদ্দিন আহমেদ। ৩ জন প্রার্থী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও প্রত্যকের সাথে রয়েছে তার গভীর সম্পর্ক। 

কারো সাথে পারিবারিক, কারো সাথে পারিবারিক ও ব্যবসায়িক এবং অপর আরেক জনের সাথে পারিবারিক বা ব্যবসায়িক সম্পর্ক না থাকলেও তাকে বিজয়ের মালা নিশ্চিত করতে কঠোর নির্দেশ রয়েছে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাংসদ সেলিম ওসমানের। 

আত্নীয়, ব্যবসায়িক সম্পর্ককে প্রাধান্য দিবে নাকি সাংসদ সেলিম ওসমানের নির্দেশ অনুযায়ী একজন বীর সেনানীর জন্য কাজ করে বিজয়ের মালা নিশ্চিত করবে এমনই প্রশ্ন সর্বত্র চাউর।  

সরাসরি রাজনীতির সাথে জড়িত না থাকলেও নিজের চেয়ার ধরে রাখতে তিনি এখন জাতীয় পার্টির নেতা বনে গেছেন। জাতীয় পার্টির রাজনীতির সাথে জড়িত থাকলেও তা নিজের চেয়ার ধরে রাখার জন্য। ভোটের মাঠে কোন প্রভাব ফেলতে পারেননি তিনি। 

চেয়ারম্যান এহসান উদ্দিন আহমেদের পারিবারিক অবস্থান রাজনীতিতে বিএনপি ও  জামায়াতের সমর্থক এমনকি জামায়াত ইসলামীর অর্থ যোগানদাতাও রয়েছে তার পরিবারে। তারপরও তিনি এখন জাতীয় পার্টির নেতা ও চেয়ারম্যান হয়ে তিন মুখী সংকটের বেড়াজালে।  

স্থানীয় সাংসদ সেলিম ওসমানের কঠোর অবস্থান ও নির্দেশ বন্দর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব এম এ রশিদকে বিপুল ভোটে বিজয় নিশ্চিত করতে হবে।  

সেই দ্বারায় নির্বাচনী প্রচারনা চললেও বন্দর সদর ইউনিয়ন পরিষদ এলাকায় বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ রশিদের (দোয়াত কলম) প্রতীকের তেমন অবস্থান সৃষ্টি করতে পারেনি। 

রাজনৈতিক বৌদ্ধা ও সচেতন মহলের ভাষ্য এহসান উদ্দিন প্রকৃত পক্ষে কার জন্য কাজ করবে তা এখনও পরিস্কার করতে পারেনি। ৩ জন প্রার্থীর সাথেই রয়েছে ভাল সম্পর্ক। 

সূত্র মতে,  আগামী ৮ মে বন্দর উপজেলা পরিষদের নির্বাচন। নির্বাচনে ৩ জন প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বন্দর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এম এ রশিদ (দোয়াত কলম)  প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন। 

আসন্ন নির্বাচনে বিজয় নিশ্চিত কল্পে এম এ রশিদ রয়েছে নারায়ণগঞ্জ- ৫ আসনের সাংসদ সেলিম ওসমানের গুড বুকে। সাংসদ সেলিম ওসমানের কঠোর অবস্থানে ইউনিয়ন পরিষদের ৪ জন চেয়ারম্যান সরাসরি কাজ করছেন এম এ রশিদের জন্য। 

তবে বন্দর সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এহসান উদ্দিন আহমেদ এবার পড়েছে গভীর সংকটে। কার মন রক্ষা করবে আর কার জন্য কাজ করবে এমন সিদ্ধান্তহীনতায় রয়েছে। আবার বন্দর ইউনিয়ন এলাকা বিএনপির ঘাটি। কঠোর হুশিয়ারির কবলে পড়ে এম এ রশিদের পক্ষে কাজ করতে দেখা গেলেও তা অনেকটা গা-ছাড়া ভাব।  

অপরদিকে নিজ দলীয় (জাতীয় পার্টির) মাকসুদ হোসেনের সাথে দলের বাহিরেও পারিবারিক আত্নীয় সম্পর্ক (বিয়াই) রয়েছে। সেই বিয়াই মাকসুদ হোসেনের জন্য ওপেন ভাবে কাজও করতে পারছে না। 

অপরদিকে বন্দর উপজেলা পরিষদের সাবেক ২ বারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আতাউর রহমান  মুকুলের সাথে রয়েছে তার ব্যবসায়িক সম্পর্ক। বিএনপির বহিস্কৃত নেতা আতাউর রহমান মুকুলের সাথে তার পূর্ব পুরুষ হতে পারিবারিক সম্পর্ক রয়েছে। এহসান উদ্দিন আহমেদের প্রতিটি নির্বাচনে আতাউর রহমান মুকুল বিশাল সার্পোট দিয়ে গেছে। 

নিজের গাড়ীসহ কর্মীবাহিনীকে এহসান উদ্দিন আহমেদের পক্ষে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন মুকুল। সেই মুকুলের সাথে ব্যবসায়িক সম্পর্কও গভীর। আগামী ৮ মে নির্বাচন নিয়ে অনেকটা সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগছেন এহসান উদ্দিন।  

সম্পর্কের ভেড়াজালের মধ্যে মন রক্ষা করবে? নাকি পারিবারিক ও ব্যবসায়িক সম্পর্কের (পাটর্নার)র’ মন রক্ষা করবে? নাকি দেশের সূর্য সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধার জন্য কাজ করে বিজয়ের মালা নিশ্চিত করে এমপির মন রক্ষা করবে এমনই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে সর্বত্র। 

ত্রিমুখী সংকটের কবলে পতিত চেয়ারম্যান এহসান উদ্দিন আহমেদ প্রকৃত পক্ষে কার জন্য ভোটের মাঠে কাজ করবে? 

এম এ রশিদ, আতাউর রহমান মুকুল নাকি মাকসুদ হোসেনের জন্য। সার্বিক প্রেক্ষাপটে অনেকটা ত্রিমুখী সংকটে এহসান উদ্দিন আহমেদ। আগামী ৮ মে নির্বাচনেই পরিস্কার হবে মূলত এহসান উদ্দিন আহমেদ কার জন্য কাজ করেছে।