দলীয় নির্দেশনা অমান্য করে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি'র বহিষ্কৃত নেতা আতাউর রহমান মুকুলের নির্বাচনী গণসংযোগ ও উঠান বৈঠকে অংশ নিয়েছেন সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট আবুল কালামের পুত্র মহানগর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কাউন্সিলর আবুল কাউসার আশা।
গত ২৫ এপ্রিল সন্ধ্যায় বন্দর উপজেলার বন্দর ইউনিয়নের কুশিয়ারা এলাকায় উপজেলা নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থী আতাউর রহমান মুকুলের পক্ষে গণসংযোগ ও উঠান বৈঠক করেন আবুল কাউসার আশা।
এদিকে আবুল কাউসার আশার এই কর্মকাণ্ডকে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অপরাধ বলে আখ্যায়িত করেছেন তৃণমূল নেতাকর্মীরা। সেইসাথে এই অপরাধে কঠোর শাস্তি মূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দলীয় হাইকমান্ডের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তারা।
ঘটনা সূত্রে প্রকাশ, বর্তমান সরকারের অধীনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়নি বিএনপি। সেইসাথে চলমান উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
দলীয় এই সিদ্ধান্ত প্রতিটি নেতাকর্মীকে মেনে চলার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে এবং কেউ এই নির্দেশনা অমান্য করলে কঠোর শাস্তির হুঁশিয়ারিও জানানো হয়েছে।
দলীয় এই নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ নারায়ণগঞ্জে এসে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় সভা করেছেন এবং এ বিষয়ে সকলকে অবহিত করেছেন।
এদিকে দলীয় এই নির্দেশনা অমান্যের অভিযোগ উঠেছে সাবেক এমপি পুত্র আবুল কাওসার আশার বিরুদ্ধে। চলমান উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বন্দর উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থী বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা আতাউর রহমান মুকুলের পক্ষে গণসংযোগ ও উঠান বৈঠক করেছেন আশা।
এর আগে দলীয় নির্দেশনা অমান্য করে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সরকার দলীয় প্রার্থীর পথে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেয়ার অপরাধে বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি আতাউর রহমান মুকুলকে দলের সকল পদ থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়।
বিএনপির এই বহিষ্কৃত নেতার পক্ষে গণসংযোগে অংশ নেয়া দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করার অপরাধ বলে মনে করেধ তৃণমূল নেতাকর্মীরা।
আর এই অপরাধে যদি কোনো শাস্তি দেয়া না হয় তাহলে সাধারণ নেতাকর্মীরাও ভবিষ্যতে দলীয় নির্দেশনা না মানার ব্যাপারে উৎসাহিত হবেন বলে ধারণা তৃণমূলের। তাই অবিলম্বে আবুল কাউসার আশাকে বিএনপি'র সকল পদ থেকে বহিষ্কারের দাবি করেছেন নেতাকর্মীরা।
মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীরা জানান, বিগত সময়ে সরকার বিরোধী আন্দোলন সংগ্রামে দেখা মিলেনি এমপি পুত্র আবুল কাওসার আশার। সারাদেশে বিএনপি নেতাকর্মীরা যখন রাজপথে সরকার বিরোধী আন্দোলন করেছেন তখন আবুল কাউসার আশাকে দেখা গেছে সরকারি দলের এমপি ও মেয়রদের সাথে একই মঞ্চে অনুষ্ঠান করতে।
গত বছরের ২৮ অক্টোবর পরবর্তী সময়ে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির নেতাকর্মীরা যখন মামলা হামলা উপেক্ষা করে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রতিরোধের আন্দোলনে ব্যস্ত তখন আবুল কাউসার আশা দেশ ছেড়ে বিদেশে পাড়ি জমান। সরকারবিরোধী একটি মিটিং মিছিলেও অংশ নেননি এই বিএনপি নেতা।
আর এবার দলের নির্দেশনা অমান্য করে বহিষ্কৃত নেতার পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিয়ে বিএনপিতে থাকার সকল যোগ্যতা তিনি হারিয়েছেন আর তাই আবুল কাউসার আশার বহিষ্কার এখন সময়ের দাবি বলেই মনে করে তৃণমূল।
এবিষয়ে মহানগর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কাউন্সিলর আবুল কাউসার আশা বলেন, আসলে প্রচারণায় দেখা গেছে ব্যাপরটা এরকমনা আবার মিথ্যাও না। সেদিন কুশিয়ারাতে একটা উঠান বৈঠক ছিলো আমারও ওই এলাকায় একটা কাজ ছিলো তখনই সবার সাথে দেখা হওয়াতে আমি পাঁচ মিনিটের মত ছিলাম।
আমি চলে আসছি পুরো পোগ্রামে ছিলাম না। মুকুল সাহেব আমার চাচা। পারিবারিক সম্পর্ক এটা কো কোনো ব্যাপার না। এ কারনেই কিছুক্ষন ছিলাম। এছাড়া আর কোনো প্রচারণায় যাই নাই।
এ ছাড়া আমি জানি যেহেতু আমি সিটি করপোরেশনের একজন কাউন্সিলর আবার এটা একটা আচরণ বিধিরও ব্যাপার আছে। দলীয় বাইন্ডিং আছে। ব্যাপারটা সে আসলে সেরকম না। কুশিয়ারে আমার একটা কাজ ছিলো। সেজন্য যাওয়া।
পরবর্তীতে সরাসরি নির্বাচনী প্রচারণায় থাকবেন কিনা এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখনও নির্বাচনি প্রচারণায় যাইনি। সামনের দিকে সরাসরি নির্বাচনের প্রচারণায় থাকবো কিনা এটা এখনও বলতে পারছিনা।
আজকে আবার শুনতেছি এ বিষয়ে দল নতুন সিদ্ধান্ত নিতে পারে। যদি এমন কোনো সিদ্ধান্ত আসে তাহলে ভবিষ্যতে হয়ত যেতে পারি।