নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

বৃহস্পতিবার,

২১ নভেম্বর ২০২৪

তৈমূরের পুঁজি এন্টি গাজী

নারায়ণগঞ্জ টাইমস:

প্রকাশিত:২১:৪৪, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৩

তৈমূরের পুঁজি এন্টি গাজী

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনে ক্ষমতাসীন দল্রে মনোনীত প্রার্থী গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক ও তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব তৈমূর আলম খন্দকারের মধ্যে চলছে বাহাস। প্রতীক বরাদ্দের আগেই দুই প্রার্থী একে অপরের বিরুদ্ধে বিশদাগার করছেন বক্তব্য-বিবৃতিতে। সবশেষ তৈমূর আলম খন্দকার গোলাম দস্তগীর গাজীর বাড়িতে ভুড়িভোজ ও টাকা বিতরণের একটি ভিডিও প্রকাশ করে মন্ত্রী গাজীর কঠোর সমালোচনা করেছেন। মন্ত্রী গাজীও তৈমূর আলমকে ছেড়ে কথা বলছেন না। তিনি বলেন, যার কর্মী নাই। তাকে কে ভোট দিবে? সে একলা একলা ঘুরে বেড়াচ্ছে।


এদিকে রূপগঞ্জের স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের মতে, বিএনপি থেকে বহিস্কার হওয়ার পর তৈমূর আলমের প্রতি দলের অনেক নেতাকর্মীর সফট কর্ণার ছিল। কিন্তু সরকারের টোপ গিলে তৃণমূল বিএনপিতে যোগ দেয়ায় তার প্রতি সেই সফট কর্ণার আর নেই। বরং সুযোগ পেলে নির্বাচনী মাঠে তাকে প্রতিহত করবে বিএনপির নেতাকর্মীরা। ফলে তৈমুর আলমের টার্গেট এখন গাজীর বিপক্ষের লোকজনকে কাছে ভোড়ানো। সেটা আওয়ামীলীগ হতে পারে আবার সাধারণ ভোটাররাও হতে পারে। কারণ চোখে পড়ার মতো তৃণমূল বিএনপির কোন শেঁকড় রূপগঞ্জে গজায়নি। তাই তৈমূরের ভরসা এন্টি গাজী এবং অন্যান্য ভোটাররা। এছাড়াও তৈমূর আলমের ঘনিষ্ঠজনরা মনে করছেন, শেষ মুহুর্তে দলের চাপে স্বতন্ত্র প্রার্থী শাজাহান ভুইয়া নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেও তার পরোক্ষ কার্যক্রম থাকবে মন্ত্রী গাজীর বিপক্ষে। তাছাড়া দেশের শীর্ষস্থানীয় একটি ব্যবসায়ি গ্রুপও গাজী বিপক্ষে মাঠে সক্রীয় রয়েছেন। যার কারণে তৈমূর আলমের কোন কর্মী বাহিনী না থাকলেও অনেকটা উৎফুল্ল তিনি।  তাই তৈমূর আলম এখন খুঁজে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন গত ১৫ বছরে মন্ত্রী গাজীর দ্বারা কারা নির্যাতিন হয়েছেন, কারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন, কারা সুবিধা বঞ্চিত হয়েছেন তাদের সমর্থন আদায় করা। 


আরেকটি সূত্র জানায়, রূপগঞ্জে নির্বাচন করার মতো কোন অবস্থান তৈমূরের গড়ে উঠেনি অদ্যাবধি। নির্বাচন করতে হলে যেই বিশাল কর্মী বাহিনীর প্রয়োজন সেটা তার নেই। যার কারণে প্রতিপক্ষ প্রার্থীর বিরোধী শক্তিকে তিনি পুঁজি হিসেবে ব্যবহার করতে সক্রীয় রয়েছেন। সেটা কতটুকু পারবেন তা সময়েই বলে দিবে। 


এদিকে শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) প্রেসের সামনে  গোলাম দস্তগীর গাজী তৈমূর আলমকে উদ্দেশ্য করে বলেন যার ভোট নাই, কর্মী নাই, তার বিরুদ্ধে কি কথা বলবো। বিএনপির লোকেরা তাকে ভোট দিবে না। বিএনপির লোকেরা বলছে বহিস্কৃত লোককে আমরা বিএনিপর মনে করি না। আর আওয়ামীলীগ তো তাকে ভোট দিবেই না। তাহলে কোথা থেকে তার ভোট আসবে কোথা থেকে কর্মী আসবে। আসলে তার (তৈমূর) কোন কর্মী নাই। কর্মী থাকলে তো তার কর্মীকে বাধা দিবে। সে নিজে একলা একলা ঘুরে বেড়ান। ৮/১০ লোক নিয়ে ভোট চেয়া বেড়াচ্ছেন। যা কোন ভোট নাই তার বিরুদ্ধে মানুষ কেনো কথা বলবে? মাত্র একমাস হলো তারা একটা সংগঠন করছে। কর্মী বানাতে তো ২০ বছর লাগবে। যাদের কর্মী নাই তারা কিভাবে মাঠে আসবে? তিনি একলা একলাই ঘুরে বেড়াচ্ছে।


একই দিন তৈমূর আলম খন্দকারও প্রেসের সামনে বলেন, সরকার দলীয় প্রার্থী গোলাম দস্তগীর গাজী রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি, স্বতন্ত্র প্রার্থী শাজাহান ভুইয়া সাধারণ সম্পাদক। রূপগঞ্জে আওয়ামীলীকে অরগানাইজ করেছে শাজাহান ভুইয়া। এটা আমরা দেখেছি। এখন ওনারা প্রেসিডেন্ট সেক্রেটারী পরস্পর মুখামুখি। এ ব্যাপারে তো আমার কিছু বলার নাই। তবে নিজেরা যখন মুখামুখি হয় তখন প্রতিপ্রক্ষেরর জন্য তো দরজাটা খেলা। সেই খোলা রাস্তাটা আমি কেনো ব্যবহার করবো না। এভাবেই তো হাটতেছি। জনগণ ব্যবহার করতেছে এই খোলা দরজাটা। মোটকথা তৈমূর আলম খন্দকার গাজী ও শাজাহান বিরোধী সেন্টিমেন্টেকে কাজে লোগানোর মিশনে রয়েছেন। তবে দিন শেষে সরকার তৈমূরকে ছাড় দিবে তো?