আগামী ১৫ জুন নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার মোগরাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় আ'লীগ জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি হাজী শাহ মোহাম্মদ সোহাগ রনিকে তৃনমুল নেতৃবৃন্দের দাবীতে নৌকার মাঝি হিসেবে মনোনয়ন দিয়ে নৌকাকে জয় যুক্ত করতে সর্বাধিক সহায়তা করার জন্য জেলা আওয়ামী লীগসহ উপজেলা আওয়ামী লীগকে নির্দেশ দিয়েছেন।
অপরদিকে কেন্দ্রীয় আ'লীগের নির্দেশ অমান্য করে দল থেকে পদত্যাগ করে আ'লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন নৌকার মনোনয়ন বঞ্চিত দুইবারের চেয়ারম্যান আরিফ মাসুদ বাবু।
এতেই শেষ নয় উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার এক সাক্ষরিত ফাইলে দেখা গেছে মোগরাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান আ'লীগের বিদ্রোহী হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী আরিফ মাসুদ বাবুর ঘনিষ্ঠ সহযোগী ১০ মামলার আসামী "রক্সি" কোনো প্রচার-প্রচারণা ছাড়া নীরবে চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন।
বিষয়টি মোগরাপাড়া ইউনিয়নবাসী অবগত হলে আসন্ন নির্বাচন সুষ্ঠু নিরপেক্ষ হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছেন।
এলাকাবাসী জানায়, মোগরাপাড়া ইউপির দমদমা গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে "রক্সি" বর্তমান চেয়ারম্যান ও আ'লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত স্বতন্ত্র প্রার্থী আরিফ মাসুদ বাবু'র ঘনিষ্ঠ সহযোগী। তার বিরুদ্ধে সোনারগাঁ থানায় সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের কারণে একাধিক মামলা এখনো চলমান রয়েছে।
আসন্ন ইউপি নির্বাচনকে অস্থিতিশীল করতে এবং বঙ্গবন্ধু ও শেখহাসিনার দেয়া নৌকাকে ডুবাতে এটি একটি ভিন্ন কৌশল। তা না হলে কেনো সে একজন স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী হয়ে তার নেতার সাথে টক্কর দিয়ে চেয়ারম্যান প্রার্থী হওয়ার জন্য মনোনয়ন জমা দিয়েছে।
এখানে আরো উল্লেখ্যযে, মোগরাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের মেয়াদ শেষ হয়েছে অনেক আগেই। সীমানা জটিলতাকে পুজি করে একটি গ্রুপ মোগরাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের কর্তৃত্ব ধরে রাখতে চেয়েছিলো। পরিষদের একজন মেম্বার মামলা দিয়ে নির্বাচন আটকে দেয়।
কিন্তু সোহাগ রনি দীর্ঘদিন আইনি লড়াই চালিয়ে সীমানা জটিলতার অবসান ঘটিয়ে মোগরাপাড়া ইউনিয়নবাসীর ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনেন। ফলে মোগরাপাড়া ইউনিয়নবাসীর মাঝে সোহাগ রনির ব্যাপক জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্য বেড়ে যায়।বিষয়টি স্থানীয় প্রভাবশালী একটি রাজনৈতিক পরিবার মেনে নিতে পারছেনা।
বিষয়টি নিয়ে নৌকার মাঝি হিসেবে মনোনীত তরুন সাবেক ছাত্রনেতা হাজী শাহ মোহাম্মদ সোহাগ রনি বলেন, আমি আওয়ামীলীগের একজন ক্ষুদ্র কর্মী। আমি তৃণমূল পর্যায় থেকে কাজ করে এসেছি। কোনো হাইব্রিড নেতা নই। নেত্রী আমাকে পর্যবেক্ষণ করেছেন আমার পরিশ্রমকে মূল্যায়ন করেছেন আমার মোগরাপাড়া ইউনিয়ন বাসীর দোয়া কবুল করেছেন তাই আমাকে নৌকার মাঝি করেছেন।
আর এই নৌকাকে ডুবাতে এলাকার একদল সন্ত্রাসীবাহিনী তোরঝোড় চালাচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় আমার পিতৃতুল্য বড় ভাই বর্তমান চেয়ারম্যান বাবু ভাই আ'লীগ থেকে পদত্যাগ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন।
শুধু তাই নয় এলাকায় প্রায় ১০ টি মামলার আসামী মাদকসম্রাট ও শীর্ষ সন্ত্রাসী "রক্সি" কার ইন্দনে আজ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পত্র জমা দিতে সাহস পায়? আমি আপনাদের কাছে প্রশ্ন রাখলাম!! আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
এদিকে মঙ্গলবার দুপুরে মোগরাপাড়া ইউনিয়নের সকল গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও উপজেলা আওয়ামীলীগের আহবায়ক কমিটিকে নিয়ে নৌকার মনোনয়ন প্রাপ্ত হাজী শাহ মোহাম্মদ সোহাগ রনি চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পত্র জমা দেন।
এসময় উপজেলা আ'লীগের আহবায়ক ও উপজেলা চেয়ারম্যান এড.সামসুল ইসলাম ভূইয়া বলেন,নেত্রী যাকে নৌকার মাঝি হিসেবে যোগ্য মনে করেছেন তাকেই দিয়েছেন। আমরা আওয়ামী রাজনীতিতে বিশ্বাসী। আমরা থানা আ'লীগ,ছাত্রলীগ,যুবলীগ,শ্রমিকলীগ সবাই মাঠে থাকবো নৌকাকে জয়যুক্ত করে ঘরে ফিরবো ইনশাআল্লাহ।
যুগ্ম-আহবায়ক ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুম বলেন, নেত্রী সোহাগকে যোগ্য মনে করে নৌকা দিয়েছে আমরা সকলে মিলে নৌকাকে জয়যুক্ত করবো।তাই সোহাগের প্রতি আগাম শুভকামনা রইলো।
উল্লেখ্য, ৮ ম ধাপে আগামী ১৫ জুন মোগরাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ইবিএমের মাধ্যমে ভোট হবে।নির্বাচনের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ১৭ মে, যাছাই বাছাই ১৯ মে, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষদিন ২৬ মে এবং প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে ২৭ মে।