চৌদ্দ দিনের কঠোর লকডাউনে বিধিনিষেধ মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছে গার্মেন্টস মালিকদের চিঠি দিয়েছেন বিকেএমইএ সভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান।
শনিবার (২৪ জুলাই) তিনি ওই চিঠি দেন। রোববার (২৫ জুলাই) চিঠির বিষয়টি নিশ্চিত করে সাংসদ সেলিম ওসমান বলেন, যেহেতু আমরা মহামারি সময় অতিক্রম করছি। এমতাবস্থায় সরকারি নির্দেশনা মানা ছাড়া এটি মোকাবিলা করার কোনো উপায় নেই। সবাইকে আহ্বান জানাবো সরকারি নির্দেশনা মেনে চলার জন্য।
চিঠিতে লেখা রয়েছে, ‘গত ১৫ মাস ধরে করোনা দুর্যোগ বিশ্বের অন্যান্য দেশের পাশাপাশি আমাদের শিল্প ও উদ্যোক্তাদের দারুন বিপর্যয়ে ফেলেছে। বিশেষ করে যারা ব্যাংক ঋণ নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করেছেন, তাদের অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়। কিন্তু এরপরও দেশের, শিল্প ও শ্রমিকের স্বার্থে আপনারা সর্বস্ব দিয়ে কারখানা চালু রেখেছেন এবং অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। আপনাদের এ অসাধারণ ত্যাগ নিঃসন্দেহে ধন্যবাদের দাবিদার। আপনার প্রতি তাই আমার অশেষ কৃতজ্ঞতা।’
‘করোনার প্রথম ধাপে লকডাউন চলাকালেও শিল্পকারখানা, ব্যাংকিং সেবা ও আমদানি-রফতানি কার্যক্রম চালু ছিল। আর এ সুযোগ নিয়ে আমরা শিল্প উদ্যোক্তারা অনেক কষ্ট করে আর্থিক ক্ষতি হবে জেনেও কারখানা চালু রেখে পণ্য রফতানি করতে পেরেছি। কিন্তু করোনার দ্বিতীয় ধাপের বর্তমান ভেরিয়েন্ট অত্যন্ত মারাত্মক। তাই সরকার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে আলোচনা করে ২৩ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত কঠোর লকডাউনের পদক্ষেপ নিয়েছে এবং শিল্পকারখানা এ লকডাউনের আওতার বাহিরে নয়। যদিও সংক্ষিপ্ত আকারে ব্যাংকিং ও অন্যান্য আমদানি-রফতানি কার্যক্রমের জন্য বন্দর সংশ্লিষ্ট সেবা প্রতিষ্ঠান খোলা থাকছে, তথাপি দেশের মানুষকে বাঁচানোর জন্য, মহামারি থেকে রক্ষা পাওয়ার ক্ষেত্রে এই কঠোর লকডাউন আর্থিক ক্ষতি হবে জেনেও কষ্ট হলেও মেনে চলতে হবে।’
‘১৪ দিনের এ লকডাউন আপনার রফতানি পরিকল্পনায় ব্যাঘাত ঘটালেও ভবিষ্যতে সুন্দরভাবে করোনামুক্ত পরিবেশে ব্যবসা পরিচালনার জন্য এ ত্যাগটুকু স্বীকার করতেই হবে। এক্ষেত্রে তৃতীয় কোনো পক্ষের পরামর্শ গ্রহণ না করে সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক লকডাউনকালীন সময়টুকু অতিবাহিত করার জন্য আপনাকে বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি। একই সঙ্গে আপনাদের ধৈর্য্য ও সহযোগিতা একান্ত ভাবে কামনা করছি।’
‘বিগত সময়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও তার সরকার আমাদের প্রণোদনা দিয়ে এ সেক্টর ও উদ্যোক্তাদের বাঁচিয়ে রাখতে সহায়তা করেছেন। বর্তমানে যে কঠিন সময় আমরা অতিবাহিত করছি, তাও সরকার অবগত। আমরা আশা করছি, এ চলতি লকডাউন শেষ হলে, আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে পুনরায় প্রণোদনা সহযোগিতার জন্য আবেদন জানাবো। আমি বিশ্বাস করি, বিগত সময়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের জন্য যেভাবে সহযোগিতার হাত প্রসারিত করেছিলেন, তেমনিভাবে তিনি আগামীতেও আমাদের জন্য এভাবে এগিয়ে আসবেন। তাই এই লকডাউন চলাকালীন সময়টুকু সরকারের বিধিনিষেধ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে মেনে চলার জন্য আপনাদের সকলের প্রতি সবিনয়ে অনুরোধ জানাচ্ছি।’