শীতের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় নারায়ণগঞ্জ শহরের ফুটপাতে জমে উঠেছে গরম কাপড় বিক্রি। শপিংমলের থেকে দামে কম হওয়ায় সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ ভীর করছেন ফুটপাতে। আর ফুটপাতের দোকানগুলো দরিদ্র মানুষের জন্য বাড়তি আয়ের সুযোগ সৃষ্টি করেছে।
সরজমিনে নারায়ণগঞ্জ নগরীর বিভিন্ন স্থানে ঘুরে দেখা যায়, ফুটপাথ থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিপণি-বিতানে ব্যবসায়ীরা শীতের পোশাক বিক্রি শুরু করেছেন। চাষাড়া হকার্স মার্কেট, সলিমুল্লাহ রোড, বঙ্গবন্ধু রোড, কালীরবাজারের শায়েস্তা খাঁ রোডসহ নগরীর বিভিন্ন প্রান্তে সড়কের পাশে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা পোশাকের পসরা বসিয়েছেন।
ছোট বাচ্চা, তরুণ-তরুণী, মুরুব্বিসহ প্রায় সব বয়সিদের জন্য মিলছে গরম কাপড়। নতুন, পুরাতন উভয় ধরনের পোশাক মিলছে এইখানে। রঙিন সোয়েটার, ডেনিম-লেদার জ্যাকেট, উলের হাত মোজা পায়ের মোজা, কানটুপি, রশালসহ নানান পোশাক কিনছেন ক্রেতারা।
প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ফুটপাতের দোকানগুলোতে নিম্ন আয়ের মানুষের পাশাপাশি উচ্চবিত্তরাও এসব দোকানে ভিড় জমাচ্ছেন। বিশেষ করে মৌসুম ভিত্তিক দোকানগুলোতে শীতবস্র বিক্রি চলছে পুরোদমে। শীত কম থাকায় ব্যবসা কম হচ্ছে। শীত পড়লে সামনে আরো ভালো ব্যবসা হবে এরকম প্রত্যাশা দোকানিদের।
ফুটপাতের এসব দোকানগুলোতে একটি সোয়েটারের দাম ১৫০ থেকে ৩০০ টাকা, বাচ্চাদের কাপড় ৫০ থেকে শুরু করে ২০০ টাকা পর্যন্ত, বাচ্চাদের ফুলহাতা গেঞ্জি বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত। আবার ছেলেদের হুডিও পাওয়া যাচ্ছে ২৫০ টাকা থেকে ৪০০ টাকার মধ্যে। সাধ্যের মধ্যে থেকেই পছন্দের শীতের পোশাকটি বেছে নিচ্ছেন অনেকে।
চাষাড়া হকার্স মার্কেটের শীতের কাপড় এর একজন বিক্রেতা জানান, মেঘলা আকাশ শীত পড়েছে বেচাকেনাও। তিনি ছোট-বড় সকলের শীতের পোশাক বিক্রি করছেন। বিশেষ করে সোয়েটার, চাদর, ফুলহাতা গেঞ্জি, বাচ্চাদের শীতের পোশাক সহ নানা ধরণের পোশাক। তবে বড়দের তুলনায় বাচ্চাদের পোশাক তুলনামূলকভাবে বেশি বিক্রি হচ্ছে। দুই/একদিন পরে বিক্রি আরো বাড়বে বলেও জানান তিনি।
বঙ্গবন্ধু সড়কে ফুটপাতের খোলা আকাশের নীচে মেঝেতে জামা কাপড় রেখে বিক্রি করছেন আতিকুর রহমান। তিনি জানান, এবার শীতের মৌসুম আসতেই মানুষজন কাপড় কিনছেন। শিল্পাঞ্চল এলাকা হওয়াতে মাসের ০৭-১২ এর মধ্যে বেচা-বিক্রি বেশি হয়।
কারণ এই সময়টাতেই পোশাক শ্রমিকরা বেতন পেয়ে থাকেন। পোশাক শ্রমিকরাই তাদের অধিকাংশ ক্রেতা। এছাড়াও এখানে দাম কম হওয়ায় প্রায় সব রকমের মানুষজন এখান থেকে শীতের পোশাক কিনে থাকেন।
ফুটপাত থেকে মেয়ের জন্য শীতের পোশাক কিনতে এসেছেন আলেয়া বেগম নামের এক নারী তার বাড়ি সোনারগাঁও । তিনি বলেন,বেশ কিছুদিন ধরে শীত শুরু হয়েছে। বাচ্চাদের এখনো শীতের জামা কিনে দেয়নি। লোকমুখে শুনে নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাড়া হকার্স ও ফুটপাতে এসেছি।
এখানে নাকি কম দামে শীতের পোশাক পাওয়া যায়। মেয়ের জন্য একটা কিনেও ফেলেছি। তবে শপিং মল গুলোতে কাপড়ের দাম অনেকটা বেশি, তাই বাধ্য হয়ে ফুটপাত থেকেই কিনছি বলেও তিনি যোগ করেন।
শীতের পোশাক কিনতে এসেছেন অপূর্ব আহমেদ নামের একজন। তিনি জানান, শপিংমলগুলোতে কাপড়ের দাম বেশি হওয়ায় তিনি ফুটপাতে এসেছেন নিজের জন্য একটা সোয়েটার কিনতে। এখানে কম দামে শীতের কাপড় পাওয়া যায়। একটা কিনেছি।