ঘুষ, দুর্নীতি, দখলদারিত্ব, লুটপাট, বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড, সামাজিক অস্থিরতা ও লাগামহীন দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি নারায়ণগঞ্জ শহর কমিটির উদ্যোগে গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে এ গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি সিপিবি নারায়ণগঞ্জ শহর কমিটির সভাপতি কমরেড আঃ হাই শরীফ। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হাফিজুল ইসলাম, জেলা কমিটির সদস্য দুলাল সাহা, বিমল কান্তি দাস, শাহানারা বেগম, সুজয় রায় চৌধুরী বিকু, ইকবাল হোসেন, শোভা সাহা, শিশির চক্রবর্তী প্রমূখ।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, দেশে বাজার সিন্ডিকেটের অবাধ লুটপাট চলছে- লাগামহীনভাবে দ্রব্যমূল্য বেড়ে চলেছে কিন্তু সরকার এর বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। দেশের বিভিন্ন জেলায় অসংখ্য মাজারে হামলা ও ভাংচুর হয়েছে, বিভিন্ন জেলায় প্রতিমা ভাংচুর হয়েছে, সংখ্যালঘু সম্প্রদায় এবং পাহাড়ি উপজাতীয়দের ওপর নানা প্রকার সাম্প্রদায়িক হামলা ও অত্যাচার করা হয়েছে, বেশ কয়েকজন পাহাড়ি ছাত্রকে হত্যা করা হয়েছে কিন্তু এর বিরুদ্ধে কোন কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
স্কুলের শিক্ষকদের ওপর এখনো হামলা করা হচ্ছে। শ্রমিকরা তাদের ন্যায়সংগত দাবি করায় তাদের ওপর গুলি চালানো হয়েছে, হত্যা করা হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্খার কোন বাস্তবায়ন আমরা দেখছি না। অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে দেশ গভীর সংকটের দিকে যাচ্ছে। আমরা ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের আকাংখার বাস্তবায়ন চাই।
আমরা দাবি করছি, অবিলম্বে বাজার সিন্ডিকেট ভেঙ্গে দিতে হবে, দ্রব্যমূল্য কমাতে হবে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক করতে হবে। শ্রমিকদের দাবি মেনে নিতে হবে। মাজার, মন্দির, বাড়িঘর ও সংস্কৃতির ওপর আগ্রাসন বন্ধ করতে হবে। স্বৈরতন্ত্র ও দখলদারিত্বের পরিবর্তে দেশ ও রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক সংস্কার করতে হবে। কোন প্রকার সাম্প্রদায়িক রাজনীতি, সাম্প্রদায়িক সংস্কৃতি জনগণের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হলে তা মেনে নেওয়া হবে না।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, ৫২ এর ভাষা আন্দোলন, ৬২ এর শিক্ষা আন্দোলন, ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান ও ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধকে বিতর্কিত করার চেষ্টা হলে তা বামপন্থীরা রুখে দাঁড়াবে। সংবিধানের অগণতান্ত্রিক কোন কোন ধারা বাতিল করা যেতে পারে কিন্তু নতুন করে সংবিধান লেখার কোন প্রশ্নই ওঠে না।
আমরা নির্বাচন পদ্ধতির সংস্কারের দাবি অনেক আগে থেকেই বলে আসছি। আমরা চাই সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতির নির্বাচন ব্যবস্থা। জাতীয় সংগীত ও জাতীয় পতাকা নিয়ে যারা বিতর্ক তোলার চেষ্টা করছেন আমরা দেশের সকল বামপন্থীরা তার তীব্র নিন্দা জানাই।