নারয়ণগঞ্জ সদর উপজেলার গোগনগর ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের জনপ্রিয় রুবেল মেম্বারকে র্যাব ১১ গ্রেপ্তার করায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতা ও সর্বস্তরের জনগণ মানববন্ধন করেছে। মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) সকালে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে ছাত্র জনতা ও সর্বস্তরের জনগনের আয়োজনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধন শেষে রুবেল মেম্বারের মুক্তি এবং তার নাম প্রত্যাহার চেয়ে জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হক ও জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদারের নিকট বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের ছাত্র জনতা মিলে স্বারকলিপি প্রদান করা করেন।
এসময় মানবনবন্ধনে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের তোলারাম কলেজের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা জানি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এবং আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বার বার বলে আসছেন তদন্ত ছাড়া নিহত হওয়া মামলায় কাউকে গ্রেপ্তার করা হবে না। এমনকি কাউকে হয়রানি করা হবে না। কিন্তু নারায়ণগঞ্জে আমরা ভিন্ন চিত্র দেখতে পেলাম।
প্রশাসনের কিছু অতিউৎসাহী লোক ফায়দা নিয়ে ২৯ সেপ্টেম্বর রুবেল মেম্বারকে র্যাব ১১ সদস্যরা আটক করার পরে ৩ সেপ্টেম্বর সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় হওয়া বাদী নাজমুল হকের মামলায় গ্রেপ্তার দেখান। আমরা তার তীব্র নিন্দা এবং নিঃশর্ত মুক্তি চাই।
আন্দোলনের সময় নারায়ণগঞ্জের কারা ছাত্রদের উপর গুলি চালিয়েছে তার ভিড্ওি ভাইরাল হওয়ার পরেও প্রশাসন তাদের বেপারে নিরব রয়েছেন। তারা কিসের বিনিময়ে রুবেল মেম্বারকে গ্রেপ্তার করলেন আমরা জানতে চাই। অথচ তিনি ইউনিয়ন পরিষদে বসে মানুষের সেবা দিচ্ছেন সেখান থেকে তাকে আটক করে নিয়ে আসে প্রশাসনের অসাধু কিছু কর্তারা।
এসময় বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনরত রনদা প্রসাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, রুবেল মেম্বার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে আমাদেরকে খাবার,পানি সহ বিভিন্ন ভাবে পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করেছেন। অথচ কিছু কুচক্রি মহল ষরযন্ত্র মুলক ভাবে তাকে মিথ্যা মামলায় ফাসিয়ে গোগনগরের ত্রাস তৈরী করতে চাচ্ছে।
আর দৃস্কৃতি ও ষরযন্ত্রকারীদের এখনো প্রশাসনে থাকা আওয়ামী লীগের দোসররা শেল্টার দিচ্ছে। আমরা রুবেল মেম্বারের নিঃশর্ত মুক্তি চাই। তাকে মুক্তি দিতে হবে। যারা আন্দোলনে নিহত হয়েছে তাদের প্রকৃত বিচার হোক আমরাও চাই কিন্তু কোন নির্দোষ ব্যক্তিকে ফাসিয়ে তাকে হয়রানি করবে, গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে দিবে আমরা তা চাই না।
আর এজন্য স্বৈরাচারদের শোষন থেকে মুক্তি হওয়ার জন্য আমরা ছাত্র জনতা আন্দোলন করেছি। রুবেল মেম্বারকে ষরযন্ত্র করে ফাসানো হয় বলে আজকে আমরা তার প্রতিবাদে রাজপথে ্পান্দোলনে নেমেছি। সেই সাথে আন্দোলনের মাধ্যমে তাকে মুক্তি করে নিয়ে আসবো।
গোগনগর ইউনিয়নের সচেতন নাগরিক প্রবীন ব্যক্তি শাহাবুদ্দিন জানান, গোগনগর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে মো. রুবেল মেম্বার দলমত ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকলের ভালোবসায় মানুষের ভোটের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত হন। এলাকার ভালো মানুষ হিসেবে পরিচিতি থাকায় তাকে মানুষে ভোট দিয়ে মেম্বার নির্বাচিত করেছে।
সে সততার সাথে ইউনিয়ন পরিষদে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। তার নামে কোন অনিয়মের অভিযোগ নেই। কিন্তু প্রশাসনের র্যাব ১১ এর কিছু অতি উৎসাহী লোকেরা ফায়দা নিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করেন।
এছাড়া বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব প্রদানকারী একাধিক শিক্ষার্থীবৃন্দ মানববন্ধনে বলেন, রুবেল মেম্বার আমাদেরকে বিভিন্ন ভাবে সহযোগিতা করেছেন। আমাদের জানামতে রুবেল মেম্বার ও আনসার আওয়ামী লীগ বিএনপি সহ সকল দলমত রাজনীতির বাইরে গিয়ে মানুষের জন্য কাজ করেন। এমনকি তারা কোন রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত নেই।
তাছাড়া কোন রাজনৈতিক দলে তাদের কোন পদ পদবী নেই এবং কখনো ছিলও না। বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন চলাকালিন সময়ে জুলাই এবং ৫ আগষ্ট পর্যন্ত আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মাঝে খাবার, পানি সহ বিভিন্ন পরমার্শ দিয়ে সহযোগিতা করে পাশে এসে দাড়িয়েছেন তিনি। যার স্বাক্ষী হিসেবে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব প্রদানকারী আমরা শিক্ষার্থীবৃন্দ।
গত ২৯ সেপ্টেম্ব দুপুর ১ টায় গোগনগর ইউনিয়ন পরিষদে কার্যক্রম চলাকালিন সময়ে নারায়ণগঞ্জ র্যাব ১১ এর আইনশৃঙ্খলা বাহিনির লোকেরা রুবেল মেম্বারকে গ্রেপ্তার করায় আমরা তার তীব্র নিন্দ্রা প্রকাশ করছি। একই সাথে তার নামে হওয়া মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং মামলা থেকে তার নাম বাদ দেয়ার জন্য আমরা দাবী জানাচ্ছি।
আমাদের জানামতে রুবেল মেম্বার ও আনসারকে ষড়যন্ত্র মুলক ভাবে জায়গা জমির বিরোধের কারনে মিথ্যা মামলায় ফাসানো হয়েছে। আমরা বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্বপ্রদানকারী শিক্ষার্থীবৃন্দ এবং গোগনগর ইউনিয়ন এলাকার সর্বস্তরের জনগণ রুবেল মেম্বারের মুক্তির দাবী জানাই। একই সাথে প্রশাসনের কাছে দাবী জানাই সঠিক তদন্তের মাধ্যমে তাদেরকে যেন এই মামলা থেকে প্রত্যহার করে দেয়া হয়।
এই মামলার বাদী নাজমুল হক বলেন, রুবেল মেম্বারকে আমি চিনি না। তার সাথে আমার কোন সম্পর্ক নাই। মামলায় ১৫ নং আসামী করে যার নাম দিছেন তাকে চিনেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি মামলার বাদি না।
আবার সাথে সাথেই বলেন আমি আওয়ামী লীগের যারা বড় নেতা তাদের নামে মামলা দিছি। রুবেল মেম্বারকে কেন আসামী করা হয়েছে আমি তা জানি না। নারায়ণগঞ্জ সিদ্ধিরগঞ্জের শফিকুল হয়ত তার নাম দিয়ে দিছে। আওয়ামী লীগের সাথে সে জরিত না হলে ছাড়া পেয়ে যাবে।