ফতুল্লার জনী টেক্সটাইল নামের কারখানা অবৈধভাবে লে অফের (বন্ধ ঘোষণা) প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে কারখানাটির শ্রমিকরা।
সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শহরের চাষাঢ়াস্থ কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন উপ মহা পরিদর্শকের কার্যালয়ের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়ে প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে ফতুল্লার চাঁদমারীস্থ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়।
পরে বিকেল পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান করে বিক্ষোভ দেখায় শ্রমিকরা। এসময় শ্রমিকরা মালিককে দ্রুত গ্রেফতার, অবৈধভাবে লে অফ প্রত্যাহার এবং শ্রমিকদের বকেয়া বেতন ভাতা দ্রুত পরিশোধের দাবি জানান।
বাংলাদেশ টেক্সটাইল গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান ইসমাইল জানান, জনী টেক্সটাইলে ৬২৮ জন শ্রমিক কর্মরত রয়েছে। গত ২২ সেপ্টেম্বর কারখানাটির মালিকপক্ষ কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন উপ মহা পরিদর্শকের কার্যালয়ে একটি চিঠি নিয়ে আসে যাতে উল্লেখ করা হয়েছিল তারা ১ সেপ্টেম্বর থেকে কারখানটি লে অফ করেছে।
অথচ এটি সম্পূর্ণরূপে অবৈধ। যা কারখানাটির শ্রমিকরা মানেনি। কলকারখানা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারাও মানেনি। পরে শ্রমিকরা এ বিষয়ে কলকারখানা অধিদপ্তরের উপ মহা পরিদর্শক ও জেলা প্রশাসকের বরাবরে অভিযোগ দাখিল করে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকও কলকারখানা কর্তৃপক্ষকে দ্রুত অভিযোগ দাখিলের নির্দেশনা দেন। এরপর সোমবার ৩০ সেপ্টেম্বর কলকারখানা অধিদপ্তর এ বিষয়ে শুনানীতে উপস্থিত থাকার জন্য প্রতিষ্ঠানটির মালিকপক্ষ ও শ্রমিকপক্ষকে নোটিশ প্রদান করেন। কিন্তু ওই শুনানীতে মালিকপক্ষ না এসে তারা আবারো অবৈধভাবে লে অফ ঘোষণার চেষ্টা করে।
মালিকপক্ষের হয়ে একজন প্রতিনিধি সোমবার অপর একটি কাগজে ২২ সেপ্টেম্বর থেকে লে অফ করা হয়েছে সেটা লিখে আনে। এটিও সম্পূর্ণরূপে অবৈধ। মালিকপক্ষ শ্রম আইন মানে নাই, জেলা প্রশাসকের নির্দেশনাও মানে নাই। এতে করে কারখানাটির শ্রমিকরা বিক্ষুব্দ হয়ে উঠে।
তারা বিক্ষোভ মিছিল বের করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে অবস্থান নিয়েছে। শ্রমিকদের ৩টি দাবি হচ্ছে, মালিককে দ্রুত গ্রেফতার করতে হবে। অবৈধভাবে লে অফ প্রত্যাহার করতে হবে এবং শ্রমিকদের বকেয়া বেতন ভাতা পরিশোধ করতে হবে।
কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন উপ মহা পরিদর্শক রাজীব চন্দ্র দাস জানান, কারখানাটির কর্তৃপক্ষ গত ২২ সেপ্টেম্বর একটি চিঠি নিয়ে আসে যাতে ১ সেপ্টেম্বর থেকে কারখানাটি লে অফ করা হয়েছে বলে উল্লেখ ছিল। যা শ্রম আইনের বিধি বর্হিভূত। শ্রমিকদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সোমবার তাদেরকে শুনানীতে ডাকা হলে মালিকপক্ষ কেউ আসেনি।
তারা একজন আইনজীবীর মাধ্যমে আবারো নিয়ম বর্হিভূতভাবে লে অফের চিঠি নিয়ে এসেছে। এতে শ্রমিকরা বিক্ষুব্দ হয়ে উঠে। এ বিষয়ে মঙ্গলবার আবারো মালিকপক্ষ ও শ্রমিকদের নিয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।