৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নারায়ণগঞ্জের হিন্দু সম্প্রদায়কে আগলে রেখেছেন পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ, সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নিয়ে তাদের বিপদে আপদে পাশে দাঁড়িয়েছেন।
যার ফলে নারায়ণগঞ্জের হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে আতঙ্ক কেটে গিয়ে স্বস্তি ফিরে এসেছে। এখন তারা জাঁকজমকপূর্ণভাবে শারদীয় দুর্গোৎসব পালনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, দেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পরে নারায়ণগঞ্জের হিন্দু সম্প্রদায়ের মাঝে চরম আতংক বিরাজ করছিলো। তারা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছিলেন, এমনকি বাড়ি ঘরে থাকতেও ভয় পাচ্ছিলেন। তাদের মন্দির, আখড়া, মঠগুলো নিয়েও তারা চিন্তিত ছিলো।
এমন চরম আতঙ্কিত সময়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের মন থেকে আতঙ্ক দূর করতে তাদের পাশে এসে দাঁড়ায় নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ। তারা নারায়ণগঞ্জের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর নেতৃবৃন্দের সাথে দেখা করেন এবং সবাইকে সাথে নিয়ে বিভিন্ন মন্দিরে গিয়ে ভক্তদেরকে আশ্বস্ত করেন।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি শংকর কুমার দে, সাধারণ সম্পাদক শিখন সরকার শিপন, মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বিষ্ণুপদ সাহা, সাধারণ সম্পাদক সুশীল দাস সহসভাপতি সাংবাদিক উত্তম সাহা সহ নেতৃবৃন্দরা হিন্দু সম্প্রদায়ের সাধারণ মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদেরকে অভয় দেন এবং আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য সাহস প্রদান করেন।
নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলা, থানা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে নেতৃবৃন্দের সাথে সমন্বয় করে সকলকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে থাকার জন্য আহ্বান জানান পূজা পরিষদ নেতৃবৃন্দ। এমনকি নারায়ণগঞ্জ বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, হেফাজতে ইসলাম, ইসলামী আন্দোলনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দের সাথে দফায় দফায় বৈঠক করে হিন্দু সম্প্রদায়ের পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ জানান।
নারায়ণগঞ্জের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ তাদের আহবানে সাড়া দিয়ে নারায়ণগঞ্জের হিন্দু সম্প্রদায়ের পাশে এসে দাঁড়ায়। তাদের ধর্মীয় উপাসনালয় গুলো নারায়ণগঞ্জের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দরা পাহারার ব্যবস্থা করেন যাতে করে কোনরকম অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয়। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় নারায়ণগঞ্জের সাম্প্রদায়িক সহিংসতার কোন ঘটনা ঘটেনি।
সকল ধর্মের মানুষ অতীতের মত মিলেমিশে বসবাস করছে প্রাচ্যের ডান্ডি নারায়ণগঞ্জে। আর এসব কিছু সম্ভব হয়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর প্রজা উদযাপন পরিষদ নেতৃবৃন্দের অক্লান্ত পরিশ্রম আর সাংগঠনিক দক্ষতার কারণে- এমনটাই জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জের হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন।
তৃণমূল জানায়, ৫ আগস্ট পরবর্তী আতঙ্ক কাটিয়ে নারায়ণগঞ্জের হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষজন জন্মাষ্টমী উৎসব পালন করেছে, রথযাত্রা পালন করেছে এখন হিন্দু সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা পালনের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
তাদের মন থেকে সকল ডর ভয় আর আতঙ্ক কেটে গেছে। এখন তারা সকলের সাথে মিলেমিশে বসবাস করতে পারছে। আর এজন্য তারা নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে।