মেধাবী শিক্ষার্থী তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যায় গ্রেফতার ৪ আসামীর মধ্যে দুইজন নির্দোষ দাবী করে সংবাদ সম্মেলন করেছে তাদের পরিবার। গ্রেফতারকৃত ব্যবসায়ী সাফায়েত হোসেন শিপন ও ব্যবসায়ী মামুন মিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে পৃথক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানায় তারা।
সংবাদ সম্মেলন ব্যবসায়ী সাফায়েত হোসেন শিপনের স্ত্রী ফারজানা আহমেদ রিংকি বলেন, শিপন নামে আজমেরী ওসমানের একজন গাড়িচালক ছিলো, সেই নামের সাথে মিল থাকায় র্যাব আমার স্বামীকে গ্রেফতার করেছে। এই গ্রেফতারের ঘটনায় আমাদের পারিবারিক সুনাম ক্ষুন্ন হয়েছে এবং আমরা হয়ারনির শিকার হচ্ছি। কি উদ্দেশ্যে কিসের ভিত্তিতে শিপনকে গ্রেফতার করা হলো তা আমাদের কাছে এখনও পরিস্কার না। আমরা শিপনকে গ্রেফতারের ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ জানাই এবং অবিলম্বে তার মুক্তি দাবি করছি।
এছাড়া, মামুন মিয়ার স্ত্রী রাফিয়া সুলতানা সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, ত্বকী হত্যার পর ২০১৪ সালের মার্চে একটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে উল্লেখ করা হয়েছিলো মামুন মিয়া হচ্ছেন আজমেরী ওসমানের খালাতো বোন জামাই। সেই মামুন মিয়াকে আড়াল করতেই আমার স্বামী মামুন মিয়া, যিনি একজন ঠিকাদার ও ব্যবসায়ী তাকে গ্রেফতার করেছে। আমরা তার মুক্তি দাবি করছি। তার সাথে আজমেরী ওসমান সহ ওসমান পরিবারের কোনো সখ্যতা কখনোই ছিলো না বলেও দাবি করেন তিনি। এসময় উপস্থিত ছিলেন মামুন মিয়ার ৫ম শ্রেণী পড়ুয়া কণ্যা সন্তান জান্নাতুল ফেরদৌস ও তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র পুত্র সন্তান আব্দুল্লাহ আল রাফি।
একইসাথে তারা প্রকৃত আসামীদের গ্রেফতারের দাবি জানান এবং নিরাপরাধ কেউ যাতে হয়ারানির শিকার না হয় সেদিকেও লক্ষ রাখতে বলেন।
এর আগে, গত সোম ও মঙ্গলবার র্যাবের হাতে গ্রেফতার হয় মো. শাফায়েত হোসেন শিপন, মামুন মিয়া ও মো. কাজল হাওলাদার। তাদেরকে আদালতে হাজির করার পর তাদের ৬ দিনের রিমান্ড হয়েছে।
র্যাব জানায়, ৮ সেপ্টেম্বর শাফায়েত হোসেন শিপনকে নারায়ণগঞ্জের জেলার চাষাড়া এলাকা থেকে, মামুন মিয়াকে কালিবাজার এলাকা থেকে এবং কাজল হাওলাদারকে ঢাকার ধানমন্ডি এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের ১০ দিন করে রিমান্ড আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। আদালত প্রত্যেক আসামির ছয়দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ৬ মার্চ বিকেলে বঙ্গবন্ধু সড়ক থেকে তানভীর মুহাম্মদ ত্বকীকে অপহরণ করে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করা হয়। একদিন পর ৮ মার্চ শীতলক্ষ্যায় মেলে ত্বকীর মরদেহ। ত্বকী হত্যার সঙ্গে ওসমান পরিবারের সদস্যরা জড়িত আছেন বলে শুরু থেকে অভিযোগ করে আসছে তার পরিবার। শুরুতে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানা তদন্ত করলেও উচ্চ আদালতের নির্দেশে ত্বকী হত্যা মামলার তদন্ত র্যাব-১১ এর কাছে অর্পণ করা হয়। তবে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও এই হত্যার তদন্ত শেষ করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিতে পারেনি তদন্তকারী সংস্থা।