ধর্ষণের অভিযোগ এনে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র ও ১৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল করিম বাবুর বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তিনি।
শনিবার (১৮ মে) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এসময় তার স্ত্রী ফারহানা করিম ও ছেলে রায়হান করিম রিয়েন উপস্থিত ছিলেন।।
সংবাদ সম্মেলনে কাউন্সিলর আব্দুল করিম বাবু বলেন, দৈনিক সময়ের নারায়ণগঞ্জ পত্রিকায় গত ১৪ মে প্রকাশিত ‘এবার ধর্ষণ মামলায় ফাঁসতে পারেন প্যানেল মেয়র বাবু’ শিরোনামে যে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে তা ভিত্তিহীন, বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত।
একটি স্বার্থান্বেষী মহলের প্ররোচনায় এ মিথ্যা কাল্পনিক গল্প সাজিয়ে সংবাদের অবতারণা করা হয়েছে। সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার লক্ষ্যে পত্রিকাটিতে আমাকে ও আমার সন্তানকে জড়িয়ে এ ধরনের একটি কুরুচিপূর্ণ মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করেছে।
প্রককাশিত সংবাদে উল্লেখ করা হয়েছে ধর্ষিতা নারী পুলিশ সদর দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছেন, এ বিষয়ে আব্দুল করিম বাবু বলেন, যে মেয়েটি ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে সংবাদে উল্লেখ করা হয়েছে, তার সাথে আমার ও আমার পরিবারের কথা হয়েছে গতকালও (শুক্রবার)।
মেয়েটি আমাদের বলেছে, এ ধরনের কোনো অভিযোগ আমি কখনোই করিনি, কেননা এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি।
এ বিষয়ে ওই মেয়েটি নাকি সময়ের নারায়ণগঞ্জ পত্রিকায় গিয়েছিলো এবং সেই পত্রিকায় মেয়েটির পক্ষ থেকে প্রতিবাদও পাঠানো হয়েছে। যা আজ শনিবার সময়ের নারায়ণগঞ্জ পত্রিকায় ছাপাও হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, দৈনিক সংবাদের অনলাইন থেকে মিথ্যা সংবাদটি তারা সরিয়ে নিয়েছে। কিন্তু আমি ওই সংবাদের স্ক্রীন শট রেখে দিয়েছি। একটি জাতীয় পত্রিকা কিভাবে যাচাই-বাছাই না করে এমন মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করলো, এটা আমার বোধগম্য নয়।
কাউন্সিলর বাবু বলেন, সাংবাদিকরা সমাজের আয়না, সমাজের বিবেক। কিন্তু কিছু হলুদ সাংবাদিকদের কারণে প্রথিতযশা ও মূল ধারার সাংবাদিকদের কথা শুনতে হয়। সাংবাদিকতার কোন ইথিক্সের বলে সময়ের নারায়ণগঞ্জ পত্রিকা এ ধরনের ভুয়া একটি সংবাদ প্রকাশ করলো, তা আমি জানতে চাই। রাজনীতির বাইরেও আমাদের জীবন আছে, আমাদের পরিবার আছে।
এ ধরনের মিথ্যা সংবাদের কারণে আমাদের বাবা-ছেলের আত্মহত্যা করা ছাড়া আর কোনো পথ ছিলো না। তারপরও সত্য উন্মোচনের লক্ষ্যে আমি এই সংবাদ সম্মেলন করছি। আপনাদের কাছে তথা গণমাধ্যমকর্মীদের কাছেই আমি এর বিচার দিলাম।
এ বিষয়ে আমি আইনী লড়াই লড়বো। প্রয়োজনে আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার আরজি নিয়ে যাবো।
সংবাদ সম্মেলনে আব্দুল করিম বাবুর স্ত্রী ফারহানা করিম বলেন, যিনি ধর্ষণের শিকার হয়েছিলো বলে ওই পত্রিকার সংবাদে উল্লেখ করা হয়েছে, সেই নারীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনিও তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি আমাদের বলেছেন, এ ধরনের কোনো ঘটনাই ঘটেনি।
গতকাল (শুক্রবার) আমি ও আমার স্বামী ওই পত্রিকা অফিসে গিয়েছি, আমরা বলেছি, কিভাবে একটি নারী সম্পর্কে না জেনে এভাবে একটি মিথ্যা নিউজ করলেন আপনারা। তারা কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি।
তারা আজ শনিবার আমার একটি প্রতিবাদ ছেপেছে। আমি ওই সকল হলুদ সাংবাদিকদের নামে ইতিমধ্যেই সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা করেছি।
ফারহানা করিম আরও বলেন, আমি সময়ের নারায়ণগঞ্জ পত্রিকার সংবাদের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা জানাই। তারা এই অভিযোগ কিভাবে পেল? তারা আমার স্বামী ও বাচ্চা ছেলের নামে মিথ্যা সংবাদ দিয়েছে। তারা আমার ছেলে সম্পর্কে কি জানে? নিউজ করেছে ছবি দিয়ে। প্রতিবাদ ছাপিয়েছে ছবি ছাড়া।
তাদের উচিৎ ছিল যেভাবে নিউজ ছাপিয়েছে সেভাবেই প্রতিবাদটা ছাপানো। তারা একটা সরি বলতে পারতো। সরি বললে কি মানুষ ছোট হয়ে যায়? এখন যদি ওনার নামে কেস করে দেই। সাংবাদিক মানুষকে অনেক উচু লেবেলে নেয়। আবার অনেক নিচে নামিয়ে আনে।
তাই নিউজ করার আগে আপনারা একটু যাচাই করে নিয়েন। আমি বলেবো, আপনি যেভাবে নিউজটা করেছেন সেভাবে প্রতিবাদ ছাপান। সরি বলেন। আপনাকে সরি বলতে হবে। যেহেতু আমার ছেলেকে জড়িয়েছেন। আমি মনে করি ওনি ওনার ভুল বুঝে সরি বলতে পারেন। সরি বললে মানুষ ছোট হয় না।
সংবাদ ছেলে বাবুর ছেলে রায়হান করিম রিয়েন বলেন, মানুষের সেবা করার কারণে এবং সুধখোরদের বিরুদ্ধে কথা বলায় আমার বাবার বদনাম করার জন্য এমন মিথ্যা সংবাদ করিয়েছে।
আমরা চাই আমাদের যত ক্ষতিই হোক, হুমকি আসুক আমার বাবা যেন মানুষের সেবা করা থেকে পিছ পা না হন। এবং সমাজের সুধখোরদের বিরুদ্ধে তার কার্যক্রম চালু রাখেন।