নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাহমুদুল হক বলেছেন, যারা পেনশন স্কিমে যুক্ত হবেন, তাদেরকে বয়সকালে পরনির্ভরশীল থাকতে হবে না। তাই পরনির্ভরশীল থাকতে না চাইলে আপনারা এই পেনশন স্কিমে যুক্ত হন। যারা যুক্ত হবেন তাদেরকে নিজের ছেলেমেয়েদের উপর বা অন্য কারো উপর নির্ভর থাকতে হবে না।
বুধবার (১৭ এপ্রিল) বিকালে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা ভূমি অফিস প্রাঙ্গনে উপজেলা সর্বজনীন পেনশন সহায়তা কেন্দ্রের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
সদর উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আর উপস্থিত ছিলেন, স্থানীয় সরকারের উপ পরিচালক মৌরিন করিম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) হামিদুর রহমান, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেদারুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি আরিফ আলম দীপু, সহসভাপতি বিল্লাল হোসেন রবিন, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জীবন, বক্তাবলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ¦ শওকত আলী, আলীরটেক উনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ¦ জাকির হোসেন, কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ¦ মনিরুল আলম সেন্টু এবং গোগনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফজর আলী সহ সদর ও ফতুল্লার ভূমি অফিস এবং ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সকল কর্মকর্তা কর্মচারীবৃন্দ।
জেলা প্রশাসক বলেন, সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ৬০ বছর আগ পর্যন্ত বেতন পায় আর যখন অবসরে যায় তখন মাসিক পেনশন পায়। তিনি মারা গেলে তার নমিনী পায়। কিন্তু সাধারণ মানুষের আক্ষেপের একটা জায়গা থাকে। পরিবারের প্রয়োজনে কোন না কোন কাজ করতে করতে একজন মানুষের বয়স যখন ৬০, ৬৫,৭০ বছর বয়স হয়ে যায় তখন এক ধরনের নির্ভরতা এসে যায় ছেলে-মেয়েদের উপর বা অন্যদের উপর। ওষুধ কেনার টাকা নাই, ভালো কিছু খেতে চাইলে সেটার টাকা নাই। এমনও হয় আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় অনেককে বৃদ্ধাশ্রমে গিয়ে আশ্রয় নিতে হয়। এই মানুষগুলোর কথা চিন্তা করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সার্বজনীন পেনশন স্কিম কার্যক্রম চালু করেছেন।
এতে সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অবসরে গেলে যেভাবে পেনশন পাবে সেভাবে আপনারাও পেনশন পাবেন। তাই সরকারের এই মহৎ উদ্যোগে আপনারা অংশ নিয়ে প্রত্যেকে নিজ নিজ জীবনকে নিরাপদ করতে পারবেন বলে আমি বিশ^াস করি। আর এই পেনশন কর্মসূচিতে যারা অংশ নিতে আগ্রহী তাদেরকে জেলা প্রশাসন, উপজেলর প্রশাসন, ইউনিয়ন পরিষদ সহ বিভিন্ন ব্যাংক সর্বাত্বক সহায়তা করবে। অনেকেই জানেন না কিভাবে কোথায় পেনশন স্কিম করতে হয়। সাধারণ মানুষকে সেটা জানানোর জন্যই আজকে আমরা সর্বজনীন পেনশন সহায়তা কেন্দ্রের উদ্বোধন করছি।
তিনি আরও বলেন, আমাদের দায়িত্ব হলো জনগণকে জানানো যে সরকারের পক্ষ থেকে এরকম পেনশন স্কিম কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। সোনালী ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, সিটি ব্যাংক ও ব্র্যাক ব্যাংক আপাতত এই চারটা ব্যাংকে একাউন্ট করে আপনারা পেনশন স্কিম করতে পারেন। এরমধ্যে একটা হলো প্রগতি স্কিম, যারা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বা বেসরকারি চাকরী করে। আপনারা মাসে দুই হাজার, তিন হাজার বা পাঁচ হাজার টাকা করে জমা দিতে পারবেন। এতে যে যে পরিমান টাকা জমা দিবেন সে সে পরিমান পেনশন পাবেন। সরকারী কর্মকর্তারা যেভাবে পেনশন পায় সেভাবে আপনার একাউন্টে মাসে মাসে পেনশনের টাকা চলে যাবে। ফলে এতে বৃদ্ধকালে জীবন কাটবে নিশ্চিন্তে।
এছাড়া যারা দারিদ্রসীমার নিচে। যাদের বার্ষিক আয় ৬০ হাজার টাকার নিচে। তারা ৫০০ টাকা জমা দিলে সরকার তার একাউন্টে আরও ৫০০ টাকা জমা দিবে। ৬০ বছর পর তিনি এক হাজার টাকা করে জমা দেয়ার পেনশন সুবিধা পাবেন।
তিনি পেনশন স্কিমে নারায়ণগঞ্জ জেলা দেশের এক নম্বর জেলা হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন এবং নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা এরই মাঝে এক নম্বর উপজেলায় পরিনত হয়েছে বলে জানান। তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলাকেও এক নম্বর জেলা করার দৃঢ় প্রত্যয় ঘোষনা করেন।
পরে তিনি সর্বজনীন পেনশন সহায়তা কেন্দ্রের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।