বৈষম্য বিরোধি ছাত্র আন্দোলনে বিশেষ ভূমিকা পালন সহ নারায়ণগঞ্জে নগর পরিচ্ছন্নতা ও নাগরিকসেবা প্রদান করায় রনদা প্রসাহা সাহা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১ শিক্ষার্থীকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে।
রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর).দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়টির ফ্যাশন ডিজাইন ডিপার্টমেন্টের।সেমিস্টার ও একাডেমিক প্রদর্শনীর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এই সম্মাননা প্রদান করা হয়।
প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ডক্টর মনীন্দ্র কুমার রায়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন রেজিস্টার সরকার হিরেন চন্দ্র, ডিন প্রফেসর ডক্টর মোহাম্মদ নাজমুল হাসান, এক্সাম কন্ট্রোলার ডক্টর মোহাম্মদ তরিকুল ইসলাম ও বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টের বিভাগীয় প্রধানগণ।
অতিথি হিসেবে ছিলেন রঙ বাংলাদেশের স্বত্ত্বাধিকারি সৌমিক দাস, শিশুদের শৈল্পিক বিকাশ ও শিল্প সংস্কৃতির অন্যতম সংগঠন মঈন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুনতাসির মঈন এবং নেভাল এন্ড ফ্রেংক ফ্যাশন লিমিটেডের কর্নধার আরাফাত আহমেদ রাজীব।
প্রদর্শনীতে ফ্যাশন ডিজাইন ডিপার্টমেন্টের বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থীদের নিজেদের ডিজাইনে তৈরি আকর্ষণীয় পোশাক ও তাদের আঁকা ছবিসহ নানা শিল্পকর্ম স্থান পায়। সাস্টেনেবল ফ্যাশন, আর্ট ডিজাইন, ড্রেস মেকিং, এপ্যারাল মেনুফেকচারিং বিভিন্ন কোর্সের শিক্ষার্থীরা তাদের সুন্দর ফ্যাশন চিন্তাধারাকে শিল্পকর্মের মাধ্যয়ে ফুটিয়ে তোলেন।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বৈষম্য বিরোধি ছাত্র জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট লং মার্চে শেখ হাসিনা দেশত্যাগ করলে গণভবনে লুটপাটকৃত সামগ্রি উদ্ধারে নিজেদের দায়িত্ববোধ থেকে ওইদিনই কমিটি গঠন করেন রনদা প্রসাহা সাহা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। পরে বিপুল পরিমান মূল্যবান সামগ্রি উদ্ধার করে তারা সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করেন। এছাড়া ৫ আগস্টের পর নারায়ণগঞ্জে টানা কয়েক সপ্তাহ ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন সহ বিদ্ধস্ত শহরকে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার মাধ্যমে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার কাজে নিয়োজিত থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের এই ১১ শিক্ষার্থীকে সম্মাননা স্বরূপ উত্তরীয় পড়িয়ে দেয়া হয়। দেশের স্বনামধন্য ফ্যাশন ডিজাইন প্রতিষ্ঠান রঙ বাংলাদেশের উদ্যোগে শিক্ষার্থীদের এই সম্মাননা প্রদান করা হয়। দেশের জন্য ভালো কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ এই সম্মাননা পেয়ে নিজেদের গর্বিত মনে করেন শিক্ষার্থীরাও।
অনুষ্ঠানে অতিথিবৃন্দ ফ্যাশন ডিজাইন ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থীদের শিল্প কর্মগুলোর প্রসংশা করেন এবং বাস্তবমুখী জ্ঞান আরোহনের গুরুত্বের উপর আলোচনা করেন। এছাড়া ভবিষ্যতে শিক্ষার্থীদের যে কোন প্রয়োজনে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে ডিপার্টমেন্ট এর সকল শিক্ষার্থীকে ভালো কাজে উদ্বুদ্ধ হওয়ার পরামর্শ দেন তারা।
এছাড়া এই ফ্যাশন প্রদর্শনীকে ঘিরে শিক্ষার্থীদের প্রতি গঠনমূলক আলোচনা ও আশাবাদ ব্যাক্ত করেন ফ্যাশন ডিজাইন বিভাগের অন্যান্য শিক্ষকরা।
সমাপনী বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাশন ডিজাইন ডিপার্টমেন্ট এর বিভাগীয় চেয়ারম্যান তানজিল হাসনাইন মঈন রনীত তার প্রয়াস ওডিপার্টমেন্টকে নিয়ে সূদূর প্রসারী চিন্তাভাবনা ব্যক্ত করেন। শিক্ষার্থীদের ভালো কাজের পাশাপাশি মানবিক ও সৎ মানুষ হবার পরামর্শও দেন।
তিনি বলেন, বানিজ্যিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের যোগসূত্র স্থাপন করা এবং পরবর্তীতে তারা যাতে নিজেদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাকে বানিজ্যকভাবে কাজে লাগাতে পারে সেই লক্ষ্যেই এই প্রদর্শণীর আয়োজন। দেশীয় সংস্কৃতি ও পাশ্চাত্য ডিজাইনের আদলে শিক্ষার্থীদের তৈরি শিল্প কর্মগুলো নিয়ে স্বল্প সময়ের মধ্যে নারায়ণগঞ্জে একটি ফ্যাশন শো করার পরিকল্পনার কথাও জানান তিনি।