নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

মঙ্গলবার,

০৮ এপ্রিল ২০২৫

যুবলীগ সন্ত্রাসীর হামলায় আহত শাহিনকে দেখতে গেলেন বাবু, শাস্তি দাবি

নারায়ণগঞ্জ টাইমস

প্রকাশিত:২১:০০, ৬ এপ্রিল ২০২৫

যুবলীগ সন্ত্রাসীর হামলায় আহত শাহিনকে দেখতে গেলেন বাবু, শাস্তি দাবি

চাঁদা না দেওয়ায় সাইনবোর্ড এলাকার যুবলীগ সন্ত্রাসী সরল বাহিনীর নির্যাতনে মারাত্মকভাবে আহত  স্বেচ্ছাসেবক দল কর্মী মিয়াকে দেখতে গেছেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব মমিনুর রহমান বাবু, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক রিপন সরকার সহ নেতৃবৃন্দ। 

আহত শাহীন মুগদা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। শনিবার রাতে সেখানে তাকে দেখতে ছুটে যান তারা। এ সময় তারা শাহীন মিয়ার চিকিৎসার সার্বিক অবস্থার খোঁজ খবর নেন এবং আহত শাহীনের পরিবার ও স্বজনদের শান্তনা দিয়ে তাদের পাশে রয়েছেন বলে জানান।

এছাড়াও মমিনুর রহমান বাবু শাহিনের হত্যার চেষ্টার সাথে জড়িত যুবলীগ সন্ত্রাসী সরল ও তার বাহিনীর অন্যান্য সদস্যদেরকে দ্রুত গ্রেপ্তারের জোরালো দাবী জানান। 

সংশ্লিষ্ট আইনশৃংখলা বাহিনী ও প্রশাসনকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনারা কাল বিলম্ব না করে এই ধরনের অপরাধীদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আসুন। এরা এদের সন্ত্রাসী কার্যকলাপের মাধ্যমে সমাজ ও রাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল করে রাখছে। 

এদের মত যুবলীগ ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা গত ১৭ বছর সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে রেখেছিলো। গন অভ্যুত্থানে ছাত্র হত্যাসহ বিভিন্ন মামলার আসামি হওয়া সত্ত্বেও তারা এখনো নির্বিগ্নে গুম, চাঁদাবাজী, মাদক ব্যবসা, জমি দখল, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে, যা জনমনে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

প্রসঙ্গত,  স্বেচ্ছাসেবক দল কর্মী শাহিন মিয়া সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় বাসের টিকিট বিক্রির কাজ করেন। সম্প্রতি সেখানে একটি চায়ের দোকান দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সরল বাহিনী তার কাছে বার বার ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিলো। দাবিকৃত চাঁদা না দিলে তাকে সেখানে ব্যবসা করতে দিবে না বলে হুমকি দেয়। 

শাহীন মিয়া চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় তাঁকে কয়েকবারই দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়। এরই জের ধরে হিসেবে গত বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক ১০টার দিকে সরলের ভাই নিশাদসহ ৪/৫ জনের একদল সন্ত্রাসী বাহিনী সাইনবোর্ড টিকিট কাউন্টার থেকে প্রকাশ্যে অনেক মানুষের সামনে থেকে  শাহীন মিয়াকে টেনে হেঁচড়ে একটি প্রাইভেট কারে উঠিয়ে নিয়ে পার্শ্ববর্তী মিতালী মার্কেটের এক নম্বর ভবনে তাদের টর্চার সেলে নিয়ে যায়। 

সেখানে শাহীনকে লোহার পাইপ, হকিষ্টিক দিয়ে অমানুষিক নির্যাতন চালায়, চাইনিজ কুড়াল দিয়ে কোপায়। তাঁকে হত্যা করার জন্য উদ্ধত হয়। এমতাবস্থায় সে সরলের পায়ে ধরে জীবন ভিক্ষা চায়। এক পর্যায়ে যেভাবেই হোক দুই তিন দিনের মধ্যে ৫০ হাজার টাকা যোগার করে এনে সরলকে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় শাহীন। 

তারপর সরল ও তার বাহিনী চাঁদা প্রদানের শর্তে তাকে ছেড়ে দেয় এবং শাহীন যাতে আইনের আশ্রয় না নেয় তার জন্য হুমকি প্রদান করে। তবে ছেড়ে দেওয়ার পূর্বে তারা শাহীনকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে ভিডিও করে রাখে এবং বলে তুই বাড়াবাড়ি করলে এই ভিডিও প্রশাসনের কাছে দিয়ে বলবো তুই ছিনতাইকারী। 

এই যুবলীগ ক্যাডার সরল ও হেলাল ফরাজি  বাহিনীর সন্ত্রাসী তান্ডবে আওয়ামীলীগের সময় থেকে সাইনবোর্ড স্টান্ড, মিতালী মার্কেটের ব্যবসায়ীরা সম্পুর্ন জিম্মি। সাইনবোর্ড স্ট্যান্ড এবং মিতালী মার্কেটের কোনো ব্যবসায়ী তাদেরকে চাঁদা না দিয়ে এখনো ব্যবসা বানিজ্য করতে পারে না। 

মিতালী মার্কেটের বিভিন্ন ভবনে রয়েছে তাঁর একাধিক টর্চার শেল। কেউ তাঁর সন্ত্রাসী কার্যকলাপের প্রতিবাদ করলে বা চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে তাঁকে তাদের বাহিনী দিয়ে ধরে নিয়ে এসে এই টর্চার শেলে নিয়ে এসে নির্যাতন চালায়। 

যুবলীগ সন্ত্রাসী সরল ও হেলাল ফরাজি এবং তাদের বাহিনী এখনো তাদের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ দাপটে চালিয়ে যাচ্ছে। রোজার মধ্যে সরলের নেতৃত্বে মিজমিজি কান্দাপাড়া এলাকায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক পাপ্পু এবং স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা টুটুলের বাড়ি করে সশস্ত্র হামলা করে। এই ঘটনায় স্বেচ্ছাসেবক লীগ সন্ত্রাসী সরলের বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলা হলেও পুলিশ সরলকে রহস্যজনক কারণে গ্রেপ্তার করেনি। 

এদিকে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরব ভূমিকায় জনমনে আতংক বিরাজ করছে।