
২০১৩ সালের ৫ ও ৬ মে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে হেফাজতে কর্মীদের হত্যাকারী প্রশাসনের অতিউৎসাহী সদস্যদের শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ সিদ্ধিরগঞ্জ শাখার নেতৃবৃন্দ।
শুক্রবার (১৪ মার্চ) বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ওলামায়ে কেরাম, শিক্ষাবিদ, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও পেশাজীবিদের সম্মানে ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে বক্তারা এ দাবি জানান। এসময় বক্তারা বলেন, কোন আন্দোলনের রক্ত বৃথা যায় না, প্রতিটা রক্তের ফোটার জবাব দিতে হবে।
২০১৩ সালের জঘন্য গণ হত্যায় যারা যেভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন তাদেরকে হিসাবের খাতায় আনতে হবে। বাংলাদেশের অন্তর্র্বতীকালীন সরকারকে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে শাপলা চত্ত্বর ও চিটাগাংরোডের হত্যাকান্ডের বিচার দ্রুত করতে হবে।
স্থানীয়ভাবে আওয়ামীলীগের যারা সহযোগিতা করেছে তাদেরকেও বিচারের আওতায় আনতে হবে। হেফাজতের সেই আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন, আহত হয়েছেন যারা বিভিন্নভাবে হয়রানি মূলক মামলায় আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন তাদের সবাইকে পুনর্বাসনের জন্য হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের পক্ষ থেকে প্রধান উপদেষ্টার কাছে একটি স্বতন্ত্র ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠার জন্য দাবি নিয়ে যেতে হবে।
জুলাই ফাউন্ডেশন যদি হতে পারে তাহলে শাপলা ফাউন্ডেশনও করতে হবে। এই ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে ২০১৩ সালে যারা নিহত-আহত হয়েছে, যারা পঙ্গুত্ব বরণ করেছে যারা মামলা-হামলার শিকার হয়েছে তাদের পুনর্বাসন করতে হবে।
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ সিদ্ধিরগঞ্জ থানা শাখার সভাপতি মুফতি কাসেম আল হোসাইনীর সভাপতিত্বে উক্ত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি উপস্থিত ছিলেন, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শাইখুল হাদীস মুফতি বশিরুল্লাহ, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি আজহারুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর ১০ নং জোনের সাধারণ সম্পাদক মুফতি শরীফুল্লাহ তারেকী, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নূর হোসাইন নূরানী ও মাওলানা জাকারিয়া আল ফরহাদ প্রমুখ।
সভায় বক্তরা আরও বলেন, যারা চাঁদাবাজী করে তারা যত বড় দলের লোকই হোক তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। আওয়ামীলীগ এত বড় দল ছিলো যে তাদের সামনে বিএনপির ৩জন মানুষ এক সাথে দাড়াতে পারেনি। এখন যদি বিএনপি বলে তারা বড় দল, তারা শক্তিশালী দল এগুলা আমরা বিশ্বাস করি না। হেফজতে ইসলাম রাত ২টা পর্যন্ত শাপলা চত্ত্বরে অবস্থান করেছিলো।
আর ২৮ তারিখে বিএনপি আছরের আগেই চলে গিয়েছে। যারা এখনো ক্ষমতায় আসেনি কিন্তু তারা চাঁদাবাজী শুরু করে দিয়েছে। এমন কোন স্কুল নেই যে তারা দখল করে নাই। থানা গুলো তারা দখল করেছে, ওসিদেরকে তারা দখল করেছে। ওসিরা এখন তাদের কথায় উঠাবসা করে।
বক্তারা আরও বলেন, নাস্তিক ছাড়া চরমোনাই-জামায়াত ইসলামিসহ সব ইসলামিকগুলো আমরা এক সাথে ঐক্য নিয়ে আছি। আমাদের নিজেদের মধ্যে কোন বিভাজন নেই। আমরা সবাই অন্যায় অত্যাচারের বিরুদ্ধে সবসময় রুখে দাড়াবো। ২০১৩ সাল থেকে শুরু করে প্রত্যেকটা আন্দোলন সংগ্রামে হেফাজতে ইসলাম অগ্রনী ভূমিকা পালন করেছে।
৫ আগষ্টের আন্দোলনেও হেফাজতে ইসলাম রক্ত জড়িয়েছে। আমাদের দেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট করার জন্য জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র চলছে। আমাদের জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।