বিএনপির জাতিয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অধ্যাপক মামুন মাহমুদ বলেছেন, আজকে প্রায় ১৭ বছর যাবৎ আমরা মানুষের ভোটের অধিকার আদায়ের জন্য, কথা বলার অধিকার আদায়ের জন্য আমরা সংগ্রাম করছি।
আর এই সংগ্রাম করতে গিয়ে আমাদের প্রতিটা নেতাকর্মী মামলা খেয়েছে, হামলার শিকার হয়েছে, জেল খেটেছে এবং বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে থাকতে হয়েছে।
রবিবার (১০মার্চ) বিকালে সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইল দক্ষিন ভূইয়া পাড়া এলাকায় ৮ ও ১০নং ওর্য়াড বিএনপির আয়োজনে বিএনপির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের সকল মৃত্যু বরনকারী নেতাকর্মীসহ ১০নং ওর্য়াড বিএনপির সদস্য শামীম মিয়ার রুহের মাগফেরাত কামনায় মিলাদ ও দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি একথা বলেন।
এসময় তিনি আরো বলেন এই ৭ জানুয়ারী যে নির্বাচন গেলে সেই নির্বাচনের আগে ২৮ শে অক্টোবর ঢাকাতে যে সমাবেশ হয়েছিল সেই সমাবেশে পুলিশি হামলার ঘটনা থেকে শুরু করে ৩মাস আমাদের একজন নেতাকর্মীও বাড়িতে থাকতে পরে নাই।
এই ৩মাস অনেক নেতাকর্মী কারাগারে বন্ধি ছিল, এই যে বাড়িতে থাকতে পারে নাই, যে চাকরি করে সে চাকরি করতে পারে নাই, যে ব্যবসা করত সে ব্যবসা করতে পারে নাই।
আমাদের অনেক কষ্ট করে থাকতে হয়েছে, পালিয়ে থাকতে হয়েছে, জায়গার অভাবে মসজিদে ঘুমাতে হয়েছে, রাস্তায় ঘুমাতে হয়েছে, দোকানের ছাউনির নিচে ঘুমাতে হয়েছে, এই যে শারীরিক কষ্ট এবং আর্থিক কষ্ট, পাশাপাশি মানুষিক যন্ত্রনায় আমারা যে অসুস্থ হয়ে যাচ্ছি, দিনে দিনে আমরা যে রোগাক্রন্ত হয়ে যাচ্ছি।
আমরা যে ডাক্তার দেখাতে পারছিনা, যার ডায়াবেটিস আছে ২মাস ৩মাস যদি কারাগারে বন্ধি থাকে তার ডায়াবেটিস আরো বেড়ে যায়, সে আরো বেশি অসুস্থ হয়ে যায়।
মামুন মাহমুদ আরো বলেন, আমাদের প্রতিনিয়ত ঔষুধ প্রয়োজন হয়, প্রতিনিয়ত ডাক্তার দেখাতে হয়, আমাদের চেকাপের প্রায়োজন হয়, আমরাত এই ৩ মাস ডাক্তারের কাছে যেতে পারি নাই, পালিয়ে থাকতে হয়েছে, বাড়িতে থাকতে পারি নাই, খেতে পারি নাই, ঘুমাতে পারি নাই দুশ্চিন্তায়।
এইসব করনে আমরা যে অসুস্থ হয়ে যাচ্ছি এবং অসুস্থ হয়ে স্ট্রোক করে মারা যাচ্ছে, এই বিষয় গুলোত সরকারের নিপিরন র্নিযাতনের ফসল, এটা আপনারা কেহু শিকার করবেন কিনা আমি জানি না, আমি আমার নিজের জীবন দিয়ে শিকার করি।
আমি নিজেই বুঝি যে যখন পালিয়ে থাকতে হয়, বাড়িঘর ছাড়া থাকতে হয়, তখন যে কত কষ্ট হয়, আমি বছরের পর বছর পালিয়ে থেকেছি এবং আপনারাও পালিয়ে থেকেছেন।
নিজের বাড়িঘর ছাড়া কয়দিন বাহিরে থাকা যায়, কে কয়দিন কাকে দেখে রাখে, কে কয়দিন কাকে খাওয়ায়, কে কাকে কয়দিন ঘুমাতে দেয়, এই যে নির্যাতন, এই যে নিপিরন, এই নির্যাতন, নিপিড়নের মধ্যে থেকেও আমাদের একজন নেতাকর্মীও রাজপথ ছেড়ে যায় নাই, একজন নেতাকর্মীও দেলের সাথে বিশ^াস ঘাতকতা করে নাই।
এরাই দ্বিতীয় প্রজন্মের মুক্তিযোদ্ধা, ১৯৭১ সালে যারা বুকের রক্তদিয়ে এদেশ স্বাধীন করেছে তারা যেমন মুক্তিযোদ্ধা, আজকে গনতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য যারা লড়াই সংগ্রাম করছে ১৭ বছর যাবৎ তারও কিন্তু দ্বিতীয় প্রজন্মের মুক্তিযোদ্ধা।
কাজেই আজকে যে আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন, এই যে শামীম তিনি কিন্তু শহীদ হয়েছেন। তাকে আমরা শহীদ বলতে পারি কারন তিনি চিকিৎসা পান নাই ৩ মাস, তিনি বাড়িতে থাকতে পারে নাই, তিনি খেতে পারে নাই, তিনি ঘুমাতে পারে নাই এই কারনেই তিনি স্ট্রোক করেছেন।
আমি শামীমসহ সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির যেসকল নেতাকর্মী মৃত্যুবরন করেছেন আমি সকলের রুহের মাগফেরাত কামনা করছি।
১০নং ওর্য়াড বিএনপির সভাপতি আলী আহম্মেদ লালার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক লিয়াকত হোসেন লেকুর পরিচালনায় উক্ত অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন ৬নং ওর্য়াড বিএনপির সভাপতি উকিল উদ্দিন ভূইয়া, ৭নং ওর্য়াড বিএনপির সভাপতি মোশারফ হোসেন, ৯নং ওর্য়াড বিএনপির সভাপতি বাবুল প্রধান, ৫নং ওর্য়াড বিএনপির সভাপতি টি,এইচ,তোফা, ২নং ওর্য়াড বিএনপির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, ৭নং ওর্য়াড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন, ৫নং ওর্য়াড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন, আবুল হোসেন, গোলজার হোসেন, জসিম উদ্দিন, কামাল ভূইয়া, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক জুয়েল রানা, আক্তার হোসেন, সুমন ভূইয়া, সালাউদ্দিন, রাজু, মনির হোসেন, মঞ্জু ও হাবিব প্রমূখ।