নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন বলেছেন, আমাকে যারা ভালোবাসে ও শ্রদ্ধা করে তারা আজকের আয়োজন করেছে। রাজনীতি জীবনে ৭০-এর এই সম্মান অনেক কিছু বয়ে আনে।
বঙ্গবন্ধু সাধিন্য হওয়া সময় তিনি বলেছিলেন, মানুষের কল্যাণে কাজ করো। তার নিদের্শে মানুষের পাশে আছি, মৃত্যু আগ পর্যন্ত থাকবো। নিঃস্বার্থে সারাটি জীবন রাজনীতি করেছি।
ছাত্র জীবনে একজন মেধাবী ছাত্র ছিলাম। দেওভোগে বাসিন্দা হয়ে অনেকে আমাকে পাবনা ও কুমিল্লা বলত, এতে অনেকে বিশ^াস করতো না। দেওভোগ থেকে আমি লেখা পড়া করে শিক্ষা অর্জন করেছি। দেওভোগ আমার জনবল, দেওভোগ আমার ঠিকানা।
আমার মৃত্যুর পর দেওভোগ এলাকায় জানাযা হবে। বঙ্গবন্ধু আদর্শে কর্মীদের ভালোবেসিছি, ভালো নেতৃত্বে তৈরি করার চেষ্টা করেছি। তাদের দুঃখে সুখে পাশে থেকেছি। আওয়ামীলীগের দূর্দিন তখন পুলিশী উপেক্ষা করে আন্দোলন করেছি। এতে আমাকে অনেক জুলুম নির্যাতন ও কারানিবাস হতে হয়েছিলো।
ছাত্রলীগের একজন কর্মী হয়ে বঙ্গবন্ধু হত্যা দিন রাজপথে মিছিল করেছিলাম। তখন অনেক বড় বড় নেতা ছিলো, তারা নামেনি। ঐক্য বদ্ধ হয়ে আমরা খুনিদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছি। কর্মী পাওয়া যায় না, তখন আমরা গুটি কয়েকজন ডিআইটি এলাকায় মিছিল করেছিলাম। আজকে অনেকে অনেক কিছু বলে, তারা কিন্তু ছিলো না।
আলী আহাম্মদ চুনকা ও শামসুজ্জোহা মৃত্যু পর আওয়ামীলীগের নেতৃত্বে শূণ্যতা তখন নেত্রীর নিদের্শে দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলাম। তখন সেক্রেটারী নির্বাচন করেছিলাম, তখন ভোটে জয়ী হতে পারি নাই।
তখন অনেকে কান্না করেছিলো, ওরা বুঝে ছিলো দেওভোগে নেতৃত্বে শূণ্য হয়ে গেলো, তখন তারা তাদের ভুল বুঝতে পেয়ে আমাকে দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন। পরে সাংগঠনিক সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়। ওই নেতাকে আমি বদনাম করি নাই।
দীর্ঘ নারায়ণগঞ্জ পৌরসভা চেয়ারম্যান মনোয়ন চেয়েছিলাম, তখন আমি পাই নাই। দলের প্রার্থী পক্ষে কাজ করে বিজয়ী করে ছিলাম। ৭১তম জন্মদিনে আপনাদের জানালাম। ২০০৩ সালে শহর আওয়ামীলীগের কাউন্সিলে নেত্রী আমাকে সভাপতি চেয়েছিলো।
তখন তিনি বলেছিলেন, আনোয়ারকে পৌরসভা চেয়ারম্যান মনোয়ন দিতে চেয়েছিলাম। তখন আমাকে ভোটে কাউন্সিলররা আমাকে সভাপতি নির্বাচিত করেন। তখন খোকন সাহাকে নিয়ে আমরা একত্রে দায়িত্ব পালন করেছি।
২০১১ সালের নাসিক নির্বাচনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী ছিলেন শামীম ওসমান আর নিজ দলের প্রার্থী ছিলেন সেলিনা হায়াৎ আইভী। ওই আনোয়ার হোসেন বের হয়ে নির্বাচন করেছিলোম, তা না হলে অনেকে বের হত না।
এতে পুরো নির্বাচনে আমি আলোচিত ব্যক্তিত্ব ছিলাম। আন্তজার্তিক ও স্থানীয় ভাবে সাহসী ভূমিকা নিয়ে আমরা আমাদের নিজ দলের প্রার্থীকে বিজয়ী করেছিলাম।
আইভীকে বিপুল ভোটে জয়ী করেছিলাম, নির্বাচনে পর অনেকে চেষ্টা করেছি। আজকে অনেকে তাদের দারস্থ করতে পারেনি, দক্ষিণ উত্তর মেরু পক্ষে রাজনীতি করি না। শেখ হাসিনার বলেছেন, তুমি এদিকে নয় ওদিকে যাবার দরকার নাই। তার নিদের্শে আমি রাজনীতি করে যাচ্ছি।
নেত্রী বলেছিলেন, মহানগর আওয়ামীলীগের কাকে সভাপতি বানাবো। তখন আমি বলেছিলাম, শহর আওযামীলীগের সভাপতি অনেক দিন হয়ে দায়িত্ব পালন করেছি, আমাকে এই দায়িত্ব দিন। তখন তিনি সাথে সাথে আমাকে এই দায়িত্ব বন্টন করেন।
আজকে অনেকে বলেছেন, ছাত্রলীগ আওয়ামীলীগ অনেক দিন সভাপতি দায়িত্ব পালন করেছে। তার তো টাকার কোন অভাব হওয়ার কথা নয়? বঙ্গবন্ধু আদর্শে রাজনীতি করায় আমার কোন এমন নেশা ছিলো না। আমার রাজনীতিতে কাউকে মারি নাই।
আমার অনেক নেতা রয়েছে, যারা বড় বড় দায়িত্ব পালন করছে। অনেকে বলেন, আমার নাকি কর্মী নাই? তাদের তো নেতা বানিয়ে দিসি, কর্মী থাকবো কই? অনেক নেতা সৃস্টি করেছি, এর মধ্যে এমপি হয়েছেন শামীম ওসমান। বয়সে ছোট ডা. আইভী নাসিকের তিনবারের মেয়র, তিনি দেশের আলোচিত।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের ঘোষিত ওয়ার্ড কমিটিগুলো কেন্দ্রীয় নেতাদের সমন্বয়ে করা হয়েছে। আমরা কাজে বিশ^াসী, পদে বিশ^াসী নয়। আমার কোন রাজনীতি উত্তরসূরি নাই।
আজকে অনেক নেতা মৃত্যুর পর স্মরণ করে না। কিন্তু চুনকা ও শামসুজ্জোহা পরিবারের সন্তান বড় আয়োজনে প্রতি বছর বিভিন্ন আয়োজন করে স্মরণ করে। রাজনীতি দিয়ে চাঁদাবাজ করি নাই, কোন হত্যা ও হুমকি ধমকি দেই নাই।
যাদের লাখ লাখ টাকা আছে, তারা মৃত্যুর পর ভোগ করতে পারে না। জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দায়িত্ব পালন কালে মসজিদ মাদ্রাসা উন্নয়ন করেছি। মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি, আজকে সেই সম্মান পেলাম।
শুক্রবার ৮ মার্চ বাদ মাগরিব নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের কার্যালয়ের নিজের জন্মদিন উপলক্ষে দলীয় নেতা-কর্মীদের আয়োজনে আলোচনা সভা, দোয়া ও কেক কাটা অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, মহানগর আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি হান্নান আহম্মেদ দুলাল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এস এম আহসান হাবিব, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক আইয়ূব আলী, কার্যকরি সদস্য মনিরুজ্জামান মনির, শামীম খা, আবেদ হোসেন, সাখাওয়াত হোসেন সুমন, শাহজামাল, আছমা আক্তার সুমি সহ ১৭টি ওয়ার্ডের নির্বাচিত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ।