নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

শুক্রবার,

১৮ অক্টোবর ২০২৪

জেলা বিএনপির সম্মেলন নিয়ে শঙ্কা, সফল করতে তারেক রহমানের নির্দেশ  

নারায়ণগঞ্জ টাইমস

প্রকাশিত:১৯:৪৭, ১৫ জুন ২০২৩

জেলা বিএনপির সম্মেলন নিয়ে শঙ্কা, সফল করতে তারেক রহমানের নির্দেশ  

দীর্ঘ ১৪ বছর পর নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সম্মেলন ১৭ জুন শনিবার। বহু নাটকীয়তার পর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সম্মেলন হতে যাচ্ছে।


তবে জেলা বিএনপির কাউন্সিলের পূর্বেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি'র আহ্বায়ক সাবেক এমপি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন।


আর সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাশুকুল ইসলাম রাজিব ও সদস্য সচিব গোলাম ফারুক খোকন। সাধারণ সম্পাদক পদে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভবনা রয়েছে।


দীর্ঘ ১৪ বছর পর জেলা বিএনপির সম্মেলন, ব্যালটে ভোটের মাধ্যমে আসছে নতুন কমিটি। সম্মেলনে জেলা বিএনপির নেতৃত্বে কী ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে, এ নিয়ে রয়েছে নানা আলোচনা। তবে শনিবার কাউন্সিলে তা পরিষ্কার হয়ে যাবে।


তবে দীর্ঘ ১৪ বছর পর নেতৃত্ব নির্বাচনী এ ভোটের ফলাফল শেষ পর্যন্ত ঘোষণা করা হবে কিনা, এ নিয়ে শঙ্কা রয়েছে নেতাকর্মীদের মনে।


তবে বিএনপির দায়িত্বশীল নেতারা বলছেন, এর কোনো সুযোগ নেই। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে দলীয় কোন্দল ভেঙে স্বচ্ছতা বজায় রেখে সৎ ও ত্যাগী নেতা নির্বাচিত করতে ভোটের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি।


দলের নেতাদের দাবি, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতেই সরাসরি ভোটের মাধ্যমে যোগ্য নেতৃত্ব গড়ে উঠলে দলের ভেতর যেমন স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা তৈরি হবে, তেমনি আগামী দিনে রাজপথের যেকোনো আন্দোলন সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে।


আর সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচনকে সাধুবাদ জানিয়েছে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। বলছেন, ত্যাগী নেতৃত্ব উঠে আসার পাশাপাশি তৃণমূলের সিদ্ধান্ত গ্রহণযোগ্যতা পাবে। কোন অপশক্তি নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি'র কাউন্সিল বন্ধ করতে পারবে না এবং ভোটের মাধ্যমে আমরা আমাদের নেতা নির্বাচিত করবো।


জানাগেছে, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির কাউন্সিলকে সফল করতে সর্বশেষ বৃহস্পতিবার ১৫জুন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হাইকমান্ডসহ বিএনপির দায়িত্বশীল নেতারা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির নেতৃবৃন্দরা একসাথে বৈঠক করেছে।


 বৈঠকে জেলা বিএনপির কাউন্সিলকে সফল করতে তারেক রহমানের পক্ষে থেকে দিক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। যেকোনো মূল্যে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির কাউন্সিল করতে হবে বলে ।


বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এড. আব্দুস সালাম আজাদ, সহ- সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির আহমেদ টিটু, সহ- আন্তর্জাতিক বিষয়ক সসম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মুহাম্মাদ গিয়াস উদ্দিন,জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী মনিরুজ্জামান, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব গোলাম ফারুক খোকন, যুগ্ম আহবায়ক মাশুকুল ইসলাম রাজিব, যুগ্ম আহবায়ক মনিরুল ইসলাম রবি, যুগ্ম আহবায়ক শহীদুল ইসলাম টিটু, যুগ্ম আহবায়ক জুয়েল আহমেদ। 


এবিষয়ে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বলেন, সম্মেলন ও কাউন্সিল সফল করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসাহ বিরাজ করছে।


তিনি বলেন, ভোটের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচনই প্রমাণ করে বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক দল এবং সর্বক্ষেত্রে গণতন্ত্র চর্চায় বিশ্বাসী।


এ বিষয়ে সেক্রেটারি পদপ্রার্থী মাশুকুল ইসলাম রাজিব বলেন, বিএনপি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নিজ হাতে গড়াদল। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আগামী দিনের রাষ্ট্র নায়ক আমাদের নেতা তারেক রহমান নেতৃত্বে দলের জন্য রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করছি।


তিনি আরও বলেন, রাজনীতি করতে গিয়ে অর্ধশতাধিক মামলার আসামি হয়েছি জেলও খেটেছি। দলের কাউন্সিল হচ্ছে প্রার্থী হয়েছি। ভোটাররা ভোট দিয়ে তাদের আগামী দিনের নেতৃত্ব সেক্রেটারি নির্বাচিত করবে। কাউকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতা সেক্রেটারি হতে দিব না। ইনশাল্লাহ ভোট হবে আমি ভোটের মাঠে আছি।


জানাগেছে, শনিবার সিদ্ধিরগঞ্জের হিরাঝিল এলাকায় গিয়াসউদ্দিন ইসলামিক মডেল কলেজ প্রাঙ্গনে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সম্মেলনে সকাল ১০টা হতে বিকেল ৪টা পর্যন্ত সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে। 


এতে ভোট দেবেন ১ হাজার ১০ জন কাউন্সিলর। পুরো প্রক্রিয়া অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে ৪ সদস্যের নির্বাচন পরিচালনা কমিটিও গঠন করা হয়েছে।


জেলা বিএনপির কাউন্সিলে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যোগ দেবেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কাউন্সিলে স্বশরীরে উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে।


এদিকে সম্মেলনকে কেন্দ্র করে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে বিপুল উৎসাহ দেখা গিয়েছে। সম্মেলনস্থল ছেয়ে গেছে ব্যানার-ফেস্টুনে। তৈরি করা হচ্ছে বিশাল মঞ্চ। ঝিমিয়ে পড়া বিএনপি'র নেতা-কর্মীরা অনেকটা চাঙ্গা হয়েছে।


কাউন্সিলকে সফল করতে গঠন করা হয়েছে ৬টি উপ- কমিটি। কাউন্সিলে ১০১০ জন কাউন্সিলর ভোট দেবেন ও বিভিন্ন ইউনিট ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের ১৫০০ ডেলিগেট উপস্থিত থাকবেন। কাউন্সিলে আমন্ত্রণ জানানো হবে আওয়ামীলীগ, জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন শ্রেণীপেশার অন্তত ১শ জন অতিথিকে।


এর আগে ২০০৩ সালে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত কাউন্সিলে ভোটের মাধ্যমে সভাপতি নির্বাচিত হন সাবেক প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক রেজাউল করিম, সাধারণ সম্পাদক হন বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা এড. তৈমূর আলম খন্দকার ও সিনিয়র সহ-সভাপতি হন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও তৎকালীন সংসদ সদস্য গিয়াসউদ্দিন।


সর্বশেষ ২০০৯ সালে শহরের আলী আহমেদ চুনকা পাঠাগারে দলের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে কাউন্সিলরদের ভোটের মাধ্যমে বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা এড. তৈমুর আলম খন্দকারকে সভাপতি ও কাজী মনিরুজ্জামানকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন।