নাশকতার অভিযোগে নারায়ণগঞ্জের তিন থানায় বিএনপি, জামায়াতে ইসলাম ও গণঅধিকার পরিষদের বেশ কয়েকজন নেতার নাম উল্লেখ করে ১৯৭ জনকে আসামি করে তিনটি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) সকালে বিস্ফোরক দ্রব্য আইন ও পেনাল কোডের বিভিন্ন ধারায় সদর, ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলা তিনটি রুজু করা হয়।
এর আগে গত বুধবার সন্ধ্যায় জেলার পৃথক তিনটি স্থানে মশাল মিছিল থেকে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয় বলে জানায় পুলিশ। ওই ঘটনার প্রেক্ষিতেই তিন থানায় তিনটি মামলা হয়েছে। এখন পর্যন্ত সদরের মামলায় চারজন ও ফতুল্লার মামলায় একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন- শওকত হোসেন (৫০), হারুন অর রশীদ (৫০), হাসিবুল ইসলাম সাঈদ (৩৫) ও আশিকুল ইসলাম সাজিদ (৩২) ও নজরুল ইসলাম মাদবর (৪৮)।
সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক আজহারুল ইসলাম বাদী হয়ে ২৯ জনের নাম উল্লেখসহ ৩০-৪০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে একটি মামলা করেছেন। সিদ্ধিরগঞ্জ থানার মামলায় উপপরিদর্শক দেবাশীষ কুন্ড বাদী হয়ে ২২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৩০-৩৫ জনকে আসামি করেছেন। ফতুল্লা মডেল থানায় উপপরিদর্শক মফিজুল ইসলাম ২১ জনের নাম উল্লেখ করে ৪০-৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করেছেন।
সদর মডেল থানার মামলার আসামিরা হলেন- মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এম হান্নান মামুন (৫০), মহানগর যুবদলের সদস্যসচিব মনিরুল ইসলাম সজল (৪৫), বিএনপি নেতা ফারুক হোসেন (৫৫), মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি শাহেদ আহম্মেদ (৩৫), মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মাজহারুল ইসলাম জোসেফ (৪৫), ছাত্রদল নেতা লিংকন খান (৩৮)।
ফতুল্লা মডেল থানার মামলার আসামিরা হলেন- জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক লুৎফর রহমান খোকা (৫২), যুগ্ম আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম টিটু (৪৮), যুবদল নেতা জাহাঙ্গীর (৪০), ফতুল্লা থানা বিএনপির সদস্য জুয়েল আরমান (৪৫), ফতুল্লা ইউনিয়ন বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম মাদবর ওরফে নজু মাদবর (৪৮), ইঞ্জিনিয়ার আলী আহাম্মেদ, কুতুবপুর ইউনিয়ন বিএনপি নেতা এনামুল হক (৪০), কাশীপুর ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি ইকবার (৪০), ছাত্রদল নেতা নয়ন (৪০), হান্নান মিয়াসহ (২৪)।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার মামলার আসামিরা হলেন- জেলা জামায়াতে ইসলামের আমীর আব্দুর রহমান, গণঅধিকার পরিষদের জেলা কমিটির যুগ্ম আহবায়ক আরিফ ভূঁইয়া, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি আব্দুল হাই রাজু, থানা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাজেদুল ইসলাম, মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি জুয়েল রানা, জেলা জামায়াতে ইসলামের সদস্য জয়নাল আবেদীন ফারুক, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সদস্য পলাশ, বিএনপি নেতা ইকবাল হোসেন, রওশন আলী, সালাহউদ্দিন, গোলজার হোসেন, থানা যুবদলের সাবেক সভাপতি জয়নালকে।
তিন মামলার বিবরণে পুলিশ উল্লেখ করেছে, বুধবার সন্ধ্যায় লাঠিসোটা, হকিস্টিকসহ দেশীয় অস্ত্র হাতে বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী মশাল মিছিল করে। পরে তারা সড়কে টায়ার পুড়িয়ে যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে গাড়িতে ভাঙচুর চালায়। তারা জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করার জন্য তিনটি স্থানেই ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়।
ঘটনাস্থল থেকে বিস্ফোরিত ককটেলের অংশ, পোড়া টায়ার, মশাল মিছিলে ব্যবহৃত লাঠি ও টিনের কৌটা, গাড়ির কাঁচের ভাঙা অংশ উদ্ধারের কথাও মামলায় উল্লেখ করেছে পুলিশ।