সদর উপজেলার ফতুল্লায় লিংক রোডের মৎস ভবন ঘেষা মতলব টাওয়ারে ফ্ল্যাট দেখতে যেয়ে ভবনের পাশ দিয়ে যাওয়া ৩৩ কেভি বিদ্যুৎ লাইনে বিদুৎস্পর্শে এখন জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষনে ব্যবসায়ী কামরান হোসেন রানা। তিনি এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে লাইফ সার্পোটে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
রানার পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে, গত ২৮ নভেম্বর রাত ৮টায় এক ব্যাংক দম্পত্তিকে সঙ্গে নিয়ে ব্যবসায়ী রানা মতলব ভবনে ফ্ল্যাট দেখাতে যান। প্রথমে তিনি ভবনের নীচ তলায় এশার নামাজ আদায় করেন। পরে তিনি ব্যাংক দম্পত্তি ও ভবনের নিরাপত্তা প্রহরীকে নিয়ে ভবনের চারতলায় যান। ফ্ল্যাটের প্রতিটি কক্ষ তিনি ব্যাংকার দম্পত্তিকে দেখান।
এক পর্যায়ে তিনি দরজা খুলে বারান্দা দেখাতে যান। দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে রানা বিদ্যুৎতায়িত হয়ে যান। ঝলসে যায় তার পুরো দেহ। এসময় ব্যাংকার দম্পত্তি ও নিরাপত্তা কর্মী দৌড়ে ফ্লাট থেকে বের হয়ে যান। বিদ্যুতায়িত হয়ে পড়ে থাকেন ব্যবসায়ী রানা।
পরে ভবনের মালিক কাওসারকে নিরাপত্তা কর্মী ফোনে খবর দিলে তিনি ছুটে আসেন। কিন্তু এসময়ের মধ্যে ব্যবসায়ী রানার গায়ের কাপড়ে আগুন জ¦লে সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। গুরুতর আহতাবস্থায় তাকে উদ্ধার করে পাঠানো হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে।
সেখানে প্রথমে তাকে রাখা হয় আইসিইউতে। অবস্থার অবনতি হলে মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রানাকে লাইফ সার্পোটে স্থানান্তর করেন কর্তব্যরত চিকিৎকরা।
ফ্ল্যাট ক্রয়ের বিষয়ে ভবনের যাবার আগে রানা মালিক কাওসারের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি ফ্লাট খুলে দেখানোর জন্য নিরাপত্তা কর্মীকে বলে দিয়েছেন বলে রানাকে জানান। এরপরই রানা গিয়েছিলেন ব্যাংকার দম্পত্তিকে ফ্লাট দেখাতে।
ঘটনার পর মতলব ভবনের মালিক কাওছার এসে রানাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসাপাতালে পাঠান। এরপর তিনি আর কোন খোঁজ নেননি।
বাড়ির পাশ দিয়ে ৩৩ কেভি ভোল্টের লাইন থাকা সত্ত্বেও তিনি কিভাবে বহুতল ভবন করলেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে উধ্বতন একজন বিদ্যুৎ কর্মকর্তা জানান, তাদের কাছ থেকে কোন ছাড়পত্র নেয়া হয়নি। তারা কোন ছাড়পত্র দেননি।
হাই ভোল্টেজের আশপাশে কোন ভবন করতে হলে বিদুৎ বিভাগের তদন্ত সাপেক্ষে অনুমতি নেয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু বাড়ির মালিক সেটি করেননি। অভিযোগ উঠেছে, রাজউকের অনুমোদন ব্যতিরেকেই বহুতল ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। এ ব্যপারে ব্যবসায়ী রানার ভাই ইমাম হোসেন ফতুল্লা থানায় একটি সাধারন ডায়েরী করেছেন।
এলাকাবাসীরা জানিয়েছেন, দূর্ঘটনার পরপর ফতুল্লা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসেছিলেন। তারা কাওসারের সঙ্গে কথা বলে গেছেন। ব্যবসায়ী রানার উদ্ধাকৃত মোবাইল ফোনটি সেসময়ে তিনি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছেন।
এ ব্যপারে ফতুল্লা থানার ওসি রকিবউদ্দিন জানান, বিষয়টি আন্তরিকতার সঙ্গে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কোন অনিয়ম পাওয়া গেলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। আহত ব্যবসায়ীর স্বজনদের বলে দেয়া হয়েছে আগে চিকিৎসা কাজটি সমাধান করুন। এটি এখন জরুরী।