জুলাই-আগষ্টের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালীন সময়ে শেখ হাসিনার নির্দেশে নারায়ণগঞ্জের আলোচিত-সমালোচিত সাংসদ শামীম ওসমান ও তার পুত্র অয়ন ওসমানসহ সহস্রাধিক ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সন্ত্রাসীরা আন্দোলনকারীদের ওপর চালিয়েছে নির্মম অত্যাচারের স্ট্রিম-রোলার।
বিএনপির একাধিক নেতা-কর্মীদের জীবনে নেমে আসে অমানবিক নির্যাতন। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দেওয়া হয় তালা, বাড়িঘরে পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করা দুর্বিষহ হবে পড়ে। অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য।
ছাত্র-জনতার ওপর হামলাকারী আওয়ামী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে একাধিক গণহত্যাসহ হত্যার চেষ্টা মামলা হলেও আসামিরা এখনো বহাল-তবিয়তে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঢিলেঢালা তৎপরতায় সন্ত্রাসীরা রয়েছে ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। অথচ, তাদের ভয়েই জুলাই থেকে গত ৫ আগস্ট পর্যন্ত আন্দোলনকারীদের থাকতে হয়েছিল অজানা আর্তনাদে। ছাত্র-জনতা, গণমাধ্যমকর্মী থেকে শুরু করে আন্দোলনে অংশ নেন সমর্থনকারীরা।
সম্প্রতি, বৈষম্য বিরোধী একাধিক মামলা হলেও রহস্যজনক কারনে আসামির তালিকায় নেই ছাত্র-জনতার ওপর হামলাকারী একাধিক আওয়ামী অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের নাম। সেই সুবাদে কুতুবপুর ইউনিয়নের, নয়ামাটি এলাকায় হরহামেশাই প্রকাশ্যেই ঘুরে বেড়াচ্ছেন ফ্যাসিস্ট দোসররা।
ছাত্র-জনতার ওপর হামলাকারী অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের মধ্যে অন্যতম, ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইসহাকের ভাই ফতুল্লা থানা সেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ইলিয়াস হোসেন, যুবলীগ নেতা দেলোয়ার, কুতুবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক সালাউদ্দিন, ফতুল্লা থানা বাস্তহারা লীগের সাবেক সভাপতি বাদল, জাতীয় শ্রমিক লীগ ফতুল্লা থানার কার্যনির্বাহী সদস্য সুলতান মোল্লা, যুবলীগ নেতা দেলোয়ার শেখ, ফতুল্লা থানা তাঁতীলীগের সাবেক শ্রম ও জনশক্তি বিষয়ক সম্পাদক মিলন মাতবর, নামধারী যুবলীগ নেতা আলাউদ্দিন, আক্তার ও সেলিমসহ নয়ামাটি এলাকার অধিকাংশ আওয়ামী সন্ত্রাসীরা রয়েছেন বিএনপির নেতাদের ছত্রছায়ায়। অনেকেই আবার বলছেন, বর্তমানে নেতাদের টাকা দিলেই নাকি সব মাপ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া আওয়ামী দোসর কুতুবপুরে নানা অপকর্মে বিতর্কিত সালাউদ্দিন তার ভাই সুদখোর আলাউদ্দিন এবং তার ছেলে মাদক ব্যবসায়ী সাদ্দাম হোসেন তুহিনসহ উল্লেখিত সন্ত্রাসীরা ৩ আগষ্ট ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি শহিদুল ইসলাম টিটুর আপন ছোট ভাই তপন এর মালিকানাধীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অবৈধভাবে তালা দিয়ে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করে।
শুধু তা-ই নয়, নয়ামাটি, নন্দলালপুর এলাকায় প্রতিনিয়ত ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে বিএনপি নেতা-কর্মীসহ নিরীহ অসহায় মানুষের ওপর নির্মম অত্যাচার ও নির্যাতনের মাধ্যমে আদায় করা হতো অবৈধ অর্থ।
কলকারখানার মালিক ও শ্রমিকদের কাছ থেকে নেওয়া হতো মোটা অংকের চাঁদা। বিএনপির কতিপয় অসাধু নেতাদের ছত্রছায়ায় এখনো থেমে নেই আওয়ামী দোসরদের অপকর্ম। এমন সীমাহীন অপকর্ম করেও কোন অদৃশ্য ইশারায় তারা রয়েছে বহাল-তবিয়তে? এমনটাই প্রশ্ন এখন জনমনে।
ছাত্র-জনতার ওপর হামলাকারীদের অতিদ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে সচেতন মহল বলেন, যারা অস্ত্র মহড়া দিয়েছে কিংবা শিক্ষার্থীসহ আন্দোলনকারীদের ভয় দেখানোর জন্য অস্ত্রের ব্যবহার করেছে তাদের আইনের আওতায় না আনা হলে এটি প্রশ্রয়ের শামিল হবে।
ফলে ভবিষ্যতে সামাজিক অবক্ষয় সৃষ্টির পাশাপাশি ফের ভয়াবহ বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। যদিও এ বিষয়ে কোনো ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার।