রাজনৈতিক পট পরিবর্তন হলেও সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল মোড়ে সরকারি জমিতে অবৈধভাবে গড়ে উঠা চাঁদাবাজির উৎসস্থল চিটাগাংরোড রেন্ট-এ-কার স্ট্যান্ডে থেমে নেই চাঁদাবাজি।
আলোচিত সাত খুনের মামলার ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত আসামি নুর হোসেন অপরাধ জগতের এ সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন। নুর হোসেন কারাগারে যাওয়ার পর এর নিয়ন্ত্রন নিতে একাধিক সংঘর্ষ, হামলা ও মামলার ঘটনা ঘটেছে। এর আধিপত্য ধরে রাখতে নানা কৌশল অবলম্বন করছেন একাধিক চাঁদাবাজ সিন্ডিকেট।
এদিকে গত ৫ আগষ্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর কিছুদিন চাঁদাবাজি বন্ধ থাকলেও সম্প্রতি দেলোয়র. অহিদ ও রশিদ গং পরিবহন মালিক ও চালকদের জিম্মি করে ফের চাঁদাবাজিতে সক্রিয় হয়ে প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক গাড়ির মালিক ও চালকরা জানান, আমরা জিম্মি হয়ে আছি, এই গাড়ি ভর্তিতে ও গাড়ি রাখতে প্রথমে ৬ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা দেলোয়ার ও অহিদকে দিতে হয়।
এরপর প্রতি গাড়ির জন্য মাসিক দিতে দিতে হয় প্রাইভেট ও নোহা প্রতি ৫শ’ টাকা এবং হাইয়েস প্রতি ৭শ’ টাকা। সেই হিসেব চিটাগাংরোড রেন্ট-এ-কার স্ট্যান্ডে মাসে প্রায় দেড় লাখ টাকার চাঁদাবাজি করছেন দেলোয়র. অহিদ ও রশিদ।
একাধিক সূত্র জানায়, নির্বিঘ্নে চাঁদাবাজি ও এর কার্যক্রম বহাল রাখতে বিএনপি নেতৃবৃন্দের কাছে ঘুরে বেড়াচ্ছেন দেলোয়র. অহিদ ও রশিদ। নেতাদের ম্যানেজ করে নতুন করে কমিটি গঠনের পায়তারও করছেন তারা। বিএনপির দলীয় বিভিন্ন কর্মসূচীতে তাদের উপস্থিতি দেখা গেছে।
এছাড়াও আবার যারা আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিভিন্ন নেতার আত্মীয় পরিচয় দিয়ে এই স্ট্যান্ডের নিয়ন্ত্রণে ছিল তারা খোলস পাল্টে বিএনপির নেতাদের কাছে ঘুর ঘুর করতে দেখা যায়।
এদিকে এ চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করে আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠছে শিমরাইল মোড়ে রেন্ট-এ-স্ট্যান্ড। একাধিক গ্রুপ দফায় দফায় মহড়া দিচ্ছেন। অন্যদিকে এ নিয়ে পরিবহন মালিক ও চালকদের মধ্যে চলছে ক্ষোভ। তারা বলছেন ভর্তুকি দিয়েও গাড়ির ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে পারছিনা।
আর তারা চাঁদাবাজি কওে নিয়ে যাচ্ছে লাখ লাখ টাকা। এসব চাঁদাবাজরা সবই এক সুতোতে গাঁথা। শুধু চেহারা পরিবর্তন হচ্ছে, আর কিছুই না।
সরেজমিন দেখা গেছে, সড়ক দখল করে অবৈধ স্ট্যান্ডে জনজীবনে দুর্ভোগ সৃষ্টি হচ্ছে। প্রায় দুইশত কার ও মাইক্রোবাস রাস্তার মধ্যেই পার্কিং করে রাখা হয়। পথচারীরা চলাচল করতে পারছে না। কারণ রাস্তা ও ফুটপাত দখল করেই চলে এই পার্কিং বাণিজ্য।
চাঁদাবাজির বিষয়ে জানেতে চাইলে দেলোয়ার ও অহিদ বলেন, প্রতিটা গাড়ি ভর্তির জন্য ৫ হাজার থেকে ৬ হাজার টাকা নিচ্ছি। এ টাকা দিয়ে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের অনেককেই মাসোহারা দিতে হয়।
এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আল মামুন বলেন, চাঁদাবাজির বিষয়ে চালক অথবা গাড়ির মালিকরা অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।