জুলাই আন্দোলনে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থেকেও জুলাই আন্দোলনে শহীদ হওয়ার ঘটনায় দায়ের করা একটি হত্যা মামলায় আসামি হয়েছেন সিদ্ধিরগঞ্জের ২নং ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মোজাম্মেল হোসেন।
বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন চলাকালীন গত ২১ জুলাই সিদ্ধিরগঞ্জের হিরাঝিল এলাকায় গুলিতে রফিকুল ইসলাম (২৪) নিহতের ঘটনায় নারায়ণগঞ্জের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে দায়ের করা মামলায় মোজ্জাম্মেল হোসেনকে ৪০ নং ক্রমিকে আসামি করা হয়েছে।
মামলায় শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামী করে ১০৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো ১০০/১২০ জনকে আসামি করা হয়েছে। অথচ বিএনপি নেতা মোজাম্মেল হোসেনকে ডিবি পুলিশ গত ১৭ জুলাই রাতে সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করে।
১৮ জুলাই নারায়ণগঞ্জ সদর থানার পুলিশ একটি গায়েবি নাশকতার মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়। এরপর ৬ আগষ্ট মোজাম্মেল হোসেন কারাগার থেকে মুক্তি পায়। এই ঘটনায় বিএনপি নেতা-কর্মীদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
মামলায় অভিযুক্ত বিএনপি নেতা মোজাম্মেল হোসেন বলেন, ১৫ বছর ধরে ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলনে রাজপথে ছিলাম। জুলাই আন্দোলনে দলের নির্দেশে সক্রিয় থাকায় ১৭ জুলাই রাত ১১টায় নারায়ণগঞ্জের ডিবি পুলিশের একটি দল আমাকে আত্মগোপনে যাওয়ার সময়ে মিজমিজি এলাকা থেকে তুলে নিয়ে ডিবি কার্যালযে রাখে।
পরদিন নারায়ণগঞ্জ সদর থানায় দেয়। সদর থানা পুলিশ ২০২২ সালের ৩০ নভেম্বরের একটি গায়েবী নাশকতা ও বিষ্ফোরক মামলায় (মামলা নং-০১(১২) ২০২২) গ্রেফতার দেখিয়ে আমাকে কোর্টে পাঠায়।
ওই মামলার এজাহারে আমার নাম ছিল না। তবু কোর্টের আদেশে আমাকে কারাগারে পাঠায়। ৫ আগষ্ট ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর ৬ আগষ্ট আরো অনেকের মত আমিও জেল থেকে ছাড়া পাই।
এখন দেখি ২১ জুলাই হিরাঝিলে গুলিতে রফিকুল ইসলাম নামে একজন নিহতের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আমাকে আসামি করা হয়েছে। গায়েবি মামলায় যে সময়ে আমি জেলে বন্দি ওই সময়ে হত্যার ঘটনায় যদি নতুন বাংলাদেশে আসামী হই তাহলে কোথায় ন্যায় বিচার চাইবো ?
মোজাম্মেল দাবি করেছেন এই ঘটনায় মামলা দুর্বল করার পরিকল্পনা আছে। কারা এরসাথে জড়িত তা চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে হবে।
এ ব্যাপারে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি আল মামুন বলেন, আদালতের নির্দেশে আমরা মামলাটি এফআইআর হিসেবে রেকর্ড করেছি। তদন্তের সময়ে বিষয়টি আমরা দেখবো।
এবিষয়ে মামলার বাদী নিহত রফিকুল ইসলামের মা সুফিয়া বেগমের ফোনে একাধিকার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
মামলার ১নং স্বাক্ষী আজহার হোসেন বলেন, এটা ভুল হয়েগেছে। আদালতের মাধ্যমে ঠিক করে
দেওয়া হবে।
এব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সাধারন সম্পাদক ও বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অধ্যাপক মামুন মাহমুদ বলেন, একটি চক্র পরিকল্পিত ভাবেই বিএনপির ও অংগসংগঠনের কয়েক জন নেতাকে জুলাই হত্যাকান্ডের বিভিন্ন মামলায় আসামি করার খবর পাচ্ছি।
মোজাম্মেল একজন দলের পরীক্ষিত নেতা। তাঁকে আসামি করা হয়েছে। এতে মামলাগুলো দুর্বল হওয়ার আশংকা থাকে। আসল অপরাধীরা এর সুযোগ নিতে চাইবে। যারা এই অপকর্মের হোতা তাদের চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।