নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

শুক্রবার,

২২ নভেম্বর ২০২৪

সিদ্ধিরগঞ্জে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে আজমেরী ওসমান ও কাজী আমিরের সন্ত্রাসীরা

নারায়ণগঞ্জ টাইমস

প্রকাশিত:২২:১৪, ৩০ আগস্ট ২০২৪

সিদ্ধিরগঞ্জে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে আজমেরী ওসমান ও কাজী আমিরের সন্ত্রাসীরা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঠেকাতে শামীম ওসমানের মিছিল থেকে গুলিবর্ষণ করা সন্ত্রাসী আজমেরী ওসমান ও তার অন্যতম সহযোগী সন্ত্রাসী কাজী আমির এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেলেও মুচি রফিকের নেতৃত্বে সিদ্ধিরগঞ্জের ১০ নম্বর ওয়ার্ড দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ওই সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যরা।

এলাকাবাসীর দাবী, পালিয়ে যাওয়া আজমেরী ওসমান ও কাজী আমির বাহিনীর অস্ত্র ভান্ডার রয়েছে মুচি রফিকের হেফাজতে। ফলে ওয়ার্ডবাসীর মাঝে বিরাজ করছে চরম আতঙ্ক। অবিলম্ভে এই ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী বাহিনীর অস্ত্র উদ্ধারের দাবী জানিয়েছে এলাকাবাসী।

জানা যায়, সিদ্ধিরগঞ্জের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের আরামবাগ এলাকার সন্ত্রাসী কাজী আমির ছিলেন আজমেরী ওসমানের সেকন্ড ইন কমান্ড। এই আমির সিদ্ধিরগঞ্জের এমন কোনো সেক্টর নেই, যেই সেক্টরে আজমেরীর হয়ে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করেনি। আজমেরীকে সো অফ করে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। 

অপরদিকে গোদনাইলে রাষ্ট্রয়াত্ব জ¦ালানী তেল ডিপোতেও ছিলো আমির বাহিনীর আধিপত্য। যদিও ঐ সেক্টর নিয়ন্ত্রণ করতো যুবলীগ নেতা কাউন্সিলর মতি। কিন্তু আজমেরীকে প্রতি মাসে বখরা দিতে হতো। আর তা আমীরের মাধ্যমেই দিতে হতো। পাঠানটুলি এলাকায় অবস্থিত নীট কনসার্ন গ্রুপের ঝুট সেক্টরও আজমেরীর হয়ে নিয়ন্ত্রণ করতো কাজী আমির। 

নাসিক ৬ নম্বর ওয়ার্ড, ৮ নম্বর ওয়ার্ড ও ১০ নম্বর ওয়ার্ডে সন্ত্রাসের রামরাজত্ব কায়েম করেছিল এই সন্ত্রাসী বাহিনী। মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজী ও কিশোরগ্যাং, ভুমিদস্যুতায় অতিষ্ঠ ছিল এলাকাবাসী। আমিরের আরামবাগের বাড়িতে ছিল সন্ত্রাসীদের আস্তানা। এই আস্তানায় প্রতিদিনই গভীর রাতে আজমেরী ওসমান অবস্থান করতো বলে জানায় স্থানীয় এলাকাবাসী। 

ফতুল্লার কুতুবপুর নয়ামাটি এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী চুন্নু, মিথুনের ছিলো ঘন ঘন যাতায়াত। এছাড়াও নারায়ণগঞ্জের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসীরা কাজী আমিরের আস্তানায় যাতায়ত করতো বলেও জানা গেছে। এসব সন্ত্রাসীরা আজমেরী ওসমানের হয়ে গডফাদার শামীম ওসমানের মাফিয়া সাম্রাজ্যের মিশন বাস্তবায়ন করতো। এই বাহিনীর কাছে বিপুল পরিমান অস্ত্রের ভান্ডার রয়েছে বলে দাবী এলাকাবাসীর।

এসব অস্ত্র দিয়ে গত জুলাই মাসের ১৯ ও ২০ তারিখ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঠেকাতে শামীম ওসমানের মিছিল থেকে নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে ওসমান বাহিনীর সন্ত্রাসীরা। গত ৫ আগষ্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে নারায়ণগঞ্জ থেকেও স্বপরিবারে গডফাদারখ্যাত শামীম ওসমান ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা। পালিয়েছে ওসমান পরিবারের অনুগত রাজনীতিক ও সন্ত্রাসীরাও।

স্থানীয়দের দাবী, সন্ত্রাসী আজমেরী ওসমান ও তার অন্যতম সহযোগী সন্ত্রাসী কাজী আমির এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেলেও মুচি রফিকের নেতৃতে ৮ নম্বর ওয়ার্ডের আইলপাড়া এলাকার অস্ত্র ব্যবসায়ী দেলোয়ার, শাহজাহান, শহিদুল্লাহ, সাইদুল, রবিন, স্বপন, হেলাল, নুর হোসেন, আক্তার হোসেন, হায়দার আলী, সুমন ভুঁইয়া, অভি, ১০ নম্বর ওয়ার্ডের পাঠানটুলী এলাকার রুবেল মাদবর, আলমগীর ও এরশাদ সহ আরো অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসীরা এলাকায় সংঘঠিত হয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টি করার পায়তারা চালাচ্ছে। এতে এলাকায় চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে বলে জানিয়েছে এলাকাবাসী।