ফতুল্লা বিসিক শিল্পাঞ্চলের ঝুট সেক্টরকে নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া সংঘর্ষ হয়েছে। এসময় বরিশাইল্লা জাহাঙ্গীর বাহিনীর ছরিকাঘাতে রক্তাক্ত জখম হয়েছে রিয়াদ ও মঞ্জু নামে দুইজন। এছাড়াও আর ৮ থেকে ১০ জন আহত হয়েছে। এ ঘটনায় এক পক্ষ ফতুল্লা মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) দুপুরে বিসিকের ১নং গলির মার্টিন গার্মেন্টসের সামনে এঘটনা ঘটে। এসময়ে বরিশাইল্লা জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে শতাধিক লোকজন নিয়ে রাসেলের দোকানপাট ও বসতবাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করেছে। আহতদের উদ্ধার করে খানপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জানা যায়, যুবদল নেতা আনোয়ার হোসেন আনু হত্যা মামলার মাধ্যমে ফতুল্লা থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব রাসেল মাহমুদকে আসামি করে এলাকা থেকে সরিয়ে রেখেছে একটি মহল। আর এই সুযোগে বিএনপির নাম ভাঙিয়ে বিসিকের ঝুট সন্ত্রাসী বরিশাইল্লা জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে এক থেকে দেড়শ লোকজন নিয়ে বিসিকের ১নং গলির মার্টিন গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন ফ্যাক্টরির ঝুট সেক্টর নিয়ন্ত্রণ করতে রাসেল বাহিনীর উপর অতর্কিত হামলা চালায় এবং রাসেলের দোকানপাট ও বসতবাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও লুটপাট করেন। জাহাঙ্গীর গ্রুপ সঙ্গে রাসেল বাহিনীর দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে জাহাঙ্গীর গ্রুপের ছুরিকাঘাতে রাসেল বাহিনীর দুইজনকে গুরুত্বর আহত করে বিসিক ছাড়েন।
আরও জানাযায়, আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পর বিসিকের ঝুট সেক্টর দখলের জন্য বেশ কয়টি গ্রুপ তৎপর হয়ে উঠে। এরমধ্যে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা রাসেল মাহমুদ বাহিনী ও জাহাঙ্গীর গ্রুপ মুখোমুখি অবস্থান নেয়। কয়েকদিন ধরেই তারা বিসিকে পৃথক ভাবে মহড়া দিতে শুরু করেন।
এসময় মালিক-শ্রমিক ও সাধারন মানুষের মধ্যে ব্যাপক আতংক ছড়িয়ে পড়ে। তখন খবর পেয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী কয়েকটি বাহিনী বিসিকে অবস্থান নিলে কৌশলে জাহাঙ্গীর গ্রুপ পালিয়ে যায়।
এবিষয়ে বাবর আলীর ছেলে চান্নু বাদী হয়ে জাহাঙ্গীর ওরফে বরিশাইল্লা জাহাঙ্গীর, ইকবাল হাওলাদার, শহীদ, আবুল কালাম বাদশা, মনিরুজ্জামান মনির, সিয়াম, জাকির ওরফে কালা জাকির, রাজিব ও প্রিতমের নাম উল্লেখ করে এবং ৭ থেকে ৮ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে ফতুল্লা মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
ফতুল্লা মডেল থানার ওসি নুরে আজম এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে স্থানীয়রা জানায়, বিসিকে প্রতি মানে কোটি কোটি টাকা ঝুট (গার্মেন্টস ওয়েস্টেজ) বাণিজ্য হয়। গত ১৫ বছর ধরে এই বাণিজ্য আওয়ামীলীগ ও তাদের সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীদের দখলে ছিল। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বিএনপির অংগসংগঠনের নেতারা বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে এই ঝুট ব্যবসা দখল করতে মাঠে নামেন। বুধবারও নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের সামনে ড্রীম ইয়ার্ড এ্যাটার্স লিমিটেড গার্মেন্টেসর ঝুট নামানোকে কেন্দ্র করে ঝুট সন্ত্রাসী দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে।