নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

শনিবার,

২১ ডিসেম্বর ২০২৪

সিদ্ধিরগঞ্জে শামীম ওসমানকে প্রধান আসামি করে হত্যা মামলা

নারায়ণগঞ্জ টাইমস

প্রকাশিত:১৫:৫৬, ২১ আগস্ট ২০২৪

সিদ্ধিরগঞ্জে শামীম ওসমানকে প্রধান আসামি করে হত্যা মামলা

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে গুলিবিদ্ধ হয়ে কেয়ারটেকার মো. মনির হোসেন (৫৬) নিহতের ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমানকে প্রধান আসামি করে ১২৩ জনের নাম উল্লেখ করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে।  

মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) রাত ১২টার দিকে নিহত মনিরের ছোট ভাই সাখাওয়াত হোসেন বাদী হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় এ হত্যা মামলা দায়ের করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবু বকর সিদ্দিক।

নিহত মনির হোসেন পাইনাদি নতুন মহল্লার পিএম মোড় এলাকার (পিএম টাওয়ার সমিতির বিল্ডিং) এর কেয়ার টেকার ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ী তালতলা দাদঘর মনোহরগঞ্জ কুমিল্লা। বর্তমানে তারা এইচ-এ ২২২, গ্রাম/রাস্তা ২, পাইনাদি নতুন মহল্লা এলাকায় থাকেন। মমতাজুর রহমানের ছেলে। 

মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন- সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর রহমান, সাধারণ সম্পাদক ইয়াসিন মিয়া, প্রয়াত নাসিম ওসমানের ছেলে আজমেরী ওসমান, শামীম ওসমানের ছেলে অয়ন ওসমান, নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজাম, সাবেক কাউন্সিলর ওমর ফারুক, আটি ওয়াপদা কলোনী এলাকার হাবিবুল্লাহ হবুল, বন্দর এলাকার মো. সাদেক আলী, প্যানেল মেয়র-২ ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কাউন্সিলর শাহজালাল বাদল, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগের আহ্বায়ক কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতি, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি শিব্বির আহমেদ, হিরাঝিল এলাকার দেলোয়ার হোসেন সরকার, পাগলাবাড়ী এলাকার মৃত আব্দুল মান্নানের ছেলে আব্দুল হান্নান, মক্কিনগর এলাকার গলেনুরের ছেলে রুহুল, পাইনাদি নতুন মহল্লা এলাকার মফিজুল ইসলাম, পাগলাবাড়ী এলাকার শামছু মিয়ার ছেলে ফয়সাল, নতুন মহল্লা এলাকার নজরুল দারোগা, সিআই খোলা এলাকার আতাউর রহমান, পাইনাদি নতুন মহল্লা এলাকার এলাহি নেওয়াজ, পাগলাবাড়ি এলাকার মৃত নিল খাঁ ছেলে শাহজাহান, আল-বালাগ স্কুল পাইনাদি নতুন মহল্লা এলাকার জয়নাল আবেদীন, পাইনাদি নতুন মহল্লা এলাকার আল আমিন, পাগলাবাড়ি এলাকার রহমত উল্লাহ, মিজমিজি টিসি রোড এলাকার টাইগার ফারুক, মিজমিজি নুর মেম্বার পুল এলাকার গুলজার ভান্ডারীর ছেলে সাইফুল ওরফে নাতি সাইফুল, সিআই খোলা এলাকার মনসুর মিয়ার ছেলে কবির ও মুহিন, আদমজী আঞ্চলিক শ্রমিক লীগের সভাপতি সামাদ বেপারী ওরফে লেতুর সামাদ, সাবেক কাউন্সিল সিরাজ ইসলাম মন্ডল, হিরাঝিল এলাকার সাদেক মন্ডল, মজিবর মন্ডল, কিশোরগ্যাং লিডার ও মাদকের ডিলার সন্ত্রাসী পানি আক্তার, গুলু মেম্বার, নাসিক ৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর যুবলীগ নেতা মিজানুর রহমান খান রিপন, হান্নান হাজী, আলমগীর হাজী, এনামুল হকের ছেলে জাবের হোসেন ও আক্তার হোসেন, কদমতলী এলাকার শাহাবুব আলম সুমন, আদমজী নতুন বাজার এলাকার সেলিম মজুমদার, কদমতলী এলাকার মৃত হুমায়ুন কবিরের ছেলে সজু, নতুন বাজার এলাকার টাল মজিবুর, কদমতলী এলাকার মন্টু, মিজমিজি বড় বাড়ীর সিদ্দিক মুন্সির ছেলে আকতার, পাইনাদি এলাকার বিদ্যুৎ, সুমন, সোহান, লুৎফর, স্বপন, হিরাঝিল এলাকার ছাত্রলীগ নেতা তপন, কাউন্সিলর আনোয়ার ইসলামের ছেলে মাহবুব আলম ও ছত্রলীগ নেতা ইলিয়াস ইসলাম লিয়ন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক তাজিম বাবু, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সদস্য রমজান আলী (সাইলো গেইট), মিজমিজি নূর মেম্বার পুল এলাকার সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে বাদল মিয়া (মেম্বার), অলি (রওশন চেয়ারম্যানের ভাই), পাইনাদি এলাকার লতিফ উকিল, শফিকুর রহমান, নাসিক ৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নুরুদ্দিন মিয়া, ডেমরা এলাকার মোল্লা শহীদ, মুক্তিনগর এলাকার আবু সাঈদ, কোনাপাড়া ডেমরা এলাকার ইফতেখারুজ্জামান, ধনু হাজী ইদগাহ এলাকার নেসার উদ্দিন, মিজমিজি এলাকার জাহাঙ্গীর, পাগলাবাড়ি এলাকার বাদশাহ মিয়ার ছেলে জজ মিয়া, পাইনাদি নতুন মহল্লা এলাকার আব্দুল কাশেমের ছেলে বাবু, সুমিলপাড়া এলাকার যুবলীগ নেতা মানিক মাষ্টার, সুমিলপাড়া রেললাইন এলাকার আক্তার হোসাইনের ছেলে রবিন, গোদনাইল ট্যাংকলরী শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি  আশরাফ, সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকার মতিউর রহমান সাগর, ছাত্রলীগ নেতা বিকে বাপ্পী, পিএম মোড় এলাকার দুলাল হাজারী, এসও মন্ডলপাড়া এলাকার এমএ স্বপন মন্ডল, আইলপাড়া এলাকার নুরুজ্জামান, ধনু হাজী রোড এলাকার আব্দুর রউফ এর ছেলে শাহ আলী মানিক, সুমিলপাড়া রোহানের ছেলে জোবায়ের আলম, সোনামিয়া মার্কেট এলাকার আবু, ছাত্রলীগ নেতা শাহরিয়ার রহমান বাপ্পি, সিদ্ধিরগঞ্জ বাজার এলাকার সিফাত খান, সুমিলপাড়া রেহান উদ্দিনের ছেলে হিরা, পাগলাবাড়ি এলাকার মৃত বাছেত এর ছেলে জোবায়ের, রহমতনগর এলাকার ছাতু মিয়ার ছেলে ইমরান, ইপিজেড নিয়ন্ত্রনকারী মামুন ওরফে ভাগিনা মামুন, সুমিলপাড়া রেললাইন এলাকার কালু মিয়ার ছেলে শামীম, নারায়ণগঞ্জ বারের সভাপতি এড. মহসিন মিয়া, বাতানপাড়া এলাকার নুরু মেম্বারের ছেলে জাহাঙ্গীর, এসও এলাকার লেবার মজিবুরের ছেলে নুর হোসেন, আইলপাড়া সফর আলীর ছেলে রবিউল, শিমুলপাড়া এলাকার সালাউদ্দিনের ছেলে ফারুক হোসাইন বাচ্চু, শিমুলপাড়া লিটন ড্রাইভারের ছেলে ইব্রাহীম, কদমতলী কলেজ পাড়া এলাকার জমির বাবুর ছেলে (গুলু মেম্বারের শ্যালক) মনির, সিদ্ধিরগঞ্জ পুল টিসি রোড এলাকার মুন্না খান ওরফে নাতি মুন্না, সুমিলপাড়া এলাকার আব্দুস সাত্তারের ছেলে স্বপন, তালতলা ক্লাব এলাকার মাসুম, সিদ্দিক হুজুর এর ছেলে আনোয়ার, মফিজ এর ছেলে রাজিব, মিজমিজি পাগলাবাড়ী এলাকার আব্দুল হাই এর ছেলে মেহেদি, গ্যাস লাইন এলাকার শহীদ, মিজমিজি বাতানপাড়া এলাকার আব্দুল মান্নানের ছেলে সাহং, মিজমিজি পাগলাবাড়ী এলাকার মৃত সুন্দর আলীর শরীফ, পাগলাবাড়ী এলাকার মৃত মনসুর আলীর ছেলে আব্দুল আজিজ, রহমত নগর এলাকার জয়নাল ময়িার ছেলে কাউসার, রহমত নগর এলাকার জয়নাল, নাসিক ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনোয়ার ইসলাম, ধনু হাজী কবরস্থান গলি এলাকার মো. মাসুদ, ধনু হাজী কবরস্থানের সভাপতি মো. আনোয়ার, পাইনাদি নতুন মহল্লা এলাকার মারুফ, পাইনাদি নতুন মহল্লা শাপলা চত্তর এলাকার মো. সুজন,  পাইনাদি নতুন মহল্লা এলাকার মো. নজরুল, ফতুল্লার কুতুবপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মনিরুল আলম সেন্টু, মৃত আইউব আলী ভূইয়ার ছেলে আল মামুন মিন্টু ভূইয়া ও সেন্টু ভূইয়া, মৃত আয়েত আলী ভূইয়ার ছেলে মনির ভূইয়া ও পিয়েল ভূইয়া, রফিকুল ইসলামের ছেলে মো. আলম, কৃষক লীগ নেতা নাজিম উদ্দিন, ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগ সহ-সভাপতি জসিম উদ্দিন, ফতুল্লা রগুনাথপুর এলাকার মাখন বাবু, মহিউদ্দিন, আওয়ামী জাতীয় কমিটির সদস্য এড. আনিসুর রহমান দীপু, মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এড, খোকন সাহা, বারের সাবেক সভাপতি এড. হাসান ফেরদৌস জুয়েল। এছাড়া আওয়ামীলীগের অজ্ঞাতনামা দুস্কৃতিকারী আরো অনেকে।

মামলার এজহারে বাদী নিহতের ছোট ভাই সাখাওয়াত হোসেন উল্লেখ করেছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন সময়ে গত ২০ জুলাই ১নং থেকে ৩নং আসামীর নিদের্শে ছাত্র জনতাকে উদ্দেশ্য করিয়া এলোপাথারী গুলি ও আক্রমন করার নির্দেশ প্রদান করিলে অন্যান্য সকল আসামীগণ রাস্তায় অবস্থানরত ছাত্র জনতার উপর দেশীয় অস্ত্র দ্বারা এলোপাথারি গুলি করেন। 

তখন ডাচ বাংলা ইব্রাহিম খলিল শপিং কমপ্লেক্স এর পিছনে হিরাঝিল রোডে সাবেক কমিশনার ওমর ফারুক এর চুনা ফ্যাক্টরীর সামনের রাস্তায় আমার ভাই মনির হোসেন গুলিবিদ্ধ হলে নারায়ণগঞ্জ খানপুর হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাকে রেফার্ড করেন।

২১ জুলাই রাতে পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। পরে অপারেশন করে গুলি বের করা হয়। সেখানে ১২ ঘণ্টা আইসিইউতে চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় ২২ জুলাই বিকেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

পরে আমার ভাইয়ের মৃত দেহ আমাদের গ্রামের বাড়ী তালতলা, দাদঘর, মনোহরগঞ্জ, কুমিল্লায় নিয়ে যাই এবং জানাযা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করি।