নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

রোববার,

২৪ নভেম্বর ২০২৪

মিতালী মার্কেটের চাঁদাবাজদের রুখবে কে? “রক্ষা পায়নি ১০ বছরের শিশুও”

নারায়ণগঞ্জ টাইমস

প্রকাশিত:১৯:৫৫, ১৬ আগস্ট ২০২৪

মিতালী মার্কেটের চাঁদাবাজদের রুখবে কে? “রক্ষা পায়নি ১০ বছরের শিশুও”

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে মিতালি মার্কেটের চাঁদাবাজদের দাপট কমছেনা। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও বন্ধ হচ্ছেনা জয়নাল ও তার সহযোগী মাঈনুদ্দিন, মানিক ও আলামিন চক্রের চাঁদাবাজি।

দাবিকৃত চাঁদা না পেয়ে ফজলে এলাহি নামে ১০ বছরের এক শিশুকে মার্কেটের তিন তলা থেকে লাথি মেরে নিচে ফেলে দেয়। শিশুটি ভবনের নিচে বালুর স্তুপের উপর পড়ায় প্রাণে বেঁচে গেলেও তার হাত ও পা ভেঙে গেছে।

এসময় ব্যবসায়ী রনি ও নজরুল ইসলাম মোল্লাসহ আরও কয়েক জনকে মারধর করে ও তাদের দোকানের মালামাল ও নগদ টাকা লুট করে চাঁদাবাজরা। বৃহস্পতিবার বিকেলে মিতালি মার্কেটের ১ ও ২ ও ৩নং ভবনে এ ঘটনাটি ঘটে। 

আহত শিশু ফজলে এলাহি মিতালি মার্কেটের ১ নম্বর ভবনের ৫৫ নম্বর এলাহি হোসিয়ারী দোকান মালিক নজরুল ইসলামের ছেলে। অন্যরা হলেন, ২ নম্বর ভবনের ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম মোল্লা (৩৮) ও ৩ নম্বর ভবনের ফ্লিম ফ্যাশনের মালিক রনি (৩০)। 

শিশু ফজলে এলাহি জানায়, এক মাস বন্ধ থাকার পর বৃহস্পতিবার চাঁদা নিতে দোকানে আসে মাঈনুদ্দিন, মানিক ও আলামিন। এসময় তাদের সঙ্গে আরো কয়েকজন ছিলো। তারা দোকানে এসে চাঁদা চায়। চাঁদা দিতে না চাইলে দোকানের ক্যাশ থেকে ৪৫ হাজার টাকা লুট করে নেয়। পরে তাকে ধরে নিয়ে যায় মার্কেটের তিন তলায়। সেখানে নিয়ে মারধর করে লাথি দিয়ে নিচে ফেলে দেয়।

ব্যবসায়ী রনি বলেন, সন্ত্রাস দমনের নামে জয়নালের সহযোগী লিটন মোল্লা, মাইনুদ্দিন ও মহিউদ্দিনসহ ১০-১২ জন মার্কেটে লুটপাট করছে। আমার গোডাউনের তালা ভেঙ্গে প্রায় পৌনে ৩ লাখ টাকার মালাল লুট করেছে। চাঁদা না দিলে জয়নাল ব্যবসায়ীদেরকে তার লোকজন দিয়ে ধরে অফিসে নিয়ে মারধর করে।

ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম মোল্লা বলেন, জয়নালের লোকজন আমাকে মারধর করে সঙ্গে থাকা ৩৬ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়েছে। আমাকে মার্কেটের আসতে নিষেধ করে দিয়েছে।

মার্কেটের ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, দীর্ঘ দিন ধরে মিতালি মার্কেটের প্রত্যেক ব্যবসায়ীর কাছে থেকে দৈনিক ২০০ টাকা করে চাঁদা নিচ্ছে জয়নাল। 

মার্কেটের নিচে একটি অফিস করে ১০/১৫ জনের বাহিনী গড়ে তুলে সাড়ে ৪ হাজার দোকান থেকে চাঁদা আদায় করে আসছেন তিনি। গত ৫ অগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ব্যবসায়ীরা চাঁদা না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। 

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে থাকলে গত কয়েকদিন ধরে আবার চাঁদা নিতে আসছে জয়নালের লোকজন। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালেই মারধর করে দোকানের মালা মালামাল নিয়ে যাচ্ছে।

তারা দলবল নিয়ে হঠাৎ করে এসে তাণ্ডব চালিয়ে দ্রুত চলে যায়। এখনো সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের কাজ ঠিক মত চালু না হওয়ায় কোন আইনী সহযোগিতা পাচ্ছি না। 

অভিযুক্ত জয়নাল ও তার সহযোগীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তাদের মোবাইল নম্বার বন্ধ। তারা গা ঢাকা দিয়ে থাকেন বলে জানান স্থানীয়রা।