ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রীতি খন্দকার হালিমাকে নিখোঁজের ৩ দিন পর নারায়ণগঞ্জ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ মে) সকালে জেলার সোনাগাঁও থানার কাঁচপুর এলাকা থেকে কাঁচপুর হাইওয়ে থানা পুলিশ তাকে উদ্ধার করে।
এরআগে ২৮ মে নিজ এলাকায় নির্বাচনি প্রচারণার সময় তিনি নিখোঁজ হন। পরে প্রীতি খন্দকারের স্বামী মাসুদ খন্দকার এ বিষয়ে থনায় জিডি করেন। এতে তার স্ত্রীকে গুম করা হয়ে থাকতে পারে বলে অভিযোগ করেন।
এ বিষয়ে কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রেজাউল হক জানান, ওই নারী নিজেই এসে পুলিশের সহায়তা চান। নিজেকে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী বলে পরিচয় দেন।
এরপর বিষয়টি পরিবারের পাশাপাশি বিজয়নগর থানাকে অবহিত করা হয়। পরে তার স্বামীর উপস্থিতিতে বিজয়নগর থানা পুলিশের কাছে প্রীতি খন্দকার হালিমাকে বুজিয়ে দেয়া হয়েছে।
ৎউদ্ধা্েরর পর প্রীতি খন্দকার নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে বলেন, গত ২৮ মে দুপুরে উপজেলার হরষপুর ইউনিয়নে দুই জন সহযোগী নিয়ে নির্বাচনি প্রচারণায় যাই।
হরষপুরের খেয়াঘাট ও ঋষি পাড়ায় ঢুকে প্রচারণার সময় আমার সঙ্গে থাকা দু’জন নারী বাইরে এবং আমি ভেতরে গিয়ে ভোটারদের সঙ্গে কথা বলছিলাম।
এ সময় অন্য দু’জন বোরকা পরা নারী এসে বলেন, সামনে একটি মাদ্রাসা আছে, সেখানে অনেক ভোটার আছে’। এই কথা বলে আমাকে একটি পান খেতে দেয়।
পানটি মুখে নিতেই আমার মাথা ঘুরতে শুরু করে। তখন তারা একটি কালো মাইক্রো বাসে করে আমাকে নিয়ে যায়। আজ সকালে ৮টার দিকে নারায়ণগঞ্জের দেওয়ানবাগের একটি হাইওয়ে সড়কে আমাকে ফেলে যায়।
তিনি আরও বলেন, এত সকালে ফাঁকা সড়কে কাউকেই খুঁজে পাচ্ছিলাম না। তখন সড়ক দিয়ে অনেকক্ষণ হেঁটে আসার পরে একটি অটো রিকশা দেখতে পেয়ে আশপাশে কোনও থানায় নিয়ে যেতে বলি।
পরে, কাঁচপুর হাইওয়ে থানায় আসার পর একজন পুলিশের কাছ থেকে মোবাইল নিয়ে আমার স্বামীকে ফোন দেই।
এ সময় তিনি অভিযোগ করেন, তার কাছে থাকা একটি মোবাইল, সঙ্গে থাকা টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার— সব নিয়ে গেছেন ওই দুই নারী।
ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রীতি খন্দকার হালিমার স্বামী মাসুদ খন্দকার বলেন, সকালে আমার স্ত্রী আমাকে কল দিয়েছে। পরে থানা থেকেও আমাকে জানিয়েছে।
থানা থেকে আমি কাঁচপুরে এসেছি স্ত্রীকে নিয়ে যেতে। স্ত্রী জানিয়েছে, নির্বাচন যেন না করে এজন্য তাকে তুলে নিয়ে গেছে। এখন সে অসুস্থ বেশি কথা বলতে পারছে না। পরে বিস্তারিত জানা যাবে।
মাসুদ খন্দকার আরও বলেন, ৫ জুন বিজয়নগর উপজেলা নির্বাচনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনে তার স্ত্রী নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে পদ্মফুল প্রতীকে নির্বাচন করছেন।
সার্ভার ত্রুটির কারণে প্রীতির মনোনয়ন জমা দিতে সমস্যা হওয়ার ফলে হাইকোর্ট থেকে প্রার্থিতা ফিরে পান তিনি।
এ বিষয়ে বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুল ইসলাম সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে জানান, উদ্ধার হওয়া ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রীতি খন্দকার হালিমাকে নিয়ে পুলিশ নারায়ণগঞ্জ থেকে থানার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন।
এখনও থানায় এসে পৌছাননি তারা। প্রীতি খন্দকারকে থানায় নিয়ে আসার পর বিস্তারিত বলতে পারবো।