নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

সোমবার,

২৫ নভেম্বর ২০২৪

ফতুল্লায় বকেয়া বেতনের দাবিতে সড়ক অবরোধ, শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষ

নারায়ণগঞ্জ টাইমস

প্রকাশিত:১৪:২৬, ২১ এপ্রিল ২০২৪

ফতুল্লায় বকেয়া বেতনের দাবিতে সড়ক অবরোধ, শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষ

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় বিসিক শিল্পাঞ্চলে বকেয়া বেতনের দাবিতে বিক্ষোভরত শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ চলছে।  এ সময়  পুলিশ জলকামান দিয়ে পানি ছুড়ে লাঠিচার্জ করলে পাল্টা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা। 

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে পুলিশকে কয়েক রাউন্ড কাঁদানে গ্যাস ও শর্টগানের গুলি ছুড়তে দেখা যায়। রোববার (২১ এপ্রিল) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এ সংঘর্ষ শুরু হয়। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত (দুপুর দেড় টা) সংঘর্ষ চলমান রয়েছে।

এর আগে সকাল সাড়ে ৯টায় ঢাকা-মুন্সিগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কে সড়কে বৈদ্যুতিক খুটি, বাঁশ ও কাঠ ফেলে অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে ক্রোনী গ্রুপের রপ্তানিমুখী পোশাক কারখানা অবন্তী কালার টেক্স লিমিটেডের কয়েকশ' শ্রমিক। এতে সড়কটিকে অন্তত দুই কিলোমিটার যানজট দেখা দেয়।

কারখানার শ্রমিকরা জানান, গত ৮ এপ্রিল দুপুর পর্যন্ত কাজ করার পর কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ঈদের আগে বোনাস পেলেও মার্চ মাসের বেতনটি তাদের বকেয়া ছিল৷ কারখানার মালিক ঈদের আগেই মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে মার্চ মাসের বেতন পরিশোধ করবেন বলে আশ্বাস দিলেও তা পাননি শ্রমিকরা৷ এতে ঈদের মধ্যে অর্থ সংকটে দিন কাটিয়েছেন বলে জানান শ্রমিকরা৷

ক্রোনী গ্রুপের রপ্তানিমুখী এ পোশাক কারখানাটিতে অন্তত ৭ হাজার শ্রমিক কর্মরত রয়েছে বলে জানিয়েছে শিল্প পুলিশ৷

কারখানাটির সুইং অপারেটর মো. মাসুদ  বলেন, এপ্রিলের ৮ তারিখ কারখানা বন্ধের সময় মোবাইলে বেতন পরিশোধের আশ্বাস দিয়েও কথা রাখেননি মালিকপক্ষ৷ গত ৮ মাস যাবৎ বেতন নিয়ে এভাবে গড়িমসি করছে মালিকপক্ষ৷ বেতনের দাবিতে রাস্তায় না নামলে বেতন পাচ্ছেন না শ্রমিকরা৷

ঈদের দিনও বারবার মোবাইল চেক করছি৷ এই মনে হয় বেতন ঢুকলো এই আশায়৷ কিন্তু কোনো বেতন আসেনি৷ আপনারা ভাবতেও পারবেন না ঈদের সময় বেতন না পেলে কীভাবে শ্রমিকরা দিন কাটায়৷ আমাদের এবার ঈদে কোনো আনন্দ ছিল না৷ অন্তত অর্ধেক বেতন দিলেও হতো৷

ঈদের আগে বেতন না পাওয়াতে গ্রামে যেতে পারেননি বলে জানান সুমাইয়া নামে আরেক শ্রমিক৷ তার গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জে৷ বাসের টিকেট কেটেও গ্রামে যেতে পারেননি বলে দাবি তার৷

আমরা যারা ক্রোনীর শ্রমিক তাদের কোনো ঈদ বা উৎসব নাই৷ প্রতি মাসে বেতনের লাইগা রাস্তায় নামতে হয়৷ বাসের টিকেট কাইটাও বাড়ি (গ্রামে) যাইতে পারি নাই৷ টাকা নাই, বাড়ি গিয়া কী করমু? আমাগো ঈদের আনন্দটাও শেষ কইরা দিছে ক্রোনীর মালিক৷ আমরা কী মানুষ না অন্য কিছু?, বলেন এই নারী শ্রমিক৷

এদিকে ক্রোনী গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আসলাম সানির সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ঈদের আগে সব শ্রমিককে বোনাস দিয়েছি কিন্তু শিপমেন্ট ঠিকমতো না হওয়ায় মার্চের বেতনটা দিতে পারিনি৷ আমরা আগামী বুধবারের মধ্যে সকলের বেতন পরিশোধ করে দিবো৷

ঘটনাস্থলে থাকা ফতুল্লা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) তছলিম উদ্দিন  বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ কাজ করছে৷