বাংলাদেশের অর্থনীতির লাইফলাইন খ্যাত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক। যে মহাসড়ক দিয়ে ১৭টি জেলার প্রায় ২০ হাজারেরও বেশি যানবাহন চলাচল করে থাকে। ঈদসহ যেকোনো ধর্মীয় উৎসবকে কেন্দ্র করে মহাসড়কে যানবাহনের চাপ যেমনিভাবে বৃদ্ধি পায়।
সেই সঙ্গে সড়ক দুর্ঘটনার ঘটনাও বৃদ্ধি পায়। এদিকে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা থাকা স্বত্ত্বেও মহাসড়কে অবাধে চলছে তিন চাকার বিভিন্ন যানবাহন। কাঁচপুর হাইওয়ে থানার সামনেই কোনো বাধা ছাড়াই এইসব যানবাহন চলাচল করছে। এছাড়া কাঁচপুর ব্রিজের নিচে অটোরিকশা, ইজিবাইকের স্ট্যান্ড বানিয়ে রাখা হয়েছে।
এইসব তিন চাকার যানবাহনগুলো মহাসড়কে উল্টোপাশে চলাচলের পাশাপাশি দূরপাল্লার যানবাহনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ঘটাচ্ছে নানা দুর্ঘটনা। বাসচালক ও যাত্রীদের ভাষ্য, ঈদকে কেন্দ্র করে এইসব তিন চাকার যানবাহন চলাচল বন্ধ না করলে যানজটের পাশাপাশি সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে।
রোববার (৩১ মার্চ) দুপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুরে সরেজমিনে গিয়ে এমনই চিত্র লক্ষ্য করা যায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, মহাসড়কে তিন চাকার যানবাহনগুলোর বেপরোয়াভাবে চলাচলের ফলে বিভিন্ন সময় ছোট ছোট দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটছে। এতে আহত হচ্ছেন যাত্রীরা। এছাড়া কাঁচপুর ব্রিজের নিচে এবং সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল মোড়ে অবাধে অটোরিকশা থামিয়ে যাত্রী ওঠানামা করানোর ফলে সার্ভিস লেনে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।
পাশাপাশি দূরপাল্লার যানবাহন থেকে শুরু করে আঞ্চলিক যানবাহনগুলো ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। তবে এ নিয়ে কোনো মাথাব্যথা লক্ষ্য করা যায় নি কাঁচপুর হাইওয়ে থানা পুলিশকে।
আশরাফুল আলম নামের এক যাত্রী বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই মহাসড়কে এভাবে অটোরিকশা চলাচল করছে। প্রায় সময় দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটলেও এর কোনো স্থায়ী সমাধান এখনো দেখা যায় নি।
এইসব অটোরিকশায় চলাচল করা যাত্রীরা যেমন ঝুঁকির মধ্যে থাকে ঠিক তেমনিভাবে বাস চালকদেরও ঝুঁিকর মধ্যে পড়তে হয়। তাই কৃর্তপক্ষের নিকট অবিলম্বে মহাসড়কে অটোরিকশা চলাচল বন্ধ করার অনুরোধ জানাচ্ছি।
আল আমিন নামের এক ইজিবাইক চালক বলেন, পেটের দায়ে ঝুঁকি থাকলেও আমরা চলাচল করতে বাধ্য থাকি। এই উপার্জন দিয়েই আমাদের পরিবারের চলতে হয়। ইজিবাইক চলাচল বন্ধ করে দিলে আমরা চলবো কি করে?
ইসরাফিল হোসেন নামের এক বাসচালক বলেন, যাত্রী ওঠানামা এবং আঞ্চলিক যানবাহন চলাচল করার জন্য দুই লেনবিশিষ্ট সার্ভিস লেন নির্মাণ করা হলেও তিন চাকার যানবাহনের দখলেই এক লেন থাকে। এর ফলে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। সার্ভিস লেনে আমাদের যাত্রী নামাতে গিয়ে দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে।
আমিনুল ইসলাম নামের এক আরেক বাসচালক বলেন, তিন চাকার যানগুলো উল্টোপথে দ্রুতগতিতে চলাচল করে। এতে করে মালবাহী গাড়ি থেকে শুরু করে বাসগুলোকে অনেক সতর্কে থেকে চলাচল করতে হয়।
এছাড়া প্রায় সময় ইজিবাইকগুলো বাসের সঙ্গে ধাক্কা লাগিয়ে দেয়। পরে তাতে আমাদের দোষ হয়। এর ফলে এইসব তিন চাকার পরিবহনের কারণে মহাসড়ক অনিরাপদ হয়ে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল হক বলেন, এ বিষয়ে আমার জানা নেই। আমি খোঁজ নিয়ে তিন চাকার যানবাহন চলাচলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।