নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের তালিকাভুক্ত মাদকের গডফাদার ও সন্ত্রাসী সোয়াদ হোসেন বান্টি আবারও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এক কালের পর্নো ব্লেকমেইলার ও অস্ত্র ব্যবসায়ী বান্টি বাহিনী প্রকাশ্যে অপরাধ কর্ম চালিয়ে গেলেও রহস্যজনক কারণে সে রয়েছে ধরা ছোয়ার বাইরে।
জেলে আটক শীর্ষ সন্ত্রাসী জাকির খানের অন্যতম প্রধান সেনাপতি হলেও সন্ত্রাসী বান্টি নিজেকে সাবেক এক সংসদ সদস্যের লোক হিসেবে পরিচয় দিয়ে এসব অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে বলে জানা গেছে।
নগরীর ২নং রেইল গেইট এলাকার থান কাপড়ের ব্যবসায়ীরা বান্টির কাছে জিম্মি হলেও ভয়ে মুখ খোলেন না কেউই। এছাড়া দেওভোগ, বাবুরাইল, বাশমুলি এলাকায় মাদকের বিশাল সিন্ডিকেট গড়ে তুললেও বান্টি আর বাহিনী ঘুরছে বুক ফুলিয়ে।
সম্প্রতি দেওভোগ এর বাশমুলি এলাকায় এক ব্যবসায়ীর দোকান, গোডাউন রাতের আধারে ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিয়েছে বান্টি আর তার বাহিনী। ওই ব্যবসায়ী ফতুল্লা মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
বাশমুলি এলাকার ব্যবসায়ী স্বপন হোসেন জানান, গত ২৫মার্চ রাতে বান্টি ও তার বাহিনী রাত ১টার দিকে অস্ত্র-শ^স্ত্র নিয়ে তার জমির দেয়াল ও দোকান ভেঙ্গে ফেলে।
এসময় সেখানে রাখা অটোমোবাইলস যন্ত্রাংশ লুট করে তারা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে বান্টি ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী অস্ত্র নিয়ে তাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে চলে যায়।
ব্যবসায়ী স্বপন আরও জানান, ঘটনার পর থেকে বান্টি আমাকে ও আমার স্ত্রীর মোবাইল ফোনে ফোন করে মামলা না করতেও শাসিয়েছে।
এব্যপারে ফতুল্লা থানার ওসি নুরে আযম জানান, আমরা এমন একটি অভিযোগ পেয়েছি এবং ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়েছিল। অপরাধী যে ই হোক না কেন তাকে অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে।
জানা গেছে, ২০১৩সালে বান্টি বাহিনীর সাথে সদর থানা পুলিশের সাথে গোলাগুলির ঘটনায় একজন এসআই গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। সেসময় তার কাছে উদ্ধার করা হয়েছিল বিপুল পরিমাণ অস্ত্র। এর আগে বান্টি ছিল পর্নো ব্ল্যাকমেইলার চক্রের অন্যতম হোতা।
সুন্দরী নারী দিয়ে ব্যবসায়ীদের ফাঁদে ফেলে তাদের আটকে নগ্ন ছবি তুলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিতো সে। পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর বান্টি শুরু করে অস্ত্রের ব্যবসা (এই সংক্রান্তে বান্টির প্রেরিত অস্ত্রের ছবি প্রতিবেদকের কাছে রক্ষিত আছে)।
২০১৮ সালে জেলা পুলিশ ৩২জন শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী ও গডফাদারের ছবিসহ তালিকা প্রকাশ করে পোস্টারিং করে। সেই তালিকায় নাম ছিল বান্টির। ২০২৩সালে বহু ব্যবসায়ী বান্টির চাঁদাবাজিতে অতিষ্ট হয়ে পুলিশ ও র্যাবের কাছে লিখিত অভিযোগও দায়ের করেন। কিন্তু রহস্যজনক কারণে বান্টি থাকে ধরাছোয়ার বাইরে।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, সন্ত্রাসী বান্টির মূল ব্যবসা অস্ত্র ও মাদক। মুলত সে শীর্ষ সন্ত্রাসী জাকির খানের চাঁদাবাজির একটি সেক্টর নিয়ন্ত্রন করে। কিন্তু বিএনপি করলেও সে নিজেকে রক্ষা করতে একজন সাবেক প্রভাবশালী এমপির ছেলের লোক হিসেবে পরিচয় দেয় এবং তার ফেসবুকেও সেই ছিিব ঘন ঘন প্রচার করে।
সূত্র জানায়, সোয়াদ হোসেন বান্টি নিজ বাড়িতে তৈরি করেছে টর্চার সেল। বান্টি বাহিনীর সদস্যরা সাধারণ ব্যবসায়ীদেরকে নানা অযুহাতে বান্টির তৈরি করা টর্চার সেলে আটক করে লাখ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করছে।
তার নামে ডজনের উপর মামলা থাকলেও কেন তাকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী গ্রেপ্তার করছে না তা নিয়ে সাধারন মানুষের মাঝে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।